• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

মৃত ব্যক্তির কার্ড দিয়ে ২ বছর ধরে চাল নিচ্ছেন ইউপি সদস্য!

পিরোজপুর প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ৩০ এপ্রিল ২০২০, ০৯:০৩
মৃত ব্যক্তিদের কার্ড দিয়ে ২ বছর ধরে উত্তোলন করছেন ইউপি সদস্য!
পিরোজপুর

পিরোজপুরের নাজিরপুরে ন্যায্য মূল্যের চাল বিতরণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার শেখ মাটিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রঘুনাথপুর গ্রামের মৃত্যু আনোয়ারা বেগমের নামে বরাদ্দকৃত চাল গত ২ বছর ধরে উত্তোলন করছেন ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য। মৃত আনোয়ারা বেগম ওই গ্রামের মৃত শামসুর রহমানের স্ত্রী।

ওই কার্ডধারী আনোয়ারা বেগমের ছেলে লোকমান হোসেন জানান, ‘আমার মা আনোয়ারা বেগম গত ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর মারা যান। আনোয়ারা বেগম মৃত্যুর পরে তার নামের ন্যায্য মূল্যের কার্ডটি স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. জাকির হোসেন নিয়ে যান। সেই থেকে মায়ের নামে বরাদ্দকৃত কার্ডের চাল ওই ইউপি সদস্য উত্তোলন করেন’।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন ডিলার মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ‘আমি ডিলার হিসাবে মাত্র ৩ মাস কাজ করছি। কে কার চাল নিয়েছে তা আমার জানা নেই। কারো ব্যাপারে সন্দেহ হলে মেম্বারের কাছে ওই কার্ডের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ঠিক আছে বললে আমি তাকে চাল দেই। আর এর আগের ডিলার ছিলেন সালাউদ্দিন রিন্টু’।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জানান, ‘আমি ওই কার্ড নেইনি বা কে ওই চাল উত্তোলন করে তা আমি জানি না’।

এছাড়া উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নে ন্যায্য মূল্যের চাল বিতরণের অনিয়মের অভিযোগে গত মঙ্গলবার (২৮এপ্রিল) ওই ইউনিয়নের ২ নম্বর দক্ষিণ ঝনঝনিয়া গ্রামের ভুক্তভোগীরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযোগ করেছেন । আর এ অভিযোগ ওই ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার (১,২ ও ৩নং ওয়ার্ড) হেলেনা বেগমের বিরুদ্ধে।

দেয়া অভিযোগ ও ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ওই ওয়ার্ডের মহিলা মেম্বার কার্ড করিয়ে দিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি চেয়ারম্যানকে টাকা দিতে হবে বলে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার বা তারও বেশী টাকা দাবী করেন। কিন্তু ওই সব টাকা দেয়ার পরও কার্ড হয়। পরে তিনি (ইউপি সদস্য) ওই সব কার্ড আটকে তার চাল স্থানীয় ডিলারের সহযোগিতায় নিজে উত্তোলন করেন।

এ ব্যাপারে মালিখালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ফিরোজা বেগম জানান, ‘আমার নামে কার্ড হওয়ার আগে সংরক্ষিত মহিলা সদস্য হেলেনা বেগম আমার কাছে ইউএন ও চেয়ারম্যানের কথা বলে ৭ হাজার টাকা দাবী করেন। আমি ৪ হাজার টাকা দিতে চাইলেও তিনি আমার কথা শুনেননি। কিন্তু তার পরেও আমার নামে কার্ড হয়। কার্ড হাতে পাই নাই। ইউপি মেম্বার হেলেনা বেগম ওই কার্ড দিয়ে নিজেই ২০১৬ সাল থেকেই স্থানীয় ডিলারের মাধ্যমে চাল তুলেন’। একই অভিযোগ ওই ওয়ার্ডের মিন্টু হাওলাদর, রফিকুল ইসলাম মুন্সি, তানিয়া বেগম সহ অনেকেরই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আতাহার হোসেন জানান, মালিখালী ইউনিয়নে ন্যায্য মূল্যের প্রায় অর্ধশত ভুয়া কার্ড রয়েছে যা প্রকৃত সুবিধাভোগীরা পাচ্ছেন না। চেয়ারম্যানসহ ওই মহিলা মেম্বার এ থেকে সুবিধা নিচ্ছেন।

ওই ইউনিয়নের ডিলার শামিম গাজীর সাথে এ ব্যপারে কথা হলে তিনি জানান, ‘ওই সব চাল আমি দিতে চাইনি। কিন্তু মহিলা মেম্বার অনেকটা জোর করে ওই চাল নেন’।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার হেলেনা বেগম ও ইউপি চেয়ারম্যান সুমন মণ্ডল মিঠুর সাথে পৃথকভাবে মুঠো ফোনে কথা হলে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুর রহমান জানান, ‘যেহেতু আমি নতুন তাই টাকার বিনিময় কার্ড দেয়ার বিষয় কিছুই জানি না। তবে এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয় তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
৬ দফা দাবি না মানলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
সাজেকে পণ্যবাহী মাহেন্দ্র খাদে, চালক নিহত
নারায়ণগঞ্জে অজ্ঞাত গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক নিহত
সরকার সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে : রিজভী
X
Fresh