মোবাইল ফোনে কল করলেই পৌঁছে যাচ্ছে ত্রাণ
দিন কিংবা রাত মোবাইল ফোনে কল করলেই বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ত্রাণ। এজন্য ১৮ যুবকের একটি টিম চারটি মোটরসাইকেল নিয়ে সবসময় প্রস্তুত। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আজ বুধবার পর্যন্ত দুই হাজার পাঁচশত পরিবারকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে এ ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার হাতিয়া জেলা বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্যদের সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে এই ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে।
হাতিয়ায় ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় সাত লাখ লোকের বসবাস। এর মধ্যে অধিকাংশ দিনমজুর ও হতদরিদ্র। করোনাভাইরাস মহামারিতে দোকানপাট বন্ধ থাকায় জনজীবন অনেকটা বিপন্ন। সরকারিভাবে গেল দুই সপ্তাহে ত্রাণ দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৩৫০জনকে।
এদিকে জনগণের এই দুর্দশার কথা চিন্তা করে হাতিয়া জেলা বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট ফজলে আজিম তুহিন তার বন্ধুদের কাছ থেকে আর্থিক সহযোগিতা নিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করেন। গেল ২৬মার্চ থেকে আজ বুধবার পর্যন্ত দুই হাজার পাঁচশ’ পরিবারের মধ্যে প্রতিটি পরিবারকে দুই কেজি চাল, এক কেজি আটা, এক কেজি আলু, এক প্যাকেট সবজি বীজ ও দুইটি সাবান দেওয়া হয়েছে।
এজন্য তারা সোশ্যাল মিডিয়াতে মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে একটি হেল্পলাইন সার্ভিস চালু করেছেন।
এর মধ্যে অনেকে সামনে এসে ত্রাণ নিতে অপারগতা জানালে তার দেওয়া গোপন স্থানে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে পরিষদের সদস্যরা। এই সার্ভিস শুধু দিনেই নয় রাতেও চলছে ।
হোম সার্ভিস দেওয়া সদস্যদের মধ্যে একজন জিল্লুর রহমান (৩০) জানান, মোবাইল ফোনে কল পেয়ে ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার পর ভুক্তভোগী সামনে আসেনি। পরে কল করে জানালেন উপজেলার চরকিং নয় নম্বর ওয়ার্ডের খাসের হাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পেছনে রেখে আসতে । কিছু সময় পর সে ত্রাণ পেয়ে নিশ্চিত করলেন। এভাবে গোপনে সার্ভিস নিয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার।
এসব তরুণ প্রতিদিনই ছুটি যাচ্ছেন হাতিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলে। এদের মধ্যে কেউ ছাত্র , কেউ ব্যবসায়ী। সবাই ব্যস্ত পরের উপকারে। কখনও প্রখর রোদ কিংবা গভীর রাতে এই তরুণদের ক্লান্তিহীন ছুটে চলা দ্বীপ উপজেলা হাতিয়াতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এটাই মনে করছেন সাধারণ মানুষ।
জেবি
মন্তব্য করুন