দুর্গম সাজেকে হামে আক্রান্ত হয়ে এক সপ্তাহে পাঁচ শিশুর মৃত্যু
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের শিয়ালদহে গত এক সপ্তাহে হাম রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত পাঁচ শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে। সেখানে তিন গ্রামে এখনও প্রায় শতাধিক শিশু হামে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা। বৃহস্পতিবার রাতে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নেলসন চাকমা নয়ন জানিয়েছেন, সাজেক ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রাম অরুনপাড়া, নিউথাং পাড়া এবং হাইচপাড়ায় গত কয়েক দিনে হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এতে মূলত শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে এবং ইতোমধ্যেই পাঁচজন শিশু মারা গেছেন। বিষয়টি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে দুর্গমতার কারণে তিনি নিজেও ঠিক সময়ে সঠিক খবর পাননি বলে জানিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।
বাঘাইছড়ি উপজেলার নির্বাহী অফিসার আহসান হাবিব জিতু জানিয়েছেন, গত কয়েকদিন ধরে দুর্গম ও সীমান্তবর্তী শিয়ালদহ এলাকার তিনটি গ্রামের শিশুদের হামে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাচ্ছিলাম। বিষয়টি স্বাস্থ্য বিভাগকে জানানোর সঙ্গে সঙ্গেই তারা পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে গ্রামগুলি অত্যন্ত দূরে এবং দীর্ঘ পায়ে হাটা পথে হওয়ায় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসাসেবা পৌঁছানো কঠিন হচ্ছে। শুক্রবার আরেকটি মেডিকেল টিম যাচ্ছে,সেখানকার পরিস্থিতি বিবেচনা করে প্রয়োজনে আক্রান্ত শিশুদের হেলিকপ্টারে করে খাগড়াছড়ি শহরে নিয়ে যাওয়া হবে চিকিৎসার জন্য।
রাঙামাটির সিভিল সার্জন ডা. বিপাশ খীসা জানিয়েছেন, আমরা জেনেছি দুর্গম ওই এলাকায় হঠাৎ হাম রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হাম থেকে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশুরা অসুস্থ হচ্ছে। আমরা জরুরি মেডিকেল টিম সেখানে পাঠিয়েছি। শুক্রবার বিজিবির সহযোগিতায় সেখানে হেলিকপ্টারে করে বিশেষ আরেকটি মেডিকেল টিম যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, আয়তনে দেশের সবচে বড় উপজেলা বাঘাইছড়ির সবচে দুর্গম ইউনিয়ন সাজেক। এই ইউনিয়নের সাজেক পর্যটনকেন্দ্র ছাড়া বাকি এলাকাগুলো অত্যন্ত দুর্গম। সেখানকার শিয়ালদহ এলাকাটিকে সবচে বেশি দুর্গম বলে বিবেচনা করা হয়। প্রায়শই সেখানে দুর্গমতার কারণে খাদ্যাভাব ও স্বাস্থ্যঝুঁকির ঘটনা ঘটে। ২০১৫ সালের মে মাসে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয় ওই এলাকায় সাতজনের মৃত্যু হয় এবং আক্রান্ত হন আরও ৩০ জন।
৬০৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের সাজেক ইউনিয়নে লোকসংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার। কিন্তু যোগাযোগ দুর্গমতা ও সীমান্তবর্তী অনতিক্রম্য এলাকা হওয়ায় সরকারি জরুরি চিকিৎসাসেবা সেখানে নিয়মিত পৌঁছায় না।
জেবি
মন্তব্য করুন