ইউপি সদস্যকে পেটানোর অভিযোগ এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে

এক ইউপি সদস্যকে জন সম্মুখে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ঠাকুরগাওয়ের পীরগঞ্জের এসিল্যান্ডের (সহকারি কমিশনার ভূমি) বিরুদ্ধে।

শুক্রবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় উপজেলার কালুপীর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহত ওই ইউপি সদস্য হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে এর বিচার চেয়ে শনিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এ ঘটনায় এসিল্যান্ড নিজের দায় এড়ানোর চেষ্টা করলেও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলছেন, ‘মেম্বারকে আরও পেটানো উচিৎ ছিল’। এ নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর শনিবার রাতে ওই ইউপি মেম্বারকে এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে হাতে পয়ে ধরে একটি কাগজে স্বাক্ষর করে নেয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে দেয়া অভিযোগ এবং এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে উপজেলার কালুপীর বাজারে জনসমাগম ঠেকাতে শুক্রবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত গ্রাম পুলিশ ও থানার এসআই রেজাউল আলমসহ সঙ্গীয় ৬ জন পুলিশ ফোর্স নিয়ে চেষ্টা চালান সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য গাজিউর রহমান। সন্ধ্যার দিকে তারা বাজারের একটি ফলের দোকান থেকে কিছু ফল কিনে খাচ্ছিলেন। এ সময় এসিল্যান্ড (সহকারি কমিশনার ভূমি) তরিকুল ইসলাম গাড়ি নিয়ে সেখানে যান। এ সময় ওই ইউপি সদস্য এগিয়ে আসলে কোনও কিছু বুঝে উঠার আগেই অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে তাকে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন।

এসময় পুলিশ সদস্যরা এসিল্যান্ডকে জানান, তিনি ওই এলাকার ইউপি সদস্য, তাকে মারছেন কেন। এটা শুনার পরও এসিল্যান্ড তাকে পেটাতে থাকে। একটি লাঠি ভেঙে গেলে আরও একটি লাঠি নিয়ে ইউপি সদস্যকে পেটান এসিল্যান্ড এবং গাড়িতে তোলার চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ ওই ইউপি সদস্যকে রক্ষা করেন। স্বজনরা রাতেই গাজি মেম্বারকে উপজেলা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন।

গাজি মেম্বারের অভিযোগ, ইউপি সদস্য পরিচয় পাওয়ার পর তাকে আরও বেশি করে মারপিট করেন এসিল্যান্ড। মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।

এ বিষয়ে তরিকুল ইসলাম বলেন, রাস্তায় দাঁড়িয়ে খাচ্ছিলেন ওেই মেম্বার। এ জন্য তিনি নন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাকে সেখান থেকে চলে যেতে ফোর্স করেন। এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেজাউল করিম বলেন, ‘মেম্বারকে আরও পেটানো উচিত ছিল। তারা কোনও কাজ করে না। সারাদিন লোকজন নিয়ে বাজারে বসে থাকে। তাদের বেশি করে পেটালেই সব ঠিক হয়ে যাবে’।

ঠাকুরগাঁও জজ কোর্টের আইনজীবী আবু সায়েম বলেন, কাউকে মারপিট করার কোনও অধিকার নেই এসিল্যান্ড বা কোনও কর্মকর্তার। যদি কেউ করে থাকেন তবে সেটা হবে বে আইনি এবং দণ্ডনীয় অপরাধ।

এদিকে, এ খবর বিভিন্ন অনলাইনসহ গণমাধ্যমে প্রকাশ পেলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শনিবার রাতে ওই মেম্বারকে এসিল্যান্ড অফিসে ডেকে নিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেয় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। এ বিষয়ে এসিল্যান্ড তরিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি মেম্বারের সঙ্গে আপোষ মীমাংসা করে নেয়া হয়েছে। মীমাংসার কাগজে তিনি এবং মেম্বার স্বাক্ষর করেছেন।

এসএস