• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনাভাইরাস আতঙ্ক

‘যখন মানুষ বুঝবে তখন আর সময় থাকবে না’

অনলাইন ডেস্ক
  ৩০ মার্চ ২০২০, ১৪:০৪
করোনা কিশোরগঞ্জ হাসপাতাল
ছবি সংগৃহীত

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে এবং ট্রমা হাসপাতালের আইসোলেশন সেন্টারে নিয়োজিত তিন শিফটে চিকিৎসক, নার্স অন্যান্য কর্মচারীদের জন্য প্রয়োজন ৬০টি সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) সেখানে মাত্র সরকারিভাবে ১৫টি সুরক্ষা পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। আছে প্রয়োজনীয় গ্লাভস, মাস্ক স্যানিটাইজারেরও সংকট। ফলে বিপাকে পড়েছেন স্বাস্থ্য সেবাদানের সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক, নার্স ক্লিনারসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ভৈরবে আজ পর্যন্ত ৫০২ জন বিদেশফেরত প্রবাসীকে হোম কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ৪৮৬ জন প্রবাসী তাদের নিজ বাসায় ১৬ জন প্রবাসীকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। যদিও কোয়ারেন্টিন মেনে চলাকালীন সময়ে তাদের কারও মধ্যে করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা যায়নি। এমনকি উপজেলায় করোনা আক্রান্ত কোনও রোগী সনাক্ত হয়নি।

এছাড়া ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে মেয়াদ শেষে ৪৪৬ জন প্রবাসী স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। এদের মধ্যে ৪৩১ জন বাসায় এবং ১৫ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারিন্টনে ছিলেন। আর গেল ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ জন প্রবাসী কোয়ারিন্টনের আওতায় এসেছে বলে নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও এবং উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. বুলবুল আহমেদ।

তিনি আরও জানান, তাদের সবাইকে নিজ বাসায় হোম কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা যায়নি। তারপরও বিনা প্রয়োজনে কেউ বাসার বাইরে বের না হতে এবং বারবার সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

জানা গেছে, জেলার সবচেয়ে বেশি বিদেশফেরত প্রবাসী এসেছে ভৈরবে। ফলে করোনা প্রতিরোধে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসকরা রোগী দেখা সীমিত করেছে। একইসঙ্গে জ্বর, সর্দি কাশি নিয়ে রোগীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে না গিয়ে ২৪ ঘণ্টা হটলাইনে (মুঠোফোনে) স্বাস্থ্যসেবা চালু করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি সহজে বুঝে ওঠতে না পারায় বিপাকে পড়েছে সাধারণ রোগীরাও।

গেল শনিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবা নিতে আসা সালাহ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তি জানান, হাসপাতালের এসে এক ওয়ার্ড আর দ্বিতীয় শ্রেণির একজন ছাড়া কাউকে পাননি। ফলে তিনি সেবা না পেয়ে ফিরে যান। তার মতো আরও লোকজন ফিরে যান বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে চাহিদার তুলনায় এখনও সরকারের পক্ষ থেকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স অন্যান্য কর্মচারীদের জন্য পৌঁছেনি সুরক্ষা পোশাকসহ (পিপিই) প্রয়োজনীয় গ্লাভস, মাস্ক স্যানিটাইজার। ফলে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় বা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে বিপাকে রয়েছে তারা। এছাড়াও করোনায় আক্রান্ত হলে জরুরি প্রয়োজনে রোগীদের জন্য নেই আইসিও ব্যবস্থা। ফলে হতাশ সচেতন মানুষ। যদিও শহরের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশের নবনির্মিত ২০ শয্যাবিশিষ্ট ট্রমা হাসপাতালটিকে করোনা মোকাবেলায় ৫০ শয্যাবিশিষ্ট করে আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে কার্যক্রম চলছে।

প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিএইচও এবং উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব ডা. বুলবুল আহমেদ মোবাইল ফোনে জানান, প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং ট্রমা হাসপাতালে নিয়োজিত তিনটি শিফটে চিকিৎসক, নার্স অন্যান্য কর্মচারীদের জন্য ৬০টি সুরক্ষা পোশাকের (পিপিই) প্রয়োজন। সেখানে মাত্র ১৫টি সুরক্ষা পোশাক সরবরাহ করা হয়েছে। তাছাড়া করোনা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় গ্লাভস, মাস্ক স্যানিটাইজারেরও সংকট রয়েছে। তবে, উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির পক্ষ থেকে ইউএনও মহোদয়ের সহযোগিতায় একশসুরক্ষা পোশাক সংগ্রহ এবং স্থানীয়ভাবে ৩৭টি (পিপিই) দর্জি দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ফলে আমরা আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ কাজ বা সেবা করে যাচ্ছি। তিনি আরও জানান, অচিরেই চাহিদা অনুযায়ী সুরক্ষা পোশাকসহ প্রয়োজনীয় গ্লাভস, মাস্ক স্যানিটাইজার সরবরাহ করবে সরকার।

আর সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে এবং জনসমাগম এড়িয়ে চলতে বলছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) লুবনা ফারজানা। তিনি আরও জানান, উপজেলার বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার লোকজন এখনও প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করছেন। প্রয়োজন ছাড়াই মোটরসাইকেল নিয়ে শহরের অলি-গলিসহ বিভিন্ন সড়কে ঘুরছেন। একইসঙ্গে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। সমাজের এসব মানুষজনকে দ্রুত সচেতন সর্তক হতে আহ্বান করছেন। তা না হলে যখন করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝবে, তখন হয়তবা আর সময় থাকবে না। তাই, সচেতনতার কোনও বিকল্প নেই বলে মনে করেন ইউএনও লুবনা ফারজানা।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, চলতি বছরে ২৪
ধ্রুব এষ আইসিইউতে
২৪ ঘণ্টায় করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১৬
বাসচাপায় প্রাণ গেল ২ মোটরসাইকেল আরোহীর
X
Fresh