• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মাকে হত্যা

স্টাফ রিপোর্টার, মানিকগঞ্জ

  ২৭ জানুয়ারি ২০২০, ২২:৩৩
পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মাকে হত্যা
মাহমুদা বেগম

পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিতে রাজি হওয়ায় মা মাহমুদা বেগমকে (৪৫) হত্যার পরিকল্পনা করে মেয়ে জুলেখা আক্তার জ্যোতি।

বুধবার (২২ জানুয়ারি) সকালে মানিকগঞ্জ শহরের দক্ষিণ সেওতা এলাকায় নিজ বাড়িতে শ্বাসরোধে খুন হন মাহমুদা বেগম। এই হত্যায় অংশ নেয় জ্যোতির প্রেমিকা নাইম ইসলাম এবং তার তিনজন সহযোগী।

আজ (সোমবার) বিকেলে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাকিল আহমেদের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন আটক জ্যোতি, নাইম ও নাইমের সহযোগী রাকিব।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার সাব-ইন্সপেক্টর শামীম আল মামুন জানান, মাহমুদা বেগমকে নিজ ঘরে খাটের ওপর শ্বাসরোধে হত্যার পর, জ্যোতিকে হাত, পা, মুখ বেঁধে মাকে হত্যা করে স্বর্ণালংকার লুটের নাটক সাজায় তারা।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, বুধবার সকালে হত্যাকাণ্ডের সময় বাড়িতে থাকা নিহতের একমাত্র মেয়ে জ্যোতিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই দিনই থানায় ডেকে নেন তারা। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার দেখিয়ে শুক্রবার বিকেলে তাকে মানিকগঞ্জ সদরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটেটের কাছে পাঠানো হয়। হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে অধিকতর তথ্য আদায়ের লক্ষ্যে আদালতের বিচারকের কাছে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। বিচারক চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

শুক্রবার বিকেলে নিহতের স্বামী জহিরুল ইসলাম আলিয়ার বাদী হয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানায় মেয়ে জ্যোতি আক্তার, তার কথিত প্রেমিক নাইম ইসলাম এবং তার সহযোগী রাকিব ও অন্য ২ সহযোগীর বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ দায়ের করেন।

শুক্রবার রাতে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জ্যোতি আক্তার তার মায়ের হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য দেন। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই তার কথিত প্রেমিক কেরানীগঞ্জের আরাকুল গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে নাইম ইসলাম (২৫) এবং তার সহযোগী একই গ্রামের মৃত আব্দুল বারেকের ছেলে রাকিবকে (২৫) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, জ্যোতির সঙ্গে মোবাইল ফোন-ফেসবুক-ম্যাসেঞ্জারের আলাপচারিতায় আট মাস আগে কেরানীগঞ্জের নির্মাণ শ্রমিক নাইমের সঙ্গে প্রেমের এবং দৈহিক সম্পর্ক গড়ে উঠে। তার সঙ্গে বিয়ে দিতে নারাজ হোন মা। তাই তিন মাস আগে জ্যোতি ও নাইম পরিকল্পনা করে তাকে হত্যা করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, মঙ্গলবার রাতেই নাইম ও তার ৪ সহযোগী জ্যোতির ঘরে প্রবেশ করে। রাতে কয়েক দফা চেষ্টা করেও হত্যার সুযোগ পায়নি। সকাল ৭টার দিকে জ্যোতির বাবা ফজরের নামাজ শেষে প্রাতঃভ্রমণে বের হলে তারা মাহমুদা বেগমকে হত্যা করে।

নিহতের স্বামী জহিরুল ইসলাম আলিয়ার জানান, তিনি তার স্ত্রীকে নিয়ে তার নিজের পাঁচতলা ভবনের দোতলার একটি ইউনিটে বসবাস করেন। তিনি ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত কাতারে প্রবাস জীবন কাটিয়ে দেশে ফিরে এসে শুরু করেন পোল্ট্রি ব্যবসা। তিন বছর আগে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট উচ্ছেদের সময় তার দোকান ভাঙা পড়ে।

পরে ব্যবসা বাদ দিয়ে ২০১৫ সালে তিনি জেলা শহরের সেওতা এলাকায় গড়ে তোলেন ওই পাঁচতলা ভবন। বছর তিনেক আগে মেয়ে জ্যোতি আক্তারকে বিবাহ দেন ঢাকার ধামরাই এলাকার মারুফ সরকারের সঙ্গে। কিন্তু মেয়ের নানা নৈতিক স্খলনের কারণে সেই স্বামীর সঙ্গে তিন মাস আগে সংসার ভেঙে যায়। তারপর থেকে মেয়ে তাদের সঙ্গে থাকে। একমাত্র ছেলে মাজহারুল ইসলাম তুহিন (১৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার মিতরা এলাকায় একটি আবাসিক মাদরাসায় থেকে পড়ে।

আবেগতাড়িত হয়ে তিনি বলেন, ২০১০ সালে তিনি তার স্ত্রী ও ছেলেকে নিয়ে হজ পালন করেছেন। হত্যাকাণ্ডের আগের রাতেও তার স্ত্রী তাহাজ্জদের নামাজ আদায় করেছেন। কিন্তু মেয়ের এই নৈতিক স্খলনের কারণে তিনি তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজনের কাছে হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
অভিষেককে গোপনে বিয়ে, আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন জাহ্নবী
‘ইসরায়েলি ভাস্করের পুরস্কার নিয়ে গণহত্যাকে সমর্থন করেছেন ড. ইউনূস’
গাজায় গণহত্যা চলছেই, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব মানছে না ইসরায়েল
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের শুনানি পেছাল
X
Fresh