• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

খাগড়াছড়িতে পাওয়া গেলো ‘বাদুর গুহা’

খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ২০ জানুয়ারি ২০২০, ১৭:২১
তাবাক গুহা খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে নতুন পাওয়া ‘তাবাক খ’ গুহা, ছবি: আরটিভি অনলাইন

পাহাড়ের প্রতিটি পরতে লুকিয়ে আছে অবাক করা সৌন্দর্য। এই নৈসর্গিক সৌন্দর্যের মাঝে প্রায়ই সন্ধান মিলছে নতুন নতুন গুহা কিংবা ঝর্ণার। আর এসব সন্ধান পাওয়া স্থানে গড়ে উঠছে পর্যটনকেন্দ্র; যা দেশের ভ্রমণপিপাসুদের মনের খোরাক মিটিয়ে থাকে। এবার খাগড়াছড়িতে সন্ধান মিললো নতুন একটি গুহার। নাম দেয়া হয়েছে ‘তাবাক খ’ গুহা।

স্থানীয়রা বলছেন পার্বত্য এ জেলার পর্যটন আরও সমৃদ্ধ হবে নতুন সন্ধান পাওয়া এ গুহায়।

তাবাক্ষ শব্দটি স্থানীয় ত্রিপুরা ভাষা। ‘তাবাক’ এর অর্থ বাদুর এবং ‘খ’ এর অর্থ গুহা। দুটি মিলিয়ে যার অর্থ হয় বাদুর গুহা। অনেকে আবার দেবতার গুহা বলে থাকেন। খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে প্রায় ১৭ কিলোমিটার দূরে দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নে অবস্থিত নতুন সন্ধান হওয়া ‘তাবাক খ’ গুহাটি।

গুহাটি প্রথমে দেখে মনে হতে পারে প্রাগৈতিহাসিক কোনও স্থাপনা। উঁচু পাথুড়ে দুটো পাহাড়ের মাঝখানে অবস্থিত ‘তাবাক খ’ গুহাটি। আরও অবাক করা বিষয় হলো প্রায় ৩০ ফুটেরও বেশি উচ্চতার গুহাটির মাথায় রয়েছে পাথুরে ছাদ। সেখানে রয়েছে বাঁদুরের আবাসস্থল। ঘুটঘুটে অন্ধকার আঁকাবাঁকা গুহাটি দেখলে ভয়ে শরীর চমকে ওঠে।

খাগড়াছড়ির আলুটিলা গুহায় মশাল নিয়ে যেতে হলেও ‘তাবাক খ’ গুহাতে মুঠোফোনের আলো নিয়ে যাওয়া যাবে। তবে আলুটিলা গুহার ভেতর দিয়ে পানি প্রবাহিত হলেও ‘তাবাক খ’ গুহার ভেতর শুষ্ক, কোনও পানি নেই। শুধু কি গুহা! গুহাতে যাওয়ার যাত্রাপথ এবং এর আশপাশের পরিবেশ অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় মানুষের জন্য রয়েছে বাড়তি পাওনা।

খাগড়াছড়ি-দীঘিনালার সীমান্তবর্তী আটমাইল থেকে যেতে হবে এই গুহায়। মূল সড়ক থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার ইটের রাস্তা যাওয়া যাবে গাড়িতে। নল খাগড়া বনে ঘেরা আঁকা-বাঁকা, উচুঁ-নিচু এ রাস্তা। ইটের রাস্তা শেষ হতেই শুরু হবে দুই কিলোমিটারের পায়ে হাঁটা পথ।

পাহাড়ের ভেতরের পথ ধরে হাঁটতে হবে প্রায় ২০ মিনিট। এই ২০ মিনিট কখনও পাহাড় বেয়ে নামতে হবে আবার কখনও পানিপথ ধরে হাঁটতে হবে। গুহার ঠিক আগে শেষ যে পাহাড়টি বেয়ে নামতে হবে সেটি মূলত একটি ঝর্ণার পাশ দিয়ে শক্ত কোনও লতা ধরে। শুষ্ক মৌসুমে পানি না থাকলেও ভরা বর্ষা মৌসুমে দেখা যাবে তার বুনো রুপ। তখন তার গা ঘেঁষে নামা নিশ্চিত দারুণ এক অনুভূতি তৈরি হবে।

তারপর মাইরুং তৈসা ছড়া দিয়ে ৫-৭ মিনিট এগুলেই পৌছে যাবেন ‘তাবাক খ’ গুহার মুখে। গুহার সামনের অংশে কিছুটা আলো মিললেও বাকি পুরো অংশ ঘুটঘুটে অন্ধকার। ১৬০ ফিটেরও বেশি দৈর্ঘ্য এবং প্রায় সাড়ে তিন ফিট প্রশস্ত গুহাটি। শেষ অংশের মাঝখানে পাথর না থাকলে আরও যাওয়া যেত। গুহাটি দেখে মনে হতে পারে এটি মানুষের তৈরি।

সাংবাদিক জাকির হোসেন ও পলাশ বড়ুয়া আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এই গুহাটি সম্পর্কে শুধু স্থানীয়রা জানতো। বাইরের কেউ জানতো না। ফলে তেমন কেউ আসতো না। গুহায় প্রবেশের ঠিক একটু সামনে প্রাকৃতিকভাবে পানি জমাট থাকে। চাইলে সেখানে গোসলও করা যায়।

সাংবাদিক জাহাঙ্গীর আলম রাজু ও অপু দত্ত আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এতোদিন পর্যটকরা খাগড়াছড়িতে আলুটিলা গুহা সম্পর্কে জানতো। এখন ‘তাবাক খ’ গুহা বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে। এ গুহা আলুটিলা গুহার চেয়ে বেশি অ্যাডভেঞ্চার ও রোমাঞ্চকর। তবে যাতায়াতের সুবিধার্থে মূল সড়ক থেকে আট কিলোমিটার ইটের রাস্তার ভাঙা অংশ সংস্কারের কথা বলেন তারা।

স্থানীয় রথীচন্দ্র কার্বারী পাড়ার প্রধান (কার্বারী) গুণধর ত্রিপুরা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, সবাই জানতো খাগড়াছড়িতে শুধু আলুটিলা গুহা নামে একটি গুহা আছে। তবে এখন ‘তাবাক খ’ গুহাটি নতুন স্পট হিসেবে যুক্ত হলো।

গুহায় ঘুরতে আসা পর্যটকদের ভালো লাগবে বলেও তিনি জানান।

জেবি/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
পাহাড়ে রাতে র‌্যাব-পুলিশের অভিযান, ১০ অপহৃত উদ্ধার
সুন্দরী প্রতিযোগিতায় প্রথম সৌদি নারী রুমি
শ্রীলঙ্কার রান পাহাড়ে উঠতে বিশ্বরেকর্ড গড়তে হবে টাইগারদের
সুন্দরগঞ্জে নিখোঁজ ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
X
Fresh