• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনা উপসর্গ নিয়ে ৭ দিনে ১৪ জনের মৃত্যু

শরীফ চৌধুরী, চাঁদপুর

  ৩১ মে ২০২০, ১৮:৪০
Corona virus
চাঁদপুর

চাঁদপুরে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সঙ্গে সঙ্গে করোনা আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যুর হারও। গত ৭ দিনে এ জেলায় করোনায় আক্রান্ত ও উপসর্গ নিয়ে ১৪ জন মারা গেছেন।

এছাড়াও এ পর্যন্ত জেলায় ১৮৪ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজিটিভ নিয়েই মারা গেছেন ১৫ জন। ফলে জেলার সর্বত্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

এ অবস্থায় চাঁদপুরবাসীর দাবি করোনা শনাক্ত করতে চাঁদপুরে একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার। এ জন্য তারা স্থানীয় সাংসদ ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহায়তা কামনা করেছেন।

চাঁদপুর জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, আজ নতুন করে আরও ৩ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে এখন করোনা পজিটিভ রোগী হচ্ছে ১৮৪ জন। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা পজিটিভ নিয়ে ১৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকাল পার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল জানান, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনার উপসর্গ নিয়ে আজ মোস্তফা কামাল (৬০) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন।

তার বাড়ি হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলার সাতবাড়িয়া গ্রামে। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দাফন করা হয়েছে।

চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ২৯ মে শুক্রবার করোনার উপসর্গ নিয়ে খোরশেদ আলম (৬৫) নামে একজনের মৃত্যু হয়। তিনি বৃহস্পতিবার রাতে করোনার উপসর্গ নিয়ে সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হন। তার নমুনা শুক্রবার সকালে নেয়ার কয়েক ঘন্টা পর তিনি দুপুরে মারা যান।

তার বাড়ি সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী গ্রামে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নির্দেশিত নিয়ম অনুযায়ী তার দাফন সম্পন্ন করা হবে।

ঈদের দিন ২৫ মে সোমবার রাতে শহরের গুয়াখোলায় করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে নিজ বাসায় মারা যান হৃদয় চন্দ্র বণিক (৫৯) নামের এক স্বাস্থ্য সহকারী। রোববার তিনি চাঁদপুরে করোনা টেস্টের জন্য নমুনা প্রদান করেন এবং পরদিন সোমবার রাতে তার মৃত্যু হয়। এছাড়া হাজিগঞ্জ উপজেলায় বিদ্যাসাগর নামের (৭২) এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেলে তার নমুনা সংগ্রহের পর শনিবার তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।

কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচও) ডা. মো. সালাহ উদ্দিন মাহমুদ জানান, চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার গোহট উত্তর ইউনিয়নের পালগিরী গ্রামের সরকার বাড়িতে ৩০মে শনিবার করোনার উপসর্গ নিয়ে ফজিলেতুন্নেসা (৭০) নামে বৃদ্ধা মৃত্যুবরণ করেন। তার দু’দিন আগে ২৮ মে তার স্বামী মজিবুর রহমান বাচ্ছু সরকার (৮০) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান।

চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, শহরের নিউ ট্রাক রোডের বটতলা এলাকার কাজী অফিস সংলগ্ন চারতলা ভবনে ২৯মে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে মো. আবুল খায়ের মিজি (৫৫) করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা যান। একই দিনে চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ওয়ার্ডে মারা যান ফরিদগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ও সংবাদকর্মী আবুল হাসনাত খান (৫৫)।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, কোনও ধরনের মৃত্যুই আমাদের কাম্য নয়। কোনও ব্যক্তির করোনা উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসা না নিয়ে যদি তিনি বাড়িতেই থাকেন সেটা খুবই দুঃখজনক। কারণ আমরা তাদের চিকিৎসা দেয়ার সুযোগও পাচ্ছি না।

তিনি আরও বলেন, আক্রান্তদের অনেকেই তথ্য গোপন করে বাড়িতে চিকিৎসা নেয়ার চেষ্টা করছেন। যে কারণে মৃত্যুর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। কোনও ব্যক্তির করোনা উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া খুবই জরুরি।

সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত বলেন, চাঁদপুরে মৃত্যুর হার কমাতে হলে জরুরি ভিত্তিতে আইসিইউ দরকার। এতে কিছুটা হলেও মুমূর্ষু রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে। না হলে পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে চলে যেতে পারে। তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হবে।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
পুলিশ লাইনস পুকুরে কনস্টেবলের রহস্যজনক মৃত্যু
ধান খেয়েছে হাঁস, মারামারিতে নিহত ১
তিন ভাই-বোনকে গুলি করে হত্যা, ২ জনের মৃত্যুদণ্ড
X
Fresh