একটু উষ্ণতার জন্য সাপ ও কচ্ছপের সন্ধি
শীতের একটু উষ্ণতা পেতে এ যেন সাপ ও কচ্ছপের সন্ধি।শীতের প্রভাব পড়েছে এসব প্রাণীদের জীবনে। কখনও শীত কখনও গরম দিশেহারা সাপ। তাই শীতের দুপুরে রোদে কিছুটা সময় উষ্ণতা পেতে পুকুরের পারে পড়ে থাকা ডাবগাছের শুকনো ডালের ওপর দুটি সাপ একসঙ্গে জড়ো হয়ে রোদ উপভোগ করে। এ সময় একটু উষ্ণতা ভাগ নিতে পাশে যেন সন্ধিতে কচ্ছপ। একে অপরের মুখোমুখি তাকিয়ে। সুন্দর এই দৃশ্যটি গতকাল মঙ্গলবার মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের পাশের পুকুরের। তবে মজার বিষয় কারোর মধ্যই নেই কোনও হিংস্রতা।
সাপকে বলা হয় শীতল রক্তের প্রাণী। পরিবেশের তাপমাত্রার সঙ্গে এদের শরীরের তাপমাত্রা ওঠানামা করে। তাই সাপেরা বেশি ঠাণ্ডা বা বেশি গরম কোনোটাই সহ্য করতে পারে না। আর কচ্ছপও বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার নিজের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা পরিবর্তন করতে পারে। সাধারণত এ ধরনের প্রাণীদের ঠাণ্ডা রক্তের প্রাণী বলে অভিহিত করা হয়।
আর ঠাণ্ডা পড়া মানেই সাপেদের শীত ঘুমের সময় চলে আসে। শীতে প্রয়োজনীয় ঠাণ্ডা না পড়াই সাপেদের শীত ঘুমের জন্য দায়ী। শীতকালে গর্তে, ফাটলে, কোটরে বা কোনও কিছুর মধ্যে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় কাটায় তারা।
সাপ এই সময় কোনও খাবারও খায় না। এর কারণ হিসেবে, সাপের খাদ্য পরিপাককারী উৎসেচকগুলো এই বিশ্রামের সময় কাজ করে না। শীতকালে এদের শরীরের মেটাবলিক রেটও কমে যায়। এরা শরীরে জমে থাকা চর্বি থেকে ন্যূনতম শক্তির যোগান পায়। তাই শীতের শেষের দিকে এরা রুগ্ন ও দুর্বল হয়ে পড়ে। খুব বেশি শীত পড়লে বা দীর্ঘস্থায়ী শীত হলে অনেক সাপ গর্তের মধ্যেই মারা যায়। আবার কখনও কখনও এরা গর্ত থেকে বেরিয়ে এসে রোদ থেকে খানিকটা তাপ নেয় বেঁচে থাকার তাগিদে।
অপরদিকে, কচ্ছপ পৃথিবীতে এখনও প্রাচীন প্রাণীদের মধ্যে অন্যতম। এক ধরনের সরীসৃপ যারা পানি এবং ডাঙা দুই জায়গাতেই বাস করে। এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি বিলুপ্তির পথে রয়েছে। কচ্ছপের অনেক প্রজাতি রয়েছে যারা পানিতে বা পানির আশেপাশে বাস করলেও এরা ডাঙায় ডিম ছাড়ে।
জেবি/পি
মন্তব্য করুন