• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

সন্তানের অত্যাচারে বাড়ি ছেড়ে পরের ঝুপড়ি ঘরে বাবা

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ

  ০৪ জুন ২০২০, ১৭:০৮
father left the house abuse child next hut
ছেলের অত্যাচার সইতে না পেরে অন্যের ঝুপড়ি ঘরে বাবা

বৃদ্ধ বাবাকে বাড়ি থেকে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছেন এক নিষ্ঠুর সন্তান। বর্তমানে ওই বৃদ্ধ পরের জমিতে ছোট্ট একটি ঝুপড়ি ঘরে বসবাস করছেন। খাওয়াও চলছে প্রতিবেশীর বাড়িতে। এভাবে এক সপ্তাহ যাবত মানবেতর জীবন যাপন করছেন ওই হতভাগা বাবা।

অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা ৫নং শিমলা-রোকনপুর ইউনিয়নের বড়শিমলা গ্রামে। বৃদ্ধের নাম আবজাল গাজী। পাঁচ বছর আগে তার ছেলেরা তার স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি লিখে নেয়।

বাড়ি ছাড়ার এক সপ্তাহ পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধ আবজাল গাজী অন্যের সহযোগিতায় কালীগঞ্জ থানায় ছেলের বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃদ্ধের স্ত্রীও বাড়ি ছেড়ে একমাত্র মেয়ে জামাই বাড়ি বসবাস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃদ্ধ আবজাল গাজীর তিন ছেলে এক মেয়ে। মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার এলাকায় বেশ কয়েক বছর আগে। তিন ছেলে বিদেশ করেছেন। এর মধ্যে মেজ ছেলে রবিউল ইসলাম গাজী মারা গেছেন।

ছোট ছেলে বাবুল গাজী এখনো প্রবাসী। বড় ছেলে রফিক গাজী প্রায় আট বছর হলো প্রবাস থেকে ফিরে এখন বাড়িতে। এই রফিক গাজীর বিরুদ্ধে নিজ কন্যা সন্তানকে গলা টিপে হত্যার অভিযোগ রয়েছে গ্রামের মানুষের মুখে মুখে।

বৃদ্ধ বাবা আবজাল গাজীর দাবি, ছেলে আমাকে খেতে দেয় না, কিছু বললেই শুধু মারে। প্রায় আমাকে ধরে ধরে মারে। এক সপ্তাহ আগেও আমার বড় ছেলে রফিক আমার বাম চোয়ালে জোরে চড় মারে। এরপর বাধ্য হয়ে প্রতিবেশীদের পরামর্শে বাড়ি ছেড়ে গ্রাম সম্পর্কে এক বোনের জমিতে একটি চালা তৈরি করে সেখানেই থাকছি।

যদিও অভিযুক্ত ছেলে রফিক গাজীর বক্তব্য ভিন্ন। রফিক গাজীর ভাষ্য, আমার বাবা আমার কথা শোনে না। সে তার মত করে চলতে চাই। যে কারণে মতের অমিল হওয়ায় সম্প্রতি বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন। তবে জমি লিখে নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন সব জমি অন্যের কাছ থেকে কেনা।

প্রতিবেশী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি হযরত আলীর চোখে রফিক গাজী একজন চরম অভদ্র এবং অসামাজিক মানুষ। স্থানীয় এ নেতার ভাষ্য, বৃদ্ধ আবজাল গাজীকে প্রায়ই তার বড় ছেলে রফিক গাজী নির্যাতন করেন। দিনের পর দিন খেতে দেয় না।

এ নিয়ে সামাজিক ভাবে অনেকবার সালিশ হয়েছে কিন্তু কোনও সমাধান হয়নি। সর্বশেষ বৃদ্ধ প্রতিবেশী এক বোনের জমিতে চালা তুলে বসবাস করছেন। এ ঘটনায় তার সহযোগিতায় বৃদ্ধ আবজাল কালীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন বলেও যোগ করেন তিনি।

কালীগঞ্জ থানার ওসি মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সূবর্ণা রাণী সাহা বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানালেন।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh