• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গান নেই পানের হাট বসেছে ‘ভাসানী হলে’

কামাল হোসেন, টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

  ১৮ জানুয়ারি ২০২০, ১৫:২৮
হল ভাসানী শহর
ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভাসানী হল। দীর্ঘ চার বছর ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে এটি। সংস্কৃতি চর্চার প্রধান কেন্দ্রবিন্দু এ ভাসানী হলে বর্তমানে ভূতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে। মাদকসেবীদের আড্ডাখানা ও পান ব্যবসায়ীদের প্রধান হাঁট হিসেবেও ইতিমধ্যে স্থানীয়দের কাছে স্বীকৃতি লাভ করেছে এটি।

ফলে ব্যাহত হচ্ছে সংস্কৃতিচর্চা ও বিনোদন। অথচ সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের কোনও উদ্যোগ নেই প্রশাসনের।

হলটি দ্রুত ভেঙে ফেলে নতুন করে আধুনিক হল নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন জেলার সংস্কৃতিকর্মীরা।

জানা যায়, ১৯৭৬ সালের ১৬ আগস্ট ‘টাঙ্গাইল টাউন হল’ নামে এই হলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতির শিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আবুল ফজল।

এরপর ১৯৭৮ সালের দুই এপ্রিল তৎকালীন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার খানে আলম খান আনুষ্ঠানিকভাবে এই হলের উদ্বোধন করেন।

পরবর্তীতে এ হলটি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নামে নামকরণ করা হয়। এরপর থেকেই এটি ‘ভাসানী হল’ নামে পরিচিত হয়ে আসছে।

সংস্কারের অভাবে হলটি ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়ায় প্রায় চার বছর আগে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে বন্ধ হয়ে যায় এই ঐতিহাসিক বিনোদনের একমাত্র মিলনায়তনটি। একসময় যে জায়গাটি থাকতো সংস্কৃতিকর্মীদের পদচারণায় মুখর, তা এখন পরিণত হয়েছে ‘ভুতুড়ে বাড়িতে’। সেখানে এখন জমে উঠেছে পান বিক্রির হাট। সেইসঙ্গে মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে হলটি।

সংস্কৃতিকর্মীরা জানান, এক হাজার আসনবিশিষ্ট এই মিলনায়তনটিতেই জেলার সব সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক অনুষ্ঠান পরিচালিত হতো। শুধু তাই নয়, এই মিলনায়তনটি ঘিরেই নাট্যচর্চাসহ সংস্কৃতিকর্মীদের নিয়মিত আড্ডা বসত। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে এর চত্বরে হতো বইমেলা। এখানে ঈদের সময় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন নাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কনসার্টের আয়োজন করতো।

এছাড়াও এই ভাসানী হলে জেলার অনেক রাজনৈতিক সভা-সমাবেশও অনুষ্ঠিত হতো। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মূলকেন্দ্র ছিল এই ভাসানী হল। এই ভাসানী হল চালু না থাকায় নাট্য ও সংস্কৃতিচর্চা ব্যাহত হচ্ছে। এটি পরিত্যক্ত থাকায় সংস্কৃতিচর্চাও ঝিমিয়ে পড়েছে। যতদ্রুত সম্ভব এটি পুনঃর্নিমাণের দাবি জানান সংস্কৃতি কর্মীরা।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হলটির বারান্দায় শুয়ে আছে কিছু ছিন্নমূল মানুষ। কক্ষগুলো সব তালাবদ্ধ। দেয়ালের সমস্ত প্রলেপ উঠে গেছে। ধুলাবালি ও ময়লার স্তর পড়েছে মেঝেতে। সামনেই পান-বিক্রির হাঁট বসেছে।

জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক প্রবীণ সঙ্গীতশিল্পী এলেন মল্লিক আরটিভি অনলাইনকে বলেন, টাঙ্গাইলের সাংস্কৃতিক অঙ্গণের মূলকেন্দ্র এই ভাসানী হল। এটি পরিত্যক্ত থাকায় সংস্কৃতিচর্চাও ঝিমিয়ে পড়েছে।

জেলার সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম উজ্জ্বল আরটিভি অনলাইনকে বলেন, টাঙ্গাইলের বহু অনুষ্ঠান হয়েছে এই ভাসানী হলে। এখন হলটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এ হলটি খুব দ্রুতই ব্যবহারের উপযোগী করা প্রয়োজন।

সহকারী অধ্যাপক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মীর ফাহমিদা জেরিন আরটিভি অনলাইনকে বলেন, টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভাসানী হল। সকল শ্রেণির দর্শকের ভেন্যু ছিল এটি। এখানকার মতো দর্শক অন্য কোথাও হতো না। হলটি বন্ধ থাকায় বিনোদন ঝিমিয়ে পড়েছে। তাই আধুনিক একটি হল নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ভাসানী হলটি নির্মাণের বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় খুব দ্রুতই এখানে একটি আধুনিক হল নির্মাণ করবে।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
দিনমজুর ও পথচারীদের মাঝে ছাতা বিতরণ
গরু রেখে পালাল চোর, গাড়িতে আগুন দিলো জনতা
সুষ্ঠু ভোট করতে প্রশাসনের উচ্চপদস্থদের সঙ্গে বসবে ইসি
সুনামগঞ্জ শহরে ট্রাক্টর ও সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১
X
Fresh