করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার পোলট্রি শিল্প
যানবাহন বন্ধ। ক্রেতা আসে না। ডিম ও মুরগি বিক্রি করতে না পেরে হতাশায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। নির্দিষ্ট সময়ে মুরগি বিক্রি করতে না পেরে ঋণ-সুদ উভয়ই বেড়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুমিল্লার পোল্ট্রি শিল্প।
কুমিল্লার পোল্ট্রি খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে ডিম নেয়ার জন্য গাড়ি আসে না। ডিম জমা হচ্ছে। মাংস বিক্রির জন্য পালন করা মুরগি নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেছে। তবুও বিক্রি করতে পারছে না। এছাড়াও দু-একজন পাইকার যারাই আসেন তাও ডিমের দাম অনেক কম বলেন।
এদিকে পোল্ট্রি খামারিরা জানান, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে খামারিরা গাড়ি দিয়ে ঘুরে ঘুরে ডিম বিক্রি করছেন। তাতে যদি ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে উঠতে পারেন। গাড়ির মাধ্যমে ডিম বিক্রি করে কোনও রকম পুঁজি উঠাতে পারলেও মুনাফা নেই। পরিশ্রমটা বৃথা যাচ্ছে। এমতবস্থায় সরকার যদি খামারিদের প্রণোদনা না দেয় তাহলে পোল্ট্রি শিল্পটা বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
জেলার আদর্শ সদর উপজেলার মাঝিগাছা এলাকার আবিদাহ পোল্ট্রি ফার্মের স্বত্বাধিকারী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ এক মাস ডিমের পাইকার আসে না। আগে প্রতিটি ডিম ৭-৮ টাকা বিক্রি করা গেলেও এখন প্রতিটি ডিম পাঁচ টাকাও বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরিফ আরও জানান, একটি ডিম উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ছয় টাকা। আর এখন সেই ডিম বিক্রি করতে হচ্ছে পাঁচ টাকা। এভাবে চলতে থাকলে পোল্ট্রি খামারিরা ভীষণ ক্ষতির সম্মুখিন হবেন।
নূর জাহান পোল্ট্রির স্বত্বাধিকারী খোরশেদ আলম জানান, সোনালী ককজাতের মুরগি কেজি প্রতি উৎপাদন খরচ ১৬০/৭০ টাকা। ক্রেতা না আসায় বিক্রির দাম উঠেছে ১৩০ টাকা কেজি। এভাবে চলতে থাকলে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে। এছাড়াও নির্দিষ্ট সময়ে মুরগি বিক্রি করতে না পারলে মুরগির খাবার খরচ বেড়ে যায়।
ডিম বিক্রি করতে না পেরে সমস্যায় আছেন খামারি তাহমিনা আক্তার। নিজের পোল্ট্রি খামারের মুরগির ডিম সংগ্রহকালে তাহমিদা জানান, ডিমের দাম কমে গেছে। পাইকার আসে না। সপ্তাহে যে দু-একজন পাইকার আসেন তারাও ডিমের সঠিক মূল্যে কিনতে চান না। ব্যাংক লোন নিয়ে চিন্তিত আছি।
কুমিল্লা জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে খামারিরা উৎপাদিত ডিম ও মুরগির সঠিক মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জেবি
মন্তব্য করুন