ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ : পাঁচ জেলায় ৬ জনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র তাণ্ডবে খুলনা, পটুয়াখালী, বাগেরহাট, বরগুনা ও মাদারীপুরে নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার মধ্যরাত থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
খুলনা
খুলনার উপকূলীয় দাকোপ উপজেলায় প্রমিলা মণ্ডল (৫২) নামে এক নারী ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে দক্ষিণ দাকোপে এ ঘটনা ঘটে। নিহত প্রমিলা সুভাস মণ্ডলের স্ত্রী।
এছাড়া খুলনার দিঘলিয়া উপজেলায় সেনহাটি গ্রামে আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক গাছচাপা পড়ে নিহত হয়েছেন।
পটুয়াখালী
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের উত্তর রামপুরা গ্রামে হামেদ ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মাধবখালী ইউনিয়নের উত্তর রামপুর গ্রামে ঘর চাপা পড়ে হামেদ ফকির (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ মারা গেছেন। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে একটি গাছ ভেঙে ঘরের উপর পরলে ঘরের চাপায় ঘটনাস্থলেই হামেদ ফকির মারা যান।
পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী আরটিভি অনলাইনকে জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাবে জেলায় একজনের মৃত্যু ছাড়া আর তেমন কোন ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
বরগুনা
ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এর কারণে বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের ডিএন কলেজে আশ্রয় নিতে আসা হালিমা খাতুন নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) রাতে তার মৃত্যু হয়। বরগুনা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান রোববার সকালে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, হালিমা খাতুন অসুস্থতার কারণে মারা গেছেন।
এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহনেওয়াজ জানান, হালিমা খাতুন আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন।
বাগেরহাট
ঘূর্ণিঝড় ’বুলবুল’র আঘাতে ঘরের উপর গাছ পড়ে সামিয়া খাতুন (১৫) নামের এক কিশোরী মৃত্যু হয়েছে। রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে এ ঘটনা ঘটে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নিহত সামিয়ার বাড়ি রামপাল উপজেলার ভরসাপুর গ্রামে।
মাদারীপুর
মাদারীপুরে ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে ঘরের টিনের চালা পড়ে সালেহা বেগম (৫০) নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে ঘটকচর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল অহাব।
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৩০ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, খুলনা ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ আরও সামান্য উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে আজ (১০ নভেম্বর) সকাল ৬টায় বাগেরহাট, বরিশাল ও পটুয়াখালী অঞ্চলে গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমশ দুর্বল হতে পারে। গভীর নিম্নচাপের কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে।
গভীর নিম্নচাপটির প্রভাবে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, কুমিল্লা, ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিসহ ঘণ্টায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে, উপকূলের ১৪টি জেলায় প্রস্তুত ৫৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে থাকা প্রায় ২০ লাখ মানুষকে নিয়ে আসা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্রে।
সশস্ত্র বাহিনীর তত্ত্বাবধানে প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক তৎপর রয়েছে বুলবুল মোকাবেলায়। নৌবাহিনীর পাঁচটি জাহাজ এবং বিমানবাহিনীর সব এয়ারক্রাফ্ট দুর্যোগ পরবর্তী যেকোনো সেবার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এসএস
মন্তব্য করুন