চুয়াডাঙ্গায় সৌদিফেরত এক নারীকে নিয়ে গুজব
চুয়াডাঙ্গায় জ্বর-কাশি আক্রান্ত এক নারীকে (৬৫) নিয়ে গুজব সৃষ্টি হয়েছে। গত মাসে ওই নারী ওমরা হজ্জ্ব পালন শেষে বাড়িতে ফিরে আসেন। এর কিছুদিন পর তিনি ভারতে যান। সেখান থেকে ফিরে আসার পর আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারণে তার জ্বর-সর্দি কাশি হলে তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা ও উপদেশ দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। ওই নারী বাড়ি ফেরার পর তার অসুস্থতা নিয়ে করোনাভাইরাস সন্দেহে এলাকায় নানা গুজব সৃষ্টি হলে গতকাল মঙ্গলবার তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে ওই নারীসহ পরিবারের সদস্যরা চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছেন। দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল চিকিৎসক ডা. মুকবুল হোসেন বলেন, ওই নারী গত মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন। পরে আবার ভারত যান। সেখান থেকে ফিরলে তার জ্বর ও সর্দিকাশি শুরু হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন তিনি। চিকিৎসা নিয়ে ওই নারী বাড়ি ফেরার পর তার অসুস্থতা নিয়ে করোনাভাইরাস সন্দেহে এলাকায় নানা গুজব ও আতঙ্কেকের সৃষ্টি হয়। পরে তাকে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
ওই নারীর পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি দেড় মাস আগে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে যান। ২৫দিন আগে তিনি দেশে ফেরেন। এক সপ্তাহ ধরে তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি ও গায়ে ব্যথার সমস্যায় ভুগলে সোমবার তাকে চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে বিশেষ যত্নে রাখা হয়। বিকেল থেকে গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, ওই বৃদ্ধা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এলাকার লোকজন স্থানীয় হাসপাতাল ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বৃদ্ধাকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিতে বলেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে একটি প্রতিনিধিদল ওই নারীকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোস্তফা জামাল জানান, করোনাভাইরাস বিষয়ে সর্বশেষ গাইডলাইন অনুযায়ী বিদেশ থেকে আসার ১৪ দিনের মধ্যে তা ধরা পড়ার কথা। অথচ এ ক্ষেত্রে তা হয়নি। যে কারণে বাড়িতে বিশেষ কোয়ারেন্টাইনে রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এলাকাবাসীর চাপে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। এছাড়া কিছু সামাজিক যোগাযোগ ও গণমাধ্যমে ওই নারীকে নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ওই নারী এখন সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার বলেন, ওই নারীকে নিয়ে এলাকার কেউ কেউ বাড়াবাড়ি করছেন। সর্বশেষ গাইডলাইন অনুযায়ী তাকে নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।
এসএস
মন্তব্য করুন