• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

টানা ৫ দিনের শৈত্যপ্রবাহে কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি

  ২৫ জানুয়ারি ২০২০, ০৯:৩৮
টানা ৫ দিনের শৈত্যপ্রবাহে কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত
ফাইল ছবি

টানা পাঁচ দিন থেকে কুড়িগ্রামে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। এই শৈত্য প্রবাহে কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আজ শনিবার সকাল ৯টায় জেলার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা গেল কয়েক দিনের চেয়ে আজ কিছুটা বাড়লেও উত্তরের হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় শীতের তীব্রতা কমেনি উত্তরের এই জনপদে।

গতকাল শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা সারাদেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল।

এর আগে ২১ জানুয়ারি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ২২ জানুয়ারি তা কমে দাড়ায় ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ২৩ জানুয়ারি রেকর্ড করা হয় ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র জানান, কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরণের শৈত্যপ্রবাহ প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে শৈত্যপ্রবাহের কারণে কুড়িগ্রামের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নদীপাড় এবং চরাঞ্চলের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে। এছাড়াও ভোগান্তিতে রয়েছে সাধারণ মানুষ এবং শিশু ও বৃদ্ধরাও।

১৬টি নদ-নদীর এ জেলায় প্রায় ২৫ লাখ মানুষের বসবাস। ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, দুধকুমারসহ ৩১৬ দৈর্ঘ্য কিলোমিটার নদী পথে ৫২০টি চর-দ্বীপচর প্রায় ৫ লাখ মানুষের বসবাস। প্রতিবছরই শীতসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে আক্রান্ত হয় চরাঞ্চলবাসী। এবারও শীতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে এসব মানুষ।

শীতের সময় কাজ কমে যাওয়ায় কম মজুরিতে শ্রম বিক্রি করতে হয় চরাঞ্চলের শ্রমজীবীদের। কম আয়ে সংসার চালানোই দায় সেখানে শীতবস্ত্র ক্রয় যেন তাদের কাছে অধরা স্বপ্ন। তাই তীব্র এই ঠাণ্ডাতে পুরাতন কাপড়েই ভরসা তাদের। সন্ধ্যার পরপরই চরাঞ্চলে নেমে আসে নিস্তব্ধতা। শীতের কারণে কোনও রকমে সন্ধ্যায় খাবার খেয়ে ঘুমাতে যায় এসব এলাকার মানুষ। সামান্য শীতের কাপরে কোনও রকমে রাত পাড় করে ভোরে উঠেই বেড়িয়ে পড়তে হয় কাজের সন্ধানে।

পরিবারের মহিলা, শিশু এবং বৃদ্ধরা একটু উষ্ণতা পেতে রোদের অপেক্ষায় থাকে অথবা খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করে। শীতে সরকারি-বেসরকারিভাবে শীতবস্ত্র বিতরণে জনপ্রতিনিধিদের স্বজনপ্রীতি অভিযোগ রয়েছে চরবাসীদের।

জেলার নাগেশ্বরী উপজেলার চরশৌলমারী, ধনীরামপুর, কৃঞ্চপুর, বালাবাড়ি, নারায়নপুরসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলের মানুষ জানান, এবার শীতে তাদের অনেক কষ্ট করতে হচ্ছে। গেল বন্যায় ভেঙে যাওয়া বাড়িঘর ভালো করে ঠিকঠাক না করায় রাতে হিমেল বাতাস ঢুকে পড়ে। ফলে প্রতিরাতে তাদের শীতের সঙে যুদ্ধ করে কাটাতে হয়।

তরির হাট এলাকা সোবাহান মিয় জানায়, বন্যায় ভাঙা ঘর এখনো ঠিক করতে পারে নাই। প্রতি রাতে বেড়ার ফাঁক গলিয়ে ঠাণ্ডা প্রবেশ করে তাই কষ্টে পরিবার পরিজনদের নিয়ে রাত পার করতে হয়।

চর যাত্রাপুরের বাসিন্দা মজিবর রহমান, আক্কাছ আলী, বুলবুলি বেগম, মরিয়ম বেগম জানান, শীতের সময় চরের মানুষের দুর্ভোগ বেশি হয়।

নাগেশ্বরী উপজেলার কচাকটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল বলেন, শহরের তুলনায় চরাঞ্চলে শীতে মানুষের দুর্ভোগ বেশি হয়। সরকারি বা বেসরকারিভাবে যেসব শীতবস্ত্র আসে সেগুলো দিয়ে বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না।

জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, জেলায় এ পর্যন্ত ৬৩ হাজার শীতবস্ত্র, ১৫০০ শিশু পোশাক এবং দু’হাজার শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী শীতে মানুষ যাতে দুর্ভোগে না পড়ে সে মোতাবেক আমরা কাজ করছি। শীতবস্ত্র বিতরণে মনিটরিং করাসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীতবস্ত্র সমন্বয় করে বিতরণ করা হচ্ছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
শৈত্যপ্রবাহ ও তাপমাত্রা নিয়ে যা জানালো আবহাওয়া অফিস
শৈত্যপ্রবাহ নিয়ে যা জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর
সুসংবাদ দিলো আবহাওয়া অফিস
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রির ঘরে
X
Fresh