অপহরণের ২৫ দিন পর যুবকের মরদেহ উদ্ধার
কক্সবাজারের গহীন অরণ্য থেকে মাটি খুঁড়ে যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উখিয়া উপজেলার পালংখালীর গহীন অরণ্যে মাটি খুড়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে টেকনাফের হোয়াইক্যং ফাঁড়ি পুলিশ।
অপহৃত ও নিহত যুবক হচ্ছে টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের মিনাবাজার এলাকার মো. হোসেনের ছেলে মোহাম্মদ শাহেদ (২৬)।
গেল ২৯ এপ্রিল রাতে মিনাবাজারের পাহাড়ি এলাকা থেকে ধান ক্ষেত পাহাড়া দেয়ার সময় শাহেদসহ তিনজনকে অপহরণ করে নিয়ে যায় রোহিঙ্গা হাকিম ডাকাতের বাহিনী। এর দুইদিন পর অপহৃত আক্তারুল্লাহ নামে এক যুবককে হত্যা করে হোয়াইক্যংয়ের উনচিপ্রাং এলাকায় পাহাড়ের কাছে মরদেহ ফেলে দেয় হাকিম বাহিনী। আক্তারুল্লাহকে হত্যার পর ফোন করে হত্যার কথা স্বীকার করে শাহেদসহ দুইজনের জন্য ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করতে থাকে হাকিম। এ সময় অপহৃতদের উদ্ধারে মানববন্ধন পালন করে স্থানীয়রা।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন কয়েকদফা পাহাড়ে অভিযান চালালেও অপহৃত কাউকে উদ্ধার কিংবা ডাকাত দলের কাউকে আটক করতে পারেনি। একপর্যায়ে রোববার সকালে ইদ্রিস নামে অপহৃতদের একজন পালিয়ে আসে। তিনি জানান শাহেদকে হত্যা করে পাহাড়ে পুঁতে ফেলে ডাকাতরা। পরে তার দেখানো পথে অভিযান চালিয়ে গতকাল রোববার বিকেলে নিহত শাহেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মশিউর রহমান জানান, পালংখালীর গহীন পাহাড়ে কুইচ্ছার জোড়া এলাকা থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। চারদিন আগে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, হাকিম ডাকাতের আস্তানা থেকে একজন জীবিত ফিরে আসা ও মরদেহ উদ্ধারসহ সব কিছু নিয়ে পুলিশ হাকিমের অবস্থান চিহ্নিত করতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ডাকাত দলের কাছ থেকে পালিয়ে আসা যুবক ইদ্রিসের পালিয়ে আসা ও হাকিমের রাখাইনের পাড়ি জমানোর বিবরণ অনেকের কাছে সন্দেহজনক মনে হচ্ছে। তাদের ধারণা ডাকাত দলের সঙ্গে তার যোগসাজস থাকতে পারে। সে দশ বারো বছর পূর্বে মিয়ানমার থেকে আসা পুরোনো রোহিঙ্গা হওয়ায় সন্দেহ আরও বাড়ছে।
প্রসঙ্গত, বিগত ৪-৫ বছর ধরেই টেকনাফ-উখিয়ার গহীন পাহাড়ে আস্তানা গেড়ে অপহরণ, খুনসহ নানা অপরাধে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে অত্যাধুনিক অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হাকিম ডাকাত। নিজেকে সে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আল ইয়াকিন দ্বারা পরিচালিত বলে দাবি করে বেশ কয়েকদফা ভিডিও বার্তা ছাড়ে। এর আগে তাকে গ্রেপ্তার পাহাড়ে ড্রোন ও হেলিকপ্টার অভিযান চালিয়েছিল র্যাব। এছাড়া পুলিশ বিভিন্ন সময় হাকিমের আস্তানায় অভিযান চালাতে গেলে বন্দুকযুদ্ধে হাকিমের দুই ভাই ও স্ত্রী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
জেবি/পি
মন্তব্য করুন