হাতিয়ায় এখনো সংস্কার হয়নি বেড়িবাঁধ, উদ্বিগ্ন নদী পারের মানুষ
এখনো সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়নি নোয়াখালীর হাতিয়ায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ। প্রতিনিয়ত জোয়ারের পানি ঢুকে নষ্ট করছে ফসলি ক্ষেত, পুকুরের মাছ ও বাসস্থান। ইতোমধ্যে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকশ পরিবার। আসছে পূর্ণিমার জোয়ার ও বর্ষার কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন নদী পাড়ে বসবাস করা মানুষের।
জানা যায়, নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে চরঈশ্বর, নলচিরা, সূখচর, সোনাদিয়া, নিঝুমদ্বীপ তমরদ্দি, হরনী ও চানন্দী ইউনিয়নে এলাকায় কয়েকটি স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এতে এসব এলাকায় বসবাস করা প্রায় ৫০ হাজার মানুষ হুমকির মুখে পড়ে। জোয়ার, নোনা পানি, জলোচ্ছ্বাস আর আসন্ন বর্ষায় বিপদের আশংকায় ভাঙন এলাকা ছেড়ে চলে গেছে কয়েকশ পরিবার।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সূখচর ইউনিয়নে। এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বাজারের উত্তর পাশে প্রায় এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধ একেবারেই নেই।
সূখচরের চর আমান উল্যা গ্রামের অলি আহম্মদ নামে এক বৃদ্ধ জানান, আম্পানে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি ঢুকে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি ভেসে গেছে। নদীর তীরে বসবাস করা অনেকে বাসস্থান অন্যত্র নিয়ে গেছে বলে জানান তিনি। যারা এখনো বেড়ির ভেতরে বসবাস করছে তারা ও আছে ভয়ে। কারণ পূর্ণিমার জোয়ারে ফের প্লাবিত হওয়ার আশংকা রয়েছে।
সূখচর ইউনিয়নের খবির চৌকিদার জানান, প্রতিনিয়ত জোয়ারের সঙ্গে নোনা পানি ঢুকে নষ্ট করছে ফসলি ক্ষেত, শাক-সবজি, পুকুরের মাছ। আসছে আউশ মৌসুম নিয়ে শঙ্কিত চাষিরা।
সূখচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন জানান, প্রতি বছর বর্ষার পূর্বে বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়। কিন্তু এবার তা করা হয়নি। এতে গত বছর বর্ষা মওসুমে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ আম্পানরে আঘাতে সহজে ভেঙে বিশাল এলাকা প্লাবিত হয়। আমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনও ফলাফল পায়নি। আসছে বর্ষা মৌসুমের আগেই জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ সংস্কার করার দাবী জানান তিনি।
এ ব্যাপারে নোয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী নুরুল আলম জানান, আমরা প্রতিবছর নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন বেড়িবাঁধ মেরামত ও নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য চাহিদা পাঠাই প্রায় ২০ কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ পাই দুই থেকে তিন কোটি টাকা। অর্থ সংকটের কারণে অনেক জায়গায় জরুরি ভিত্তিতে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার প্রয়োজন হলে তা করতে পারছি না। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে ভেঙে যাওয়া বেড়িবাঁধ মেরামতের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনও বরাদ্দ পায়নি।
এসএস
মন্তব্য করুন