ধর্ষণের কথা ফাঁসে স্কুলছাত্রীর আত্মহত্যা
শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলায় ধর্ষণের শিকার হয়ে স্বপ্না কবিরাজ নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় আজ সোমবার দুপুরে নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেছে স্বপ্নার মা। এর আগের দিন রোববার বিকেলে নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী।
নিহত স্বপ্না কবিরাজ নীলগুন গ্রামের মালদ্বীপ প্রবাসী বিপুল কবিরাজের মেয়ে। তিনি ভেদরগঞ্জ প্রতিভা সাইন্স প্রিপ্রারেটরী স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী পড়তেন।
স্থানীয় ও নড়িয়া থানায় মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর নড়িয়া উপজেলার নীলগুন গ্রামের লাবনী কবিরাজের বড় মেয়ে অসুস্থ হয়ে গেলে ছোট মেয়ে স্বপ্না কবিরাজকে প্রতিবেশী সুশীল বাছারের মেয়ে প্রাপ্তি বাছার ও তার বান্ধবী জিতুর কাছে রেখে ডাক্তার দেখাতে ঢাকা যায় লাবনী। রাতে মৃত ভানু বাছারের একটি ঘরের রুমে ঘুমাতে যায় স্বপ্না কবিরাজ। ঘুমিয়ে পরলে রাত ১২ টার দিকে ভানু বাছারের ছেলে সুজিত বাছার (৩০) ঘুমন্ত অবস্থায় স্বপ্নাকে ধর্ষণ করে। পরে এ ঘটনা কাউকে বললে তাকে হত্যার হুমকি দেয় ধর্ষক।
গতকাল রোববার (২২ মার্চ) দুপুরে সুজিত বাছারের ভাই অজিত বাছার (৩৫), ভাবি রিনা রানী মণ্ডল (৩০) ও বোন ভানু বাছার মিলে স্বপ্নাকে ডেকে নিয়ে চরিত্রহীন বলে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। স্বপ্না লজ্জায়, ঘৃণায় বাড়িতে গিয়ে বিকেলে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তর জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনা নিহতর স্বপ্নার মা লাবনী কবিরাজ সোমবার দুপুরে নড়িয়া থানায় একটি মামলা করেন।
নিহত স্বপ্নার মা লাবনী কবিরাজ বলেন, সুজিতের ভাই অজিত, রিনা ও পারুল আমার ছোট মেয়েকে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে বলে, তুই নাকি বিভিন্ন লোকজনের কাছে আমাদের বদনাম বলিস। তুই তো নষ্টা, চরিত্রহীন, তোর স্বভাব চরিত্র ভালো না, তুই বিভিন্ন যায়গায় অপকর্ম করে সুজিতের দোষ দিস। তুই গলায় দড়ি দিয়ে মরতে পারিস না। তুই মরলে এলাকা ভালো থাকবে। তাদের এ কথা শুনে সহ্য করতে না পেরে মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে। এর আগে সুজিত বাছার আমার মেয়েকে ধর্ষণও করেছিল। আমি ওদের বিচার চাই।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, স্বপ্নার আত্মহত্যার ঘটনায় লাবনী কবিরাজ থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার আসামি অজিত বাছার ও তার মা পারুল রানী বাছারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
এজে
মন্তব্য করুন