করোনা: মানিকগঞ্জে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, ৭ দিনে আক্রান্ত ১৯৬ জন
মানিকগঞ্জে প্রতিদিনই হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। পরিসংখ্যান বলছে, এপ্রিল মাসের ৪ তারিখ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ২১ জন। ১৯ এপ্রিল মানিকগঞ্জ জেলাকে লকডাউন করার পর আক্রান্তের হার কিছুটা কমে যায়। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ১ জন ও ২য় সপ্তাহে ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়। কিন্তু লকডাউন কিছুটা শিথিল করা হলে আক্রান্তের হার আবার বাড়তে থাকে। মে মাসের ৩য় সপ্তাহে ৩৬ জন, শেষ সপ্তাহে করোনা শনাক্ত হয় ৮১ জনের। অর্থাৎ মে মাসে আক্রান্ত হয় ১২৮ জন। ফলে এপ্রিল ও মে মাসে করোনা শনাক্তের সংখ্যা হয় ১৪৯ জন।
৩১ মে থেকে লকডাউন খুলে দেয়ার পর আক্রান্তের হার বাড়ছে আশংকাজনক হারে। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহেই করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৯৬ জন। যার গড় প্রতিদিনে ২৮ জন।
এই অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন করোনা প্রতিরোধ জেলা কমিটির প্রধান এবং জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস। তিনি বলেন, মানিকগঞ্জের করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কমিটির সদস্যদের মতামতের প্রেক্ষিতে আগামীতে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সরকারি বিধিভঙ্গ করে মানুষজন বিনা প্রয়োজনে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করছেন। অনেকেই মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেন না এবং সামাজিক দূরত্বও মেনে চলছেন না। নানাভাবে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সচেতন করা হলেও তাতে কোনও লাভ হচ্ছে না। করোনা প্রাদুর্ভাব রোধকল্পে জনসাধারণকে আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে তিনি অভিযানেও নেমেছেন। মাস্ক ব্যবহার না করার কারণে জরিমানা করা হচ্ছে। যাদের মাস্ক নাই তাদের মাস্ক দেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্নভাবে জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, জরুরি দরকার ছাড়া বাইরে না বের হওয়া এবং প্রয়োজনে বাইরে বের হলে আবশ্যিকভাবে মাস্ক ব্যবহারসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে সকলকে অনুরোধ করা হচ্ছে। প্রতিটি উপজেলায় অনুরূপ অভিযান চলছে। কিন্তু মানুষজন আইন মানছেন না।
জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত মোট তিন হাজার ৪৮৩ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকার বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে তিন হাজার ৯০টির রিপোর্ট পাওয়া গেছে। যাতে পজিটিভ পাওয়া গেছে ৩৪৫ জনের দেহে। এদের মধ্যে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় ১০০ জন, সাটুরিয়া উপজেলায় ৬৯ জন, সিংগাইর উপজেলায় ৬৫ জন, ঘিওর উপজেলায় রয়েছেন ৪৯ জন, হরিরামপুর উপজেলায় ২৮, শিবালয় উপজেলায় ২৫ জন ও দৌলতপুর উপজেলায় রয়েছেন ৯ জন।
আক্রান্তদের মধ্যে ২৫ জন জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে এবং ২১৮ জন নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন। সুস্থ হয়েছেন ৯৯ জন এবং মারা গেছেন ৩ জন। এছাড়া করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৫ জন।
এসএস
মন্তব্য করুন