নড়াইলবাসীর আশা অভিষেক যেন মাশরাফির মতো তারকা হয়
নড়াইল শহরের বাধাঘাট এলাকার চিত্রা পাড়ে জন্ম নেয়া অভিষেক অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্ব ক্রিকেটের একজন গর্বিত সদস্য।
তার এই সাফল্যে পরিবারসহ নড়াইলবাসীর আনন্দের সীমা নেই। সকলেই তার মাঝে মাশরাফিকে খুঁজে ফিরছেন।
ছোট থেকেই ভীষণ ডানপিটে ছিল অরণ্য (অভিষেক)। দল বেঁধে খেলাধুলা আর বাড়ির পাশে চিত্রা নদীতে সাঁতার কাটা ছিল নিত্যদিনের কাজ। তাই প্রায়ই ছোটখাটো দুর্ঘটনার মুখোমুখি হতো। এ নিয়ে পরিবারের শাসনেরও কোনও কমতি ছিল না। আর শাসন করলেই রাগ করে বাড়ি থেকে চলে যেত পাশের জেঠুর বাড়ি আর নয়তো কোনও বন্ধুর বাড়িতে। বাংলাদেশ জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলে আমার ছেলে খেলবে স্বপ্নেও ভাবিনি কখনও। খুলনা স্টেডিয়ামে যখন ট্রায়াল হয় তখনও(তারিখ মনে নেই) ভাবিনি অরণ্য ট্রায়ালে টিকে যাবে। ঈশ্বরের কৃপায় চূড়ান্ত পর্যায়ের অনুশীলনে যখন ঢাকায় যাবার সুযোগ পেয়েছে তখন মনে মনে ভাবতে শুরু করেছি ও একটা কিছু করে ফেলবে।
এ কথাগুলো বলছিলেন জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দলের সদস্য অভিষেক দাস অরণ্যের বাবা অসিত দাস।
অসিতের বাড়ি নড়াইল পৌরসভার বাধাঘাট চত্বরে। আজ মঙ্গলবার অরণ্যের বাড়িতে গেলে বাবা-মা দুজনেই ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। কুশলাদি জানতে চাইলে প্রথমেই প্রাণখুলে হাসি আর হাসি।
অসিত দাস বলেন, ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি, বাংলাদেশ যেন যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হয়। ঈশ্বর আমাদের ডাক শুনেছেন। বাংলার মুখ বিশ্বদরবারে ছেলেরা উজ্জ্বল করেছে।
অরণ্য বাড়িতে ফিরলে মানত পূরণ করতে পূজার আয়োজন করব। আমাদের পরিবার আশা করে অরণ্য যেন মাশরাফির আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নড়াইল তথা বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারে।
তিনি বলেন, রোববার শেষ অবধি দলের খেলা দেখেছি। বাড়ির পাশে বাধাঘাট চত্বরে বড় পর্দায় অনেক মানুষ বাংলাদেশের খেলা উপভোগ করেছেন। বাংলাদেশ বিজয়ী হলে শহরে বিশাল মিছিল বের হয়। আতশবাজির ফুয়ারা ছোটে। শহরের সমস্ত মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। মিছিলটি মাশরাফির বাড়ি পর্যন্ত যায়। সেখানেও মিছিলে অংশ নেওয়া মানুষ আতশবাজি পোড়ায়।
অরণ্যের মা করুণা দাসের মুখের হাসি যেন ফুরায় না। তিনি বলেন, এত আনন্দ জীবনে কোনোদিন পাইনি। আমাদের সন্তান সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের সন্তান। বাংলাদেশ জয়ী হওয়ায় আমরা গর্বিত।
অভিষেক দাস নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজে থেকে এবার এইচ,এস,সি পরীক্ষা দেবে। তাদের সন্তানের জন্য সকলের কাছে আশীর্বাদ কামনা অভিষেকের বাবা-মা।
জেবি
মন্তব্য করুন