শাশুড়ি-স্বামীর অত্যাচারে গৃহবধূর আত্মহত্যার অভিযোগ
নাটোরের লালপুর উপজেলায় শাশুড়ি ও স্বামীর অত্যাচারে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গেলো বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কেশবপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত গৃহবধূর নাম ফাতেমা খাতুন (২২)। তিনি ওই গ্রামের জাহিদুল ইসলাম রতনের স্ত্রী এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার বলিদাঘাটি গ্রামের আব্দুল মান্নানের মেয়ে।
এলাকাবাসী জানান, গেলো বৃহস্পতিবার দুপুরে ফাতেমা ও তার স্বামী একসঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে। এরপর স্বামী জাহিদুল গোপালপুর বাজারে নিজ কর্মস্থলে যায়। এদিকে ফাতেমার শাশুড়ি ছাগল নিয়ে মাঠে যায়। বিকেলে শাশুড়ি বাড়ি ফিরে দেখে ফাতেমার নিজ কক্ষের দরজা ভেতর থেকে আটকানো। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনও সাড়া না পেয়ে জানালায় গিয়ে ডাকাডাকি করতে থাকে। এ সময় জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভেতরে ফাতেমাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে চিৎকার শুরু করে। তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন জানালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে ফাতেমাকে উদ্ধার করে। এরপর তাকে স্থানীয় ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জনৈক ব্যক্তির মুঠোফোন থেকে খবর পেয়ে মৃতের ভাইসহ আত্মীয়-স্বজন ফাতেমার স্বামীর বাড়িতে আসলে বেরিয়ে আসে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। ফাতেমার ভাই কাজল কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাংবাদিকদের জানান, প্রায় আড়াই বছর আগে বিনা যৌতুকে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয় ফাতেমার। বোনের সুখের জন্য নগদ অর্থসহ সাধ্যমতো দেবার চেষ্টা করেছে তারা। কিন্তু থেমে থাকেনি অর্থলোভী শাশুড়ির অত্যাচার। স্বামীর সংসার করার জন্য শত অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করেছে ফাতেমা।
মৃতের বড় ভাই হারেজ আলী জানান, গেলো পাঁচ মাস আগে ফাতেমার গর্ভে থাকা সন্তানকে সুপরিকল্পিতভাবে নষ্ট করে অত্যাচারী শাশুড়ি এবং মায়ের সকল অত্যাচার সমর্থনকারী ফাতেমার স্বামী রতন। এই ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যা বলেও দাবি করেন মৃত ফাতেমার পরিবার।
খবর পেয়ে লালপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এ বিষয়ে ফাতেমার ভাই কাজল বাদী হয়ে অত্যাচারী শাশুড়ি ও স্বামী রতনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করতে যান। কিন্তু লালপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা ঘটনাটির গুরুত্ব না দিয়ে কোনও অভিযোগ নেই মর্মে একটি অপমৃত্যু মামলা করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নাটোর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
জেবি/পি
মন্তব্য করুন