• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

কক্সবাজারে ‘রেড জোনের’ পরিধি বেড়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণ নেই!

কক্সবাজার প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ০৭ জুন ২০২০, ১৫:৩৬
Corona virus lockdown redzone
কঠোর লকডাউন দিলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে তা মানার কোনো লক্ষণ নেই

করোনা সংক্রমণ এড়াতে কক্সবাজার পৌরসভার পর জেলার আওতাধীন চকরিয়া পৌরসভা, উখিয়া উপজেলা ও টেকনাফ পৌরসভাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পেলে অন্যান্য এলাকাকে ‘রেড জোনের’ আওতায় আনা হবে।

জেলার ‘রেড জোন’ বাস্তবায়ন কমিটির সমন্বয়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও পর্যটন) মোহাম্মদ আশরাফুল আফসার এই তথ্য জানান।

তবে কক্সবাজার পৌরসভাসহ অন্যান্য এলাকায় ‘রেড জোন’ ঘোষণার পরও স্থানীয় জনগণ তা মানছেন না। জনসাধারণ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে যত্রতত্র ঘোরাফেরা করছে। বিষয়টি এখন অনেকটা ‘উদ্বেগজনক’ বলে মন্তব্য করছেন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ।

এদিকে, গতকাল থেকে কক্সবাজার পৌরসভাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণার পর দ্বিতীয় দিন আজ রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারসহ সড়ক, উপ-সড়ক, অলি-গলিতে মানুষের ভিড় ছিল লক্ষণীয়। মানুষের মাঝে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছেনা।

তবে ‘রেড জোনে’ রোববার ও বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার ও প্রয়োজনীয় দোকানসমূহ খোলা রাখার নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু জনসমাগম এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সবকিছু করার নির্দেশনা রয়েছে। সেই হিসেবে আজ রোববার হওয়ায় কক্সবাজার পৌর শহরের কাঁচাবাজার ও মুদির দোকানগুলো খোলা হয়। সে সুযোগে যত্রতত্র মানুষের উপচে পড়া ভিড় লেগেই ছিল। বুঝাই যায়নি করোনা কবল থেকে মানুষের বাঁচার এতটুকু সচেতনতা।

এদিকে কক্সবাজারের চকরিয়া পৌরসভা (পুরো এলাকা) এবং ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ২, ৩ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডকে রেড জোন চিহ্নিত করে কঠোর লকডাউনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। করোনার বিস্তার ঠেকাতে আজ মধ্যরাত থেকে আগামী ২১ জুন রাত ১২ টা পর্যন্ত ১৪ দিন কঠোর লকডাউনের আওতায় থাকবে। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে জেলা ও উপজেলা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক এসব এলাকায় বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে রেড জোন হিসেবে শনাক্ত করা হয়।

চকরিয়া পৌরসভার ৯ টি ও ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডকে গতকাল শনিবার (৬ জুন) বিকেলে বিজ্ঞপ্তি জারি করে এ আদেশ দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ।

এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে রেড জোন এর আওতায় পড়া এলাকায় ১৪ দিনের লকডাউন কার্যকর করা হবে অনেকটা কারফিউর মতোই। এই সময়ে সবাইকে কার্যত বাড়িতেই অবস্থান করতে হবে। কেউ বাহির থেকে আসলেও তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে।

লকডাউন চলাকালীন কর্মহীন যেসব শ্রমজীবী পরিবার রয়েছে তাদের তালিকা করে বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে। কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি গাড়ি চলাচলে জেলা প্রশাসনের অনুমতি গ্রহণ করবে।

অ্যাম্বুলেন্স, রোগী পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ব্যক্তিবর্গের (অনডিউটি) পরিবহন, কোভিড-১৯ মোকাবেলা ও জরুরি সেবা প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের গাড়ি এর আওতার বাইরে থাকবে।

এ ছাড়া সব ব্যক্তিগত ও গণ-পরিবহন বন্ধ থাকবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বহনকারী হালকা ও ভারী যানবাহন রাত ৮টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত চলাচল করতে পারবে।

সকল প্রকার দোকান, মার্কেট, হাট-বাজার, ফুটপাতের দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবলমাত্র শনিবার, সোমবার ও বুধবার কাঁচাবাজার এবং শুক্রবার, শনিবার, সোমবার ও বুধবার মুদি দোকান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত খোলা যাবে। ওষুধের দোকান এর আওতার বাইরে থাকবে।

সকল হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও কোভিড-১৯ মোকাবেলায় পরিচালিত ব্যাংকিং সেবা প্রদান এর আওতার বাইরে থাকবে। রেড জোনে জরুরি সংবাদ সংগ্রহের জন্য নির্বাচিত সংবাদকর্মী এবং কোভিড-১৯ মোকাবেলায় রেড-জোনে কাজ করার নিমিত্তে নিয়োজিত স্বেচ্ছাসেবীদের উপজেলা নির্বাহী অফিসার, চকরিয়া কর্তৃক ছবিযুক্ত বিশেষ পরিচয়পত্র দৃশ্যমান অবস্থায় গলায় ঝুলানো থাকা সাপেক্ষে কাজ করার অনুমতি দেয়া হচ্ছে।

অপরদিকে টেকনাফ পৌর এলাকাকে ‘রেড জোন’ ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ জুন সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ সংক্রান্ত উপজেলা কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাতে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাইফ এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে আজ ৭ জুন এ ব্যাপারে মাইকিং করা হবে। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সাইফ স্বাক্ষরিত টেকনাফ পৌর এলাকাকে ‘রেড জোন’ হিসাবে ঘোষণার পর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।

একইভাবে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত উখিয়া উপজেলাকেও ‘রেড জোন’ ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রশাসন। উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ‘রেড জোনে’ ৭ জুন মধ্যরাত থেকে কঠোর লকডাউন শুরু হবে।

উল্লেখ্য, গত ৬৪ দিনে মোট ৭৬৯৯ জন সন্দেহভাজন রোগীর করোনা ভাইরাস টেস্ট করা হয় কক্সবাজার মেডিকেল কলেজে স্থাপিত ল্যাবে। এর মধ্যে ১০৬৬ জনের রিপোর্ট করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এতে কক্সবাজার জেলার রয়েছে ৯৬৯ জন। কক্সবাজার জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন ১জন রোহিঙ্গাসহ মোট ২১ জন।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
আরও ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় প্রাণ গেলো আরও ১ জনের, শনাক্ত ৪৯
আরও ৪৬ জনের শারীরে করোনা
X
Fresh