ঘূর্ণিঝড় আম্পান: চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ
চট্টগ্রামে মহাবিপদ সংকেত জারি হওয়ার পর বন্দরের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) জাফর আলম বলেন, বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ আছে, সব জাহাজ জেটি থেকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেয়া হয়েছে। কোনও দুর্ঘটনা যেন না ঘটে তাই যন্ত্রপাতিও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বহির্নোঙরে অবস্থানরত সব বড় জাহাজকে গভীর সমুদ্রে নিরাপদ স্থানে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, লাইটারেজ জাহাজ শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন কর্ণফুলী নদীতে নোঙ্গর করে রাখতে বলা হয়েছে। ক্লিয়ার রাখা হয়েছে বন্দর চ্যানেল।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) দেলোয়ার হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় আমরা প্রস্তুত। উপকূলীয় এলাকায় সকল আশ্রয়কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। স্থানীয়ভাবে মাইকিং করাসহ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বলা হচ্ছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিছু লোক সরিয়ে এনেছি। চট্টগ্রামে আশ্রয়কেন্দ্রসহ স্কুল-কলেজের পাকা স্থাপনা মিলিয়ে চার হাজারের মতো স্থাপনা খুলে রাখা হয়েছে উপকূলবাসীর জন্য।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুধবার সর্বশেষ বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (বিজ্ঞপ্তি নম্বর-৩২) জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও কাছাকাছি উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘আম্পান’ উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বর্তমানে একই এলাকায় অবস্থান করছে।
এটি বুধবার সকাল ৯টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৫২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৫১৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও উত্তর, উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ বিকেল বা সন্ধ্যার মধ্যে সুন্দরবনের কাছ দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টা ২০০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটে সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে।
মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্র বন্দরকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এসএস
মন্তব্য করুন