কিস্তির টাকা দিতে না পারায় মেয়েদের উদ্দেশে অশ্লীল কথা, মায়ের আত্মহত্যা
দুই মেয়ের ভরণ-পোষণ ও সরসার চালাতে প্রায় সময়ই বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হতো গৃহবধূ নাজমা আক্তারকে (৪০)। সেসব শোধও করে দিতেন। কিন্তু সম্প্রতি অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না যাওয়ায় সব শেষ কিস্তির টাকা দিতে পারছিলেন না। আর এনজিও কর্মীরা কিস্তি তুলতে এসে টাকা না পেয়ে নাজমা ও তার মেয়েদের নিয়ে ‘অসভ্য’ কথা বলেন বলে অভিযোগ। এতে প্রচণ্ড অপমানবোধে আত্মহত্যা করে গৃহবধূ নাজমা।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর গ্রামের। নিহত নাজমা ওই গ্রামের পূর্বপাড়া মোল্লা বাড়ির মাছ বিক্রেতা সফিকুল ইসলামের স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, সফিকুল ইসলামের স্ত্রী নাজমা আক্তার বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নেন। তার মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক, আশা ব্যাংক, দিশা ব্যাংক, ব্রাক ব্যাংক ও ইসলামী ব্যাংক অন্যতম। নাজমা বেগমের চার মেয়ের মধ্যে দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন, দুই মেয়ে বর্তমানে স্কুলে লেখাপড়া করছে। সম্প্রতি নাজমা আক্তার এনজিওর ঋণ সঠিক সময়ে পরিশোধ করতে পারছিলেন না। শুক্রবার আশা ব্যাংক ও গ্রামীণ ব্যাংকের কিস্তির তারিখ ছিলো। নাজমা বেগম কিস্তির টাকা দিতে না পারায় আশা ব্যাংক ও গ্রামীণ ব্যাংকের লোকজন তার বাড়িতে এসে গালমন্দ করতে থাকেন। একপর্যায়ে তার মেয়েদের সম্পর্কে খারাপ মন্তব্য করেন।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: অস্ত্র ঠেকিয়ে ১৫ বছরের কিশোরীকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ
---------------------------------------------------------------
নাজমা আক্তারের পাশের ঘরে বসবাসকারী রানু বেগম জানান, শুক্রবার কিস্তির টাকার জন্য দুজন লোক আসে। নাজমা বেগম টাকা দিতে না পারায় গালমন্দ করেন তারা। একপর্যায়ে তারা বলেন, টাকা না দিতে পারলে মরে যান, মরে গেলে টাকা মাফ হয়ে যাবে।
এনজিও কর্মীরা চলে যাওয়ার পর নাজমা আক্তার ঘরের দরজা বন্ধ করে কান্না-কাটি করতে থাকেন। পরে নাজমা আক্তার ঘরের মধ্যে থাকা ছারপোকা মারার ট্যাবলেট খেয়ে ফেলেন। পরিবারের লোকজন বিষয়টি বুজতে পেরে তাকে গৌরীপুর মুক্তি মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে দাউদকান্দি থানা পুলিশ বিকেলে নাজমা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান।
দাউদাকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম জানান, অপমৃত্যুর খবরে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
জেবি
মন্তব্য করুন