কষ্টে আছেন সিদ্ধিরগঞ্জের বেসরকারি স্কুলের দুই সহস্রাধিক শিক্ষক-কর্মচারী
সিদ্ধিরগঞ্জে বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীর দুই হাজার পরিবার মারাত্মক অর্থকষ্টে দিন যাপন করছেন। আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দতো দূরের কথা এবার তারা দুই মুঠো অন্ন যোগার করার যুদ্ধে ব্যস্ত।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গেল ১৭ মার্চ থেকে সকল শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নিয়মিত বেতন-ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন এসব পরিবার। স্কুলের মালিকরা ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে বেতন আদায়ের আগেই করোনার কারণে সরকার স্কুল বন্ধ ঘোষণা করেছে। তাই ফান্ডে টাকা না থাকায় অনেক শিক্ষক মার্চ মাসের বেতন পাননি। বেতন না পাওয়ায় এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন পরিবার পরিজন নিয়ে। সমাজে এ পেশার লোকদের সম্মানজনক অবস্থা থাকায় ত্রাণের লাইনে দাঁড়াতে পারে না। কারও কাছে ধার চাইলেও মানুষ দিচ্ছে না। এছাড়া অনেকে বাড়িভাড়ার জন্য বাড়িওয়ালার চাপ সইতে হচ্ছে। অপরদিকে এসব স্কুলের পরিচালকরাও অর্থ সংকটে পড়ে দিশেহারা ।
এ বিষয় কথা হয় সিদ্ধিরগঞ্জের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. মজিবুর রহমানের সাথে। তিনি জনান, বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন স্কুল পরিচালকরা বর্তমানে অর্থকষ্টে দিশেহারা। এরা এমন পেশার লোক কাউকে নিজের কষ্টের কথা বলতে পারে না । আমরা বাধ্য হয়ে মাঠে নেমেছি। আমাদের সংগঠনের প্রায় দুই সহস্রাধিক পরিবার খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছেন। গতকাল সোমবার সকালে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। আশা করি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের অসহায় বেসরকারি শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াবেন।
সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আরিফ হোসেন ঢালী জানান, করোনাভাইরাসের কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ধরুন আর্থিক সংকটে পড়েছেন তারা। স্কুল ভবনের ভাড়া, শিক্ষকদের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তা। এছাড়া স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের বেতনও বন্ধ। অথচ শিক্ষার্থীদের বেতনের টাকা দিয়ে স্কুলের আনুষঙ্গিক খরচ ও শিক্ষকদের বেতন পরিশোধ করা হয়। এমন অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইঙ্গিত অনুযায়ী যদি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটের কারণে হয়তো চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। এতে শিক্ষাজীবন হুমকির মুখে পড়বে হাজার হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে বেকার হয়ে যাবে এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষকরা।
সিদ্ধিরগঞ্জের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালক ঐক্য পরিষদের উপদেষ্টা সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মী বিল্লাল হোসেন রবিন জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে ১৪৫টি বেসরকারি কিন্ডার গার্টেন স্কুল চালু রয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে এখন এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ। এ সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে প্রায় দুই সহস্রাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মচারী। স্কুল বন্ধ থাকায় আর্থিক সংকটে পড়েছে এসব পরিবার। তাই আমরা মনে করি বেসরকারি স্কুল শিক্ষকদেরকে বাঁচানোর জন্য সরকারি আর্থিক অনুদান দেওয়া জরুরি। নতুবা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়বে শিক্ষা ব্যবস্থা।
জেবি
মন্তব্য করুন