চৌবাড়িয়া হাটে নির্ধারিত খাজনার চেয়ে বেশি টাকা নিচ্ছে ইজারাদার
ঈদুল আজহার বাকি আরও মাসখানেক। তবে এরই মধ্যে জমে উঠতে শুরু করেছে নওগাঁর পশুর হাটগুলো। নওগাঁর সবচেয়ে বড় পশুর হাট মান্দা উপজেলার চৌবাড়িয়া হাটে নির্ধারিত খাজনার অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসনের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও হাটে টাঙানো হয়নি সরকার–নির্ধারিত খাজনার (টোল) তালিকা। হাটটির স্বাস্থ্যবিধির অবস্থাও বেহাল। হাটে আসা ক্রেতা-বিক্রেতারা গা ঘেঁষাঘেঁষি করে কেনাবেচা করেন।
অনেকের মুখে মাস্ক থাকে না। কেউ কেউ সঙ্গে মাস্ক রাখলেও তা মুখে লাগাচ্ছেন না। ফলে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সূত্র জানায়, নওগাঁ জেলায় ছোট–বড় ১০৮টি হাট-বাজার রয়েছে। এর মধ্যে স্থায়ী পশুর হাট ৩৮টি। এবার প্রশাসন থেকে প্রতিটি গরুর জন্য ৩৮০ টাকা ও খাসির জন্য ১৫০ টাকা খাজনা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী বিভাগে অন্যতম বড় পশুর হাট চৌবাড়িয়া হাট।
১৪২৭ বাংলা সনের জন্য হাটটি ইজারা দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৪১ লাখ টাকায়। ইজারা নিয়েছেন নওগাঁ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম। প্রতি শুক্রবার ও মঙ্গলবার চৌবাড়িয়া হাট বসে।
গত শুক্রবার হাটে আসা অন্তত ২০-২২ জন ক্রেতা-বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিটি গরুর জন্য ৩৮০ টাকা খাজনা নেওয়ার কথা থাকলেও আদায় করা হচ্ছে ৫৩০ টাকা করে। আর প্রতিটি খাসির জন্য ১৫০ টাকা খাজনা নির্ধারণ করা হলেও শতকরা ১০ টাকা হিসেবে খাজনা নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১০ হাজার টাকায় একটি খাসি কিনলে খাজনা দিতে হবে ১ হাজার টাকা।
শুধু ক্রেতার কাছ থেকে খাজনার টাকা আদায়ের নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না ইজারাদারের লোকজন। হাটে গরু কিনতে আসা রাজশাহীর তানোর উপজেলার মাদারীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ৭৫ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন। তাকে খাজনা দিতে হয়েছে ৫০০ টাকা।
আর বিক্রেতা বেলাল আহমেদকে দিতে হয়েছে ৩০ টাকা। নিয়ামতপুর উপজেলার শ্রীমন্তপুর গ্রামের হামিদুর শাহ একজোড়া গরু কিনেছেন। খাজনা বাবদ তার কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে ১ হাজার টাকা।
হামিদুর শাহ বলেন, ‘আমার কাছ থেকে গরু প্রতি ৫০০ টাকা করে নিলেও ইজারাদারের লোকজন রসিদে টাকার অঙ্ক উল্লেখ করছেন না।’
এ বিষয়ে চৌবাড়িয়া হাটের ইজারাদার রফিকুল ইসলাম বলেন, হাট ইজারা পাওয়ার পর করোনার কারণে প্রায় আড়াই মাস ধরে হাট বন্ধ ছিল। অর্থাৎ আড়াই মাসে একটি টাকাও আয় হয়নি। অথচ হাটটি এক বছরের জন্য প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা দিয়ে ইজারা নিয়েছেন তিনি। লাভ তো দূরের কথা, ইজারার পুরো টাকা উঠবে কি-না এটা নিয়েই সংশয়ে আছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিবছরই কোরবানির সময় খাজনা একটু বেশি নেওয়া হয়। এবারও নির্ধারিত খাজনার চেয়ে একটু বেশি টাকা নেওয়া হচ্ছে। এটা সহনীয়।’
এজে
মন্তব্য করুন