• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সিলেটের শুঁটকি যাচ্ছে বিদেশেও

হোসাইন আহমদ সুজাদ, সিলেট, আরটিভি অনলাইন

  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০৯:৩৯
শুঁকটি মাছ চাতাল
শুঁকটির চাতালে শুকানো মাছ

বাঙালির প্রধান খাবারগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো শুঁটকি। শুঁটকি মাছ সবাই পছন্দ করেন। শুঁটকি মাছের গন্ধের সঙ্গে স্বাদও আলাদা যা সবার পছন্দের। শুঁটকি মাছ বাঙালির অনেকের কাছে অপছন্দের হলেও, বাংলাদেশসহ প্রতিবেশী দেশ (ভারত) ইন্ডিয়ায় সিলেটের শুঁটকি মাছই তাদের পছন্দের তালিকায় অন্যতম।

শুটকি মাছ সংরক্ষণ এবং রান্না দুই সুবিধা থাকায় তাজা মাছের তুলনায় বর্তমানে শুঁটকির বিক্রি বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়া শুঁটকিতে উচ্চমাত্রার আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন ‘ডি’ ও কোলেস্টেরল রয়েছে। শুঁটকি কম-বেশি সবারই প্রিয়। বিশেষ করে সিলেট এলাকার প্রবাসীদের কাছে শুঁটকি অত্যন্ত প্রিয় খাবার। ফলে দিন দিন সিলেটে বাড়ছে শুঁটকির কদর।

বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুরের ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে শুঁটকি সরবরাহ করছেন। অগ্রহায়ণ থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত এই চার মাস শুঁটকি তৈরির ভরা মৌসুম। এই সময় বাজারে মাছের মূল্য কম থাকায় বেশি পরিমাণে শুঁটকি তৈরি সম্ভব হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বনাথ উপজেলায় বানানো মিঠা পানির মাছের এই শুঁটকি দেশের বাজারেই নয় চলে যাচ্ছে ব্রিটেন, আমেরিকা ও সৌদি আরব, ভারতসহ আরও বেশ কয়েকটি দেশে। এতে মাহতাবপুরের শুঁটকির বাজারও একটি শিল্প হয়ে উঠেছে।

সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের বিশ্বনাথ, ও জালালাবাদ এলাকার মধ্যবর্তী মাহতাবপুরের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে শুঁটকির প্রায় চল্লিশটি ডাঙ্গি রয়েছে। এরা খাঁচার ওপর মিঠা পানির মাছ শুকিয়ে এখন শুঁটকি তৈরি করছে। আর শুঁটকি ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছে দুই থেকে তিনশত নারী-পুরুষ। মাহতাবপুরের প্রায় তিন শতাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক শুঁটকির জন্য মাছ কাটার কাজ করেন। বিনিময়ে প্রতিদিন মজুরি পান ১৩০-১৫০টাকা। এসব কাটা মাছে লবণ ছিটিয়ে ৩-৪ ঘণ্টা রেখে রোদে শুকানোর জন্য প্রথমে চাঁচ বিছিয়ে মাটিতে এবং কিছু শুকানোর পর মাচায় দেওয়া হয়। প্রায় পাঁচ থেকে ছয়দিন শুকানোর পর প্রক্রিয়াজাত করে শুঁটকি তৈরি করা হয়। এখানে পুঁটি, টেংরা, বাইম, চিংড়ি, চান্দা ও কাইখ্যা এইসব প্রজাতির মাছের শুঁটকি তৈরি করা হয়। তাদের এ শুঁটকিগুলো ব্রাহ্মণবাড়িয়া বা ঢাকার কিছু লোক পাইকারি ধরে ক্রয় করে নেন। এরা আবার এগুলো ভারতে বিক্রি করেন। তাদের শুঁটকিগুলো সব জায়গায় বেশ জনপ্রিয়। তাই তারা এ মৌসুমে দুই থেকে তিন কোটি টাকার শুঁটকি পাইকারি দরে বিক্রি করে থাকেন বলে জানান উৎপাদনকারীরা।

মাহতাবপুরের একটি বড় শুঁটকির আড়তের মালিক মান্নান আরটিভি অনলাইনকে জানান, তারা প্রতি বছর ছয় মাস শুঁটকি বিক্রি করতে পারেন। তাদের শুঁটকিগুলো পাইকারদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।

শুঁটকির আড়তের নারী শ্রমিক জুলেখা বেগম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সারা দিন কাজ করে মাত্র ১৫০ টাকা মজুরিতে আমাদের সংসার চলে না। আমার গরিব মানুষ। নদীতে আমাদের ঘর-বাড়ি ভেঙে গেছে। অভাবের সংসার চালানোর জন্য অল্প টাকায় এ কাজ করি।

এ ব্যবসার ভবিষ্যৎ আছে দাবি করে ডাঙ্গারীর মালিক মাহতাবপুর গ্রামের জসিম উদ্দিন, ধলিপাড়া গ্রামের আলতাব মিয়া ও দিঘলী রামপুরের কালা মিয়া বলেন, এই মৌসুমে তারা শুঁটকির উৎপাদন করে থাকেন। এটা অল্পদিনের লাভজনক ব্যবসা। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত ছড়ারপাড়ে (মাছিমপুর) এসব শুঁটকি বিক্রি করা হয়। সেখান থেকে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে সারা দেশে ও বিদেশে পৌঁছে যায়।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শিল্পপতির সংসার ছাড়তে গরিবের মেয়ের সংবাদ সম্মেলন
সিলেটে বিদ্যুৎকেন্দ্রে আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৫ ইউনিট
সিলেটে ২ মোটরসাইকেলের সংঘর্ষ, নিহত ৩
কোম্পানীগঞ্জে রাস্তার পাশে পড়েছিল এক ব্যক্তির মরদেহ 
X
Fresh