• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব, শিক্ষক বহিষ্কার

কোটালীপাড়া(গোপালগঞ্জ) সংবাদদাতা, আরটিভি নিউজ

  ৩০ জুন ২০২০, ১৩:৩৬
Immoral proposals of students
ছবি সংগৃহীত

গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে এক শিক্ষককে বিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ওই শিক্ষককের এই কুকর্মের তদন্তে গঠন করা হয়েছে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ থেকে এই তদন্ত কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার কোটালীপাড়া এস এন ইনস্টিটিউশনের শিক্ষক মিলন হোসেন আট বছর আগে বিদ্যালয়টির বিজ্ঞান বিভাগে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান।

নিয়োগের পর থেকেই তিনি ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। একাধিক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগে বিদ্যালয়টিতে একাধিক বার শালিস বৈঠক হয়েছে।

সর্বশেষ গত বুধবার (২৪ জুন) কলেজ পড়ুয়া ওই বিদ্যালয়টির এক সাবেক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। বিষয়টি ওই ছাত্রী তার অভিভাবকদের জানায়। ওই ছাত্রীর অভিভাবক ঘটনাটি বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আতিকুজ্জামান বাদলকে জানান। আতিকুজ্জামান বাদল গেল বৃহস্পতিবার বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের জরুরি সভা ঠেকে শিক্ষক মিলন হোসেনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এই সভা থেকে সাতদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আতিকুজ্জামান বাদল বলেন, মিলন হোসেন এই বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকেই একাধিক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত ও অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছেন। এ বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ে একাধিকবার শালিস বৈঠক হয়েছে। মিলন হোসেন মেধাবী শিক্ষক হওয়ার কারণে এতোদিন তাকে বিদ্যালয়ে রেখেছি। তাকে সংশোধনের সুযোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু সে সংশোধন হয়নি। তাই তাকে আমরা সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যদি তিনি দোষী প্রমাণিত হন তাহলে আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।

তদন্ত কমিটির প্রধান ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য রতন মিত্র বলেন, তদন্তে প্রাথমিকভাবে শিক্ষক মিলনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আগামী বৃহস্পতিবার (২জুলাই) আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করব।

নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই ছাত্রীর অভিভাবক বলেন, আমার মেয়েকে শিক্ষক মিলন দীর্ঘদিন ধরে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে আসছেন। বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিকে জানিয়েছি। শিক্ষকের কাছ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা নীতি-নৈতিকতা শিক্ষা লাভ করবে। সেই শিক্ষকই যদি ছাত্রীদের অনৈতিক প্রস্তাব দেয় তাহলে আমরা এসব শিক্ষকদের কাছ থেকে ভালো কি আশা করতে পারি।

এ বছর এসএসসি পাশ করা এক ছাত্রী বলেন, নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলে স্যার মিলন হোসেন আমাকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়েছিলেন। আমি বিষয়টি তখন কয়েকজন শিক্ষককে জানিয়েছিলাম। শিক্ষকরা তখন মানসম্মানের দিকে তাকিয়ে আমাকে চেপে যেতে বলেছিলেন।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, মিলন হোসেনের ছাত্র-ছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকসুলভ কোনও আচরণ করেন না। এছাড়া তার বিষয়ে আমার আর বেশি কিছু বলার নেই।

অভিভাবক সদস্য পারভীন বেগম বলেন, মিলন হোসেন যদি এই বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে থাকেন তাহলে অনেক অভিভাবকই তাদের মেয়েদের এই বিদ্যালয়ে পড়ানো বন্ধ করে দেবেন।

শিক্ষক মিলন হোসেন বলেন, ভালো শিক্ষক হিসেবে এলাকায় আমার একটি সুনাম রয়েছে। যে কারণে আমাকে বিদ্যালয় থেকে সরানোর জন্য এটি একটি ষড়যন্ত্র।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, এ ধরনের খারাপ লোক বিদ্যালয়ের রাখা ঠিক না। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তার প্রতিবেদন পাওয়ার পরে আমরা মিলন হোসেনের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
প্রাথমিকের তৃতীয় ধাপের ফল যেদিন প্রকাশ হতে পারে
চাঁদপুরে কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
৯৬ হাজার ৭৩৬ শিক্ষক নিয়োগ, আবেদন করবেন যেভাবে
শিক্ষক নিয়োগের পঞ্চম গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন শুরু বুধবার
X
Fresh