• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

অটোরিকশা চালকদের গাড়ি থানায় জমা রেখে খাদ্য সহায়তা

‘আমাগো ওসি স্যার একজন ভালো মানুষ’

শরীয়তপুর প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ১০ এপ্রিল ২০২০, ২২:১৬
‘আমাগো ওসি স্যার একজন ভালো মানুষ’
অটোরিকশা চালকদের গাড়ি থানায় জমা রেখে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছেন নড়িয়া থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান

করোনা পরিস্থিতিতে অনেকটা বাধ্য হয়েই পেটের দায়ে রাস্তায় বের হওয়া অটোরিকশা চালকদের গাড়ি জমা রেখে পাঁচ দিনের খাদ্য সহায়তা দিয়ে ঘরে থাকার পরামর্শ দিলেন নড়িয়া থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান।

করোনা প্রতিরোধে গেল ২৪ মার্চ থেকে শরীয়তপুরে গণপরিবহন ও যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
তারই ধারাবাহিকতায় শরীয়তপুরের নড়িয়ায় গত কয়েক দিন থেকে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ সড়কে অটোরিকশা, রিকশা ও ভ্যান চলাচলের উপর।

জেলা প্রশাসকের তথ্য অনুযায়ী সর্বোচ্চ করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা। সরকারের সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অনেকটা বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে প্রায় প্রতিদিনই কিছু চালক তাদের অটোরিকশা ও রিকশা বের হন। ওই চালকদের ঘরমুখী করতে ভিন্নধর্মী ওই উদ্যোগ নেন নড়িয়া থানা পু‌লি‌শের এই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) ভোর থেকেই সড়কে বেড়িয়ে পরেন নড়িয়া থানা পুলিশের সদস্যরা। সকাল ছয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে রিকশা ও অটোরিকশা মিলিয়ে ৮০ জনকে গাড়িসহ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে গাড়ি জমা রেখে প্রত্যেকের হাতে পাঁচ দিনের খাবার তুলে দেন নড়িয়া থানা পু‌লি‌শের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান।

প্রথমে পাঁচ দিনের করে খাবার দেয়া হয়েছে চালকদের হাতে। যার মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ৩ কেজি আলু, ১ লিটার তেল, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি ডাল, সাবান ও পেঁয়াজ।

অটোরিকশা চালক শওকত আলী বলেন, ‘সকালে ওসি স্যার আমগো গাড়ি থানায় লইয়া গেছে। পরে গাড়ি জমা রাইখা আমগো চাউল ডাল পেঁয়াজের একটি ব্যাগ হাতে দিয়ে বলেন, এখানে পাঁচ দিনের খাবার আছে এটা নিয়ে যান, এই পাঁচদিন বাসা থেকে বের হবেন না। পাঁচ দিন পর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তবে থানায় এসে আপনাদের গাড়ি নিয়ে যাবেন। আর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে আরও পাঁচ দিনের খাবার নিয়ে যাবেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা পরিবার পরিজন নিয়া চলতে পারছিলাম না, তাই পেটের দায়ে গাড়ি নিয়ে বের হইতাম। অহন ৫ দিনের খাবার দিছে, পরে আবার যোগাযোগ করতে কইছে। এতে আমাদের অনেক উপকার হয়েছে। আমাগো স্যারে একজন ভালো মানুষ।’

নড়িয়া থানা পু‌লি‌শের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা রাস্তায় বের হওয়া ৮০টি গাড়ি আটক করেছি। আটককৃত সকল অটোরিকশা, ইজিবাইক ও নসিমন চালকদের হাতে পাঁচ দিনের খাবার তুলে দিয়েছি। যাতে তারা বাসা থেকে বের না হয়। এই পাঁচ দিনের খাবার শেষ হয়ে গেলে আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পুনরায় আবার খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। আর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যায় তাহলে থানায় এসে যার যার গাড়ি নিয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, দেশের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে তারা গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়লে করোনা ঝুঁকি আরও বাড়তে পারে তাই তাদেরকে ঘরমুখী করতে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান স্যার ও জেলা পুলিশ সুপার এসএম আশরাফুজ্জামান স্যারের পক্ষ থেকে এ খাদ্য সহায়তার দেয়া হলো। এখন থেকে সড়কে না, গাড়ি থাকবে থানায়, তারা থাকবে বাড়িতে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।

ওসি বলেন, অন্য কেউ যদি খাদ্য অভাবে থাকেন তাহলে নড়িয়া থানা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করছি। এই নম্বরে (01713-373616) ফোন করলেই খাদ্য সহায়তা পৌঁছে যাবে তাদের বাড়িতে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
করোনায় আরও একজনের মৃত্যু
আরও ৩৫ জনের করোনা শনাক্ত
করোনায় প্রাণ গেলো আরও ১ জনের, শনাক্ত ৪৯
আরও ৪৬ জনের শারীরে করোনা
X
Fresh