• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযুদ্ধের সংগঠকের নাম

বরগুনা প্রতিনিধি, আরটিভি অনলাইন

  ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯, ২৩:০২
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতির নাম
আলহাজ মজিবুল হক

মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি, পাথরঘাটা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত আলহাজ মজিবুল হকের নাম উঠেছে রাজাকারের তালিকায়। তার নাম রয়েছে তালিকার এক নম্বরে। তার সঙ্গে গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা মো. আমির হামজা, মো. খলিলুর রহমান ওরফে মানিক, আওয়ামী লীগ নেতা মো. আমজাদ হোসেনসহ ৮ জনেরও নাম রয়েছে।

আলহাজ মজিবুল হকের নাম রাজাকারের তালিকায় এক নম্বরে আসায় গোটা পাথরঘাটায় জনমনে ক্ষোভ বিরাজ করছে। যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় একজন সংগঠক এবং জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের হয়ে নিরলসভাবে কাজ করেছেন তার নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় কোনভাবেই মেনে নিতে পারছে না পাথরঘাটার মানুষ। এ ঘটনায় আগামীকাল বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগ।

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. জাবির হোসেন জানিয়েছেন, মুজিবুল হকের (ডাক নাম-নয়া ভাই) নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় তারা মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। তার নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় আওয়ামীলীগের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

পাথরঘাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কালমেঘা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং মুজিবুল হকের জামাতা আকন মো. সহিদ জানিয়েছেন, ৭৫ এর পরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের দুঃসময়েও দলের হাল ধরেছিলেন মুজিবুল হক। তার নাম রাজাকারের তালিকায় আসা দুঃখজনক। যারা তার নাম তালিকায় যুক্ত করেছেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তদন্ত করে প্রতিকার দাবী করেছেন।

পাথরঘাটা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সাংগঠনিক কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, মজিবুল হক মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি এবং তৎকালীন থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি কখনো মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে ছিলেন না। আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি থাকার কারণে মুক্তিযুদ্ধের সময় তাকে তৎকালীন বরগুনা মহকুমার শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ মাস্টার ধরে এনে বেশ কিছুদিন আটকিয়ে রেখেছিলেন। এমনকি পাকিস্তানি বাহিনীর পটুয়াখালী কমান্ডার মেজর নাদের পারভেজের কাছেও তাকে নেয়া হয়েছিলো।

বরগুনা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার আলহাজ আবদুর রশিদ মিয়া জানিয়েছেন, আলহাজ মজিবুল হক ১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (পাথরঘাটা-বামনা) সংসদীয় আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তিনি পাথরঘাটা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রয়াত মজিবুল হকের স্ত্রী নুরজাহান বেগম জানিয়েছেন, তার স্বামী মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করেছেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে জিয়াউর রহমান তাকে ২০ লাখ টাকার লোভ দেখিয়ে বিএনপিতে যোগদানের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে যাননি।

নুরজাহান বেগম আরও বলেন, ১৯৭১ এ মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনীরা অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের মেরে ফেলার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, কিন্তু তখন তার স্বামী মজিবুল হক নিজেই একাধিকবার পাক হানাদারবাহিনীর কাছে বুক পেতে দিয়েছিলেন। তারপরেও মুক্তিকামী মানুষদের হত্যা থেকে বিরত রেখেছিলেন।

মজিবুল হক ২০০৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর মারা যান। তার স্ত্রীও অসুস্থ। নুরজাহান বেগম সঠিক তথ্য জেনে তার স্বামীকে কলঙ্কমুক্ত করার দাবী জানিয়েছেন।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আওয়ামী লীগ বারবার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে : ফখরুল
সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন ইহসানুল করিম
শহীদ বুদ্ধিজীবীর স্বীকৃতি পেলেন মধুদা
আরও ১১৮ জন শহীদ বুদ্ধিজীবীর তালিকা প্রকাশ
X
Fresh