‘মেম্বারকে আরও বেশি পেটানো উচিত ছিল’

এক ইউপি সদস্যকে জনসম্মুখে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এসিল্যান্ডের (সহকারী কমিশনার ভূমি) বিরুদ্ধে।

গেল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার কালুপীর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই ইউপি সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এর বিচার চেয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় এসিল্যান্ড নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলছেন, মেম্বারকে আরও পেটানো উচিত ছিল।

এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার রাতে ওই ইউপি সদস্যকে এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে হাতে-পায়ে ধরে একটি কাগজে স্বাক্ষর করে নেয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে দেওয়া অভিযোগ এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলার কালুপীর বাজারে জনসমাগম ঠেকাতে গেল শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্রাম পুলিশ ও থানার এস আই রেজাউল আলমসহ পুলিশের ফোর্স নিয়ে চেষ্টা চালান সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য গাজিউর রহমান।

সন্ধ্যার দিকে তারা বাজারের একটি ফলের দোকান থেকে কিছু ফল কিনে খাচ্ছিলেন। এ সময় এসিল্যান্ড (সহকারী কমিশনার ভূমি) তরিকুল ইসলাম গাড়ি নিয়ে সেখানে যান। এ সময় ওই ইউপি সদস্য এগিয়ে আসলে কোনও কিছু বুঝে উঠার আগেই অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন এসিল্যন্ড।

এ সময় পুলিশ সদস্যরা এসিল্যান্ডকে জানান, তিনি এই এলাকার ইউপি সদস্য। তাকে মারছেন কেন? এটা শুনার পরও এসিল্যান্ড তাকে পেটাতে থাকেন। একটি লাঠি ভেঙ্গে গেলে আরও একটি লাঠি নিয়ে ইউপি সদস্যকে পেটান এসিল্যান্ড এবং গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন।

পরে পুলিশ ওই ইউপি সদস্যকে রক্ষা করেন। স্বজনরা রাতেই গাজি মেম্বারকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

গাজি মেম্বারের অভিযোগ ইউপি সদস্য পরিচয় পাওয়ার পর তাকে অরও বেশি করে পেটান এসিল্যান্ড। মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।

এ বিষয়ে নিজের দায় এড়িয়ে এসিল্যান্ড তরিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাচ্ছিলেন ওই মেম্বার। এজন্য তিনি নন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে সেখান থেকে চলে যেতে ফোর্স করেন। এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম বলেন, মেম্বারকে আরও পেটানো উচিত ছিল। তারা কোনও কাজ করে না। সারাদিন লোকজন নিয়ে বাজারে বসে থাকে। তাদের বেশি করে পেটালেই সব ঠিক হয়ে যাবে।

ঠাকুরগাঁও জজ কোর্টের আইনজীবী আবু সায়েম বলেন, কাউকে মারপিট করার কোনও অধিকার নেই এসিল্যান্ড বা কোনও কর্মকর্তার। যদি কেউ করে থাকেন তবে সেটা সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

প্রসঙ্গত, এ খবর বিভিন্ন অনলাইনসহ গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গতকাল শনিবার রাতে ওই মেম্বারকে এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে নিয়ে হাতে-পায়ে ধরে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে এসিল্যান্ড তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মেম্বারের সঙ্গে মীমাংসা করে নেওয়া হয়েছে। মীমাংসার কাগজে তিনি এবং ইউপি সদস্য স্বাক্ষর করেছেন।

জেবি