• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’

সামনে ফাইনাল পরীক্ষা, তাই খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস

মুফতী সালাহউদ্দিন, স্টাফ রিপোর্টার

  ১২ নভেম্বর ২০১৯, ১৯:৩৪
সামনে ফাইনাল পরীক্ষা, তাই খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস
পটুয়াখালীতে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা

ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে পটুয়াখালীতে বিধ্বস্ত হয়েছে ৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৪১টি মাদরাসা, ১৮টি স্কুল ও ২টি কলেজ রয়েছে। এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের টিনসেটের অধিকাংশ ভবনই বিধ্বস্ত হওয়ায় শ্রেণিকক্ষের অভাবে শিক্ষার্থীরা এখন খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, চলতি মাসের ২৭ তারিখ ফাইনাল পরীক্ষা থাকায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে বাধ্য হচ্ছে তারা।

জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র আঘাতে প্রাথমিক তথ্যাদিতে এ জেলায় ৬১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিধ্বস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ৪১টি মাদরাসা, ১৮টি স্কুল ও ২টি কলেজ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত মেরামতের জন্য দ্রুত তালিকা এবং সম্ভাব্য ব্যায়ের একটা হিসাব প্রস্তুত করা হচ্ছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ইউনিয়নে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনসেট ভবনটি দুমড়ে-মুচড়ে পরেছে। ১২০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৪ ফুট প্রস্থ তথা ২৮৮০ বর্গফুটের টিনসেটের এ ভবনটিতে ৪টি শ্রেণিকক্ষের তিনটিই একেবারে মাটির সঙ্গে মিশে রয়েছে। এতে শ্রেণিকক্ষের সমস্যা দেখা দেয়ার খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা তাদের বিধ্বস্ত স্কুল ভবনটি দ্রুত মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানায়।

ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল নেসা মীম বললো, ‘আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা ২৭ তারিখ। এসময় আমাদের স্কুল ভবনটি এভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়ায় আমাদের লেখাপড়ায় চরম বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। বাইরে খোলা আকাশের নিচে রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে ক্লাস করতে হচ্ছে। এতে আমাদের ভীষণ কষ্ট হচ্ছে। তাই বিধ্বস্ত ভবনটিতে একটি পাকা ভবন নির্মাণ করে দিলে আমাদের আর কষ্ট করতে হবে না’।

---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: ঘূর্ণিঝড়ের কারণে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা পেছানো হয়েছে
---------------------------------------------------------------

বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র মো. রাহাত বললো, ‘আমাদের স্কুলের টিনসেটের এ ভবনটি এই নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ে তিন বার বিধ্বস্ত হয়েছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের দাবি এই ভবনটি পাকা করে দেয়া হোক’।

বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের সভাপতি মো. আইয়ুব আলী মাতব্বর ও প্রধান শিক্ষক মো. আ. লতিফ জানান, এ ইউনিয়নের ৬টি গ্রামের মাধ্যমিক স্তরের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে এই শারিকখালী বিদ্যালয়টি। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে ৩৪৫ জন ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে। এর মধ্যে ছাত্রী রয়েছে ১৭৫ জন এবং ছাত্র রয়েছে ১৭০ জন। লেখাপড়ার দিক থেকেও এ বিদ্যালয়টি অনেক এগিয়ে রয়েছে। ২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাস করেছে। কিন্তু বুলবুলের আঘাতে টিনসেটের ভবনটি দুমড়ে-মুচড়ে পড়ায় ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, এ মাসের ২৭ তারিখ স্কুল ফাইনাল পরীক্ষা এবং এসএসসি পরীক্ষাও ঘনিয়ে এসেছে। এ অবস্থায় ছাত্রছাত্রীরা রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজেও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। তাই এ স্কুলে দ্রুত একটি পাকা ভবন নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করছি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়-ক্ষতির পূর্ণ তালিকা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে সদর উপজেলায় বিধ্বস্ত শারিকখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়টিকে পাঁচ বান টিন এবং নগদ ১৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পূর্ণ তালিকা পেলে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবরে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh