ওসির হুমকিতে ভিক্ষুকের জমি দখল
রংপুরে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম ও ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেনের বিরুদ্ধে এক ভিক্ষুকের ২ একর ৪৮ শতক পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীদের সঙ্গে ওসি ও চেয়ারম্যানের মুঠোফোনে কথপোকথন ও জমিতে সাইনবোর্ড টাঙানো দেখে তার প্রমাণ পাওয়া যায়।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, অবৈধভাবে এই জমি থেকে বালু উত্তোলনসহ ফসল আবাদ করছেন তারা। এদিকে বাবার বিশাল পরিমাণ জমি থাকা সত্ত্বেও ভিক্ষাবৃত্তি করে মানবেতর জীবনযাপন করছেন রংপুর সদরের বাসিন্দা নূরজাহান বেগম। তবে জমিটি দখলের সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই বলে জানান ওই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। আর বায়না সূত্রে জমির মালিক হয়েছেন বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন।
রংপুর সদর উপজেলার মমিনপুর গ্রামের বাসিন্দা নূরজাহান বেগমের দিন কাটে ভিক্ষাবৃত্তি করেই। বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও দু-বেলা দু-মুঠো ভাতের জন্য গ্রামে গ্রামে গিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে হাত পাততে হয় তাকে। অথচ তার বাবা নুরুল ইসলাম মৃত্যুর সময় রেখে গেছেন ২ একর ৪৮ শতক জমি।
নূরজাহান বেগম বলেন, অভাবে পড়ে পাশের গ্রামের কদিরন নেছার বাবার কাছে দলিলপত্র জমা রেখে জমি বর্গা দেন তারা। এই সুযোগে বাবাসহ কদিরন নেছা ও তার সন্তানরা ১৯৪০ আর ১৯৬২ সালের রেকর্ড উপেক্ষা করে ১৯৯২ সালে নতুন রেকর্ড করে জমির মালিকানা দাবি করে। এটি জানাজানি হলে, দুই পরিবারের মধ্যে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। দ্বন্দ্বের বিষয়টি সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন জানতে পেরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সহযোগিতায় কদিরন নেছার কাছে জমিটি কেনার প্রস্তাব দেয়। কদিরন নেছা বিক্রির জন্য রাজি হলে শুধু ৯২ সালের রেকর্ডের কাগজ দেখেই বায়না করে চেয়ারম্যান। নিজের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে জমিটি দখলে নিয়ে চেয়ারম্যান সেখানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ গাছ লাগানো শুরু করলে জমির অংশীদাররা প্রতিবাদ করলে ইকবাল চেয়ারম্যানের থেকে জমিটি রংপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাজেদুল ইসলাম কিনবেন বলে জানান তিনি। এসময় জমি দখলে যারা প্রতিবাদ করে তাদের হুমকি দেয় ওসি ও চেয়ারম্যান।
নূরজাহানের ভাতিজা করিম বলেন, জমিটি নিয়ে কথা বলতে চাইলে জমির আশা ছেড়ে দিতে বলেন এবং বাড়াবাড়ি করলে বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন ওসি সাজেদুল ইসলাম ও ইকবাল চেয়ারম্যান। প্রমাণ স্বরূপ কথোপকথনের কল রেকর্ডও করে রাখেন তারা।
---------------------------------------------------------------
আরো পড়ুন: এমপি বুবলি ঢাকায়, বিএ পরীক্ষা দিয়েছেন ভাড়াটে শিক্ষার্থীরা
---------------------------------------------------------------
তবে এবিষয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে, তিনি কথা না বলে চা-নাস্তা খাওয়ার প্রস্তাব দেন। অন্যদিকে মুঠোফোনে ইকবাল হোসেন বলেন, বায়না সূত্রে জমির মালিক এখন তিনি।
এ বিষয়ে আরটিভির ক্যামেরা জমিটির ফুটেজ এবং বক্তব্য নিতে গেলে গালি-গালাজ করে ক্যামেরা ভেঙে ফেলার হুমকি দেয় কথিত জমির মালিক কদিরন নেছার ছেলে তাজুল ও ফারুখ।
সুষ্ঠু তদন্তের জন্য রংপুর ডিআইজি অফিস, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া জমিটি নিয়ে বর্তমানে ৪টি মামলা চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় জমি কিভাবে কেনা বেচা হয় এ প্রশ্ন এখন গ্রামের সবার।
পি
মন্তব্য করুন