দিশেহারা ডিএনডিবাসী (ভিডিও)
মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গেল কয়েক দিনের বৃষ্টিতে নারায়ণগঞ্জের ডিএনডি বাঁধের ভেতরসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট, শিল্পকারখানাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। পানি জমে কোথাও হাঁটু থেকে কোমর পানি উঠে গেছে। ভোগান্তিতে পড়েছে, ডিএনডির ভেতরে বসবাসকারী কয়েক লাখ মানুষ। একদিকে করোনার মহামারী অপরদিকে জলাবদ্ধতা। সব মিলে দিশেহারা এখানকার মানুষ।
সরেজমিনে দেখা যায়, ডিএনডি অভ্যন্তরে এখনও স্থান ভেদে দেড় থেকে দুই ফুট পানিতে তলিয়ে আছে। বিশেষ করে ডিএনডির বাঁধের ভেতরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি, পাইনাদি, কদমতলী, জালকুড়িসহ ফতুল্লার ইসদাইর, গাবতলী, উত্তর মাসদাইর, দক্ষিণ সস্তাপুর, লাল খাঁ, লামাপাড়া, বিভিন্ন এলাকার পানিতে তলিয়ে গেছে। সেসব এলাকায় হাঁটু পানি জমে গেছে। আবার কোনও কোনও এলাকায় কোমর পানি উঠে গেছে।
ডিএনডি এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত কয়েক মাস ডিএনডির অভ্যন্তরে পানি নিষ্কাশন ঠিকমত হচ্ছে না। তাই হঠাৎ বৃষ্টির কারণে পানি জমে বাসা বাড়িতে কোমর পানি কোথাও হাঁটু পানি জমে যায়। এসব পানি ময়লা দুর্গন্ধ যুক্ত হওয়ায় পরিস্থিতি ভয়াবহ। এছাড়া বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থাকায় এখন ময়লা আবর্জনা মিশ্রিত পানি, রাস্তা ঘাট, বাসা বাড়িতে ঢুকে যাওয়ায় তারা আতংকে দিন যাপন করছে।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ-৪ (সিদ্ধিরগঞ্জ-ফতুল্লা) আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামিম ওসমান ডিএনডির জলাবদ্ধ এলাকা পরিদর্শন করেন। সেসময় তিনি বলেন, ডিএনডির উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য পরবর্তী আর্থিক বরাদ্দের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে তিনি আলাপ করেছেন। আরও যে পরিমাণ অর্থেও প্রয়োজন সেটা বরাদ্দ হয়ে গেলে সেনাবাহিনী এই প্রকল্পকে হাতির ঝিলের চেয়েও সুন্দর করবে। এতে প্রায় বিশ লাখ মানুষ স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা থেকে রেহাই পাবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
ডিএনডি বাঁধের কাজ শেষ দ্রুত শেষ করতে ও জলাবদ্ধতা নিষ্কাশনের কাজ শুরু করেছে সেনাবাহিনী।
ডিএনডি উন্নয়ন প্রকল্প পরিচালক লেফটেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ মাসফিকুর আলম ভূঁইয়া বলেন, ইতোমধ্যে ডিএনডি প্রকল্পের ৭৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। মাঝে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব কারণে কাজের গতি কম ছিল। তবে বর্তমান পুরোদমে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার পানি দ্রুত নিষ্কাশনের জন্য তাদের স্থাপিত দুটি নতুন পাম্প (৩৯২ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন) অস্থায়ী ভিত্তিতে জেনারেটরের মাধ্যমে চালু হওয়ায় দ্রুত জলাবদ্ধতার সমস্যা কমে আসবে। এছাড়া প্রকল্পের কাজ দ্রুত ও স্থায়ী সুন্দরভাবে সম্পন্নের জন্য আরও ৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়। বর্তমানে সেটি পরিকল্পনা কমিশনে একনেকের অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আশা করি এ বরাদ্দ হলে আমরা ডিএনডিবাসীকে সুন্দর একটি প্রকল্প উপহার দিতে পারবো।
এসএস
মন্তব্য করুন