কঠোর অবস্থানে মানিকগঞ্জের প্রশাসন: অস্ট্রেলিয়া, ইরাক ও সৌদিফেরত ৩ জনকে জরিমানা
সরকারি নির্দেশনা মানাতে কঠোর হয়েছেন মানিকগঞ্জের প্রশাসন। এ পর্যন্ত তিনজন বিদেশফেরত ব্যক্তিকে জরিমানা করা হয়েছে। নিজ নিজ বাড়িতে পর্যবেক্ষণে থাকার কথা থাকলেও সেই নির্দেশনা মানছিলেন না বিদেশ ফেরত ব্যক্তিরা। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচার ও প্রকাশিত হওয়ায় নড়ে চরে বসেছে করোনা প্রতিরোধে গঠিত কমিটির সদস্যরা।
আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে জরিমানা করা এক অস্ট্রেলিয়া প্রবাসীকে। ঘিওর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আইরিন আক্তার এই জরিমানার আদেশ এবং অর্থ আদায় করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি ঘিওর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা। অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ওই ব্যক্তি ১৬ মার্চ রাত ২টার দিকে নিজ বাড়িতে ফেরেন। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী বিদেশফেরত ব্যক্তিকে ১৪ দিন নিজ বাড়িতে পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়। কিন্তু ওই প্রবাসী এই নির্দেশনা না মেনে বাইরে ঘোরা-ফেরা করছিলেন। খবর পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা ওই এলাকায় যান এবং ঘটনার সত্যতা পান। সরকারি নির্দেশ অমান্য করায় তাকে ১৫ হাজার জরিমানা করা হয়।
সোমবার (১৬ মার্চ) সন্ধ্যা ৭টার দিকে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় ইরাক প্রবাসী সাটুরিয়া উপজেলার দরগ্রাম ইউনিয়নের এক যুবককে।
নির্দেশনা অনুযায়ী পর্যবেক্ষণে না থেকে বাড়ির বাইরে স্বাভাবিক চলাফেরা করার কারণে তাকে জরিমানা করেন সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং ওই ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক আশরাফুল আলম। ওই যুবক করোনাভাইরাস আতংকে ইরাক থেকে ৬ মার্চ দেশে ফেরেন।
এর আগে রোববার সন্ধ্যায় একই অভিযোগে একই উপজেলার ব্রাম্মনবাড়ি গ্রামের সৌদিপ্রবাসী এক ব্যক্তিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির প্রধান এবং মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক এসএম ফেরদৌস বলেন, সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযান চলবে। ইতোমধ্যে তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা ও উপজেলা কমিটির পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে। মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। তিনি বিদেশফেরত ব্যক্তিদের সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।
গেল ২৪ ঘণ্টায় মানিকগঞ্জে আরও ৯৩ জন বিদেশ ফেরত ব্যক্তিকে তাদের নিজ নিজ বাসায় কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এ পর্যন্ত হোম কোয়ারেন্টিনে মোট প্রবাসীর সংখ্যা হলো ৩৮৯। তবে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণে থাকার পর করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ না থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে ২০ জন প্রবাসীকে।
গেল তিনদিনে কোয়ারেন্টিন থেকে ৬২ জন মুক্ত হয়ে বর্তমানে ৩২৭ জন প্রবাসী হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন বলে জানান করোনা প্রতিরোধে গঠিত জেলা কমিটির সদস্য-সচিব এবং জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ।
এসএস
মন্তব্য করুন