• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে ধরলা নদীর পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি

  ০৩ জুলাই ২০২০, ২৩:৪৮
The water of Dharla river is rising again in Kurigram, misery is increasing
কুড়িগ্রামে ফের বাড়ছে ধরলা নদীর পানি, বাড়ছে দুর্ভোগ

কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের পানি ধীরে ধীরে কমলেও ধরলা নদীর পানি আবারো বাড়তে শুরু করেছে। এতে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকলেও হাজার হাজার ঘরবাড়ি ৮ দিন ধরে বানের পানিতে ডুবে আছে।

শুক্রবার দুপুরে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৪ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এদিকে বৃদ্ধি পেয়েছে দুধকুমার নদীর পানি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আরিফুল ইসলাম নদ-নদীর পানি প্রবাহের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, জেলার ৫৬টি ইউনিয়নের ৫৭৯টি গ্রাম বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। প্রায় ১৭ হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে ৫ শতাধিক পরিবার।
আর বেসরকারি হিসাবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ২ লাখের উপর। এছাড়া গত দুদিন ধরে ভারী বর্ষণের কারণে সড়ক ও বাঁধের উপর আশ্রিত মানুষের দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও গোখাদ্যের সংকট আরো প্রকট হয়েছে। দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। বন্যাদুর্গতরা স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিয়ে পড়েছে চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে নারী, শিশু-কিশোর ও বৃদ্ধদের অবস্থা খুবই নাজুক।

উলিপুরের হাতিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বি এম আবুল হোসেন ও কুড়িগ্রাম সদরের যাত্রাপুর ইউপির চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী জানান, চাহিদামতো ত্রাণ বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনো সব বন্যার্ত মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা দিলীপ কুমার সাহা জানান, সরকারের পর্যাপ্ত ত্রাণ রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক পর্যায়ক্রমে তা দেয়া হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩০২ মেট্রিক টন চাল ও ৩৮ লাখ ৬৬ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যা বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, জেলায় ৯ হাজার ৭৮৯ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধানের বীজতলা ৫৩২ হেক্টর, আউশ ধান এক হাজার ৯৫৫ হেক্টর, শাক-সবজি ৮৬০ হেক্টর, তিল ৩০২ হেক্টর, কাউন ২০ হেক্টর, চিনা ১৪০ হেক্টর, মরিচ ১৪০ হেক্টর এবং পাট ক্ষেত ৫ হাজার ৮৪০ হেক্টর। এসব ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরীর কাজ চলছে।

কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. হাবিবুর রহমান জানান, বন্যার্ত মানুষের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায়ে ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। এর বাইরেও কোনো খারাপ খবর পেলে তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নেব। সে রকম প্রস্তুতি আমাদের রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ সায়হান আলী জানান, এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ কীট ২৫ হাজার সরবরাহ করা হয়েছে। নতুন করে বন্যাদুর্গদের সহায়তায় স্থাপন করা হয়েছে ১২টি টিউবওয়েল ও ১২টি ল্যাট্রিন। মেরামত করে দেয়া হয়েছে ৪৩৫টি টিউবওয়েল। এছাড়া বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় ৬ শতাধিক টিউবওয়েলের গোরা (প্লাট ফর্ম) উঁচু করে দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বন্যার্তদের মাঝে প্রতিদিন বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এ জন্য দুটি বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্টের ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ঘুরে ঘুরে পানি সরবরাহ করছে। প্রতিটি বিশুদ্ধ পানির প্ল্যান্ট থেকে প্রতি ঘণ্টায় ২ হাজার লিটার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
লক্ষ্মীপুরে তাপদাহ, হাসপাতালে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা
ট্রেনের ভাড়া বাড়ছে ৪ মে থেকে
কুড়িগ্রামে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী-শিশুসহ আহত ১০
চিলমারীতে সাপের কামড়ে এক কৃষকের মৃত্যু
X
Fresh