বাড়ি ফিরলেও স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না নুরুজ্জামান
নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় তিন যুগ পর বাসায় ফিরলেন নুরুজ্জামান (৬০) নামের এক ব্যক্তি।
গেলো সোমবার দুপুরে হঠাৎ করে নিরুদ্দেশ হওয়া নুরুজ্জামানের আগমন ঘটে তার বাবার বাসা দক্ষিণ আলাদিপুর গ্রামে। নুরুজ্জামান ওই গ্রামের মৃত বাঘ রাজ্জাকের ছেলে। তবে তার ফিরে আসায় পরিবারে আনন্দের বন্যা বইলেও গ্রাম্য ফতোয়ার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না তিনি।
এলাকাবাসী জানান, ১৯৮২ সালে পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে বাবার ওপর রাগ করে স্ত্রী ও সন্তানকে রেখে নিরুদ্দেশ হয়ে যান নুরুজ্জামান। এরপর তার পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে হাল ছেড়ে দেয়। এরপর নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফন বিবি গর্ভের সন্তানসহ নাবালক দুই ছেলেকে নিয়ে উপজেলার কৃষ্ণসদা গ্রামে বাবার বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। এখন পর্যন্ত তিনি সন্তানদের নিয়ে সেখানেই বসবাস করছেন।
দীর্ঘ ৩৮ বছর পর গ্রামে ফিরে আসায় নুরুজ্জামানকে নিয়ে গ্রামে বেশ হৈ চৈ পড়ে যায়। সংবাদ পেয়ে নানার বাড়ি থেকে তার ছেলেরা ছুটে আসেন। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও গ্রাম্য ফতোয়ার কারণে স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না নুরুজ্জামান।
গ্রাম্য মাতব্বররা ফতোয়া দিয়েছেন, ১২ বছর সম্পর্ক না থাকলে সেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিচ্ছেদ ঘটে যায়।
নুরুজ্জামান জানান, ১৯৮২ সালে বাবার ওপর রাগ করে তিনি বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর রংপুর শহরে জীবন-যাপন শুরু করেন। বাবার বাড়িতে ফিরবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেন তিনি। এরপর ১৯৮৫ সালে দ্বিতীয় বিয়ে করে নতুন সংসার শুরু করেন নুরুজ্জামান। সেই সংসারে তার তিনটি ছেলে রয়েছে। এখন তিনি দুটি সংসারেই করতে চান।
নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফনও স্বামীর সঙ্গে দেখা ও সংসার করতে চান।
এ বিষয়ে গোয়ালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান মুকুল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি বিষয়টি জানি না। এখন তাদের নোটিশ দিয়ে ইউনিয়ন বোর্ডে ডেকে এনে একটি সমাধান করে দেব।
বর্তমানে নুরুজ্জামান তার বড় ছেলের বাড়ি হাঁপানিয়া শিয়ালমারী গ্রামে রয়েছেন।
জেবি
মন্তব্য করুন