আজ শেষ হচ্ছে সাধুসঙ্গ
কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়িতে চলা তিনদিনের লালন উৎসব শেষ হচ্ছে আজ।
রাত আটটার দিকে মূল মঞ্চের আলোচনাসভায় প্রধান অতিথি খুলনা বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া এই লালন উৎসবের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি ঘোষণা করবেন।
তাই ‘আর কি হবে মানব জনম বসবো সাধু মেলে’ এমন আকুতি থাকলেও সাধুসঙ্গ শেষে লালনের অহিংস মানবতার বাণী ছড়িয়ে দেবার আশায় তৃষ্ণার্ত মন নিয়ে ভবের হাট ছাড়ছেন ভক্ত-অনুসারীরা। পূর্ণতা সাধনের জন্য আবারও পরের উৎসবে যোগ দেবেন তারা। শেষদিন হওয়ায় সেখানে চলা বাউল মেলা এখনও জমজমাট।
১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট লালন ফকিরের মৃত্যুর পর প্রতিবছর এই লালন উৎসব চলে আসছে। এবার ‘বাড়ির পাশে আরশীনগর, সেথা এক পড়শী বসত করে’ এই স্লোগানে ছেঁউড়িয়ার এই আখড়াবাড়িতে পহেলা কার্তিক বুধবার থেকে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী লালন উৎসব। যা আজ শেষ হচ্ছে। লালনের রীতি অনুযায়ী এই অনুষ্ঠানে এসে নিজেদের খাঁটি করে গড়ে তুলতে অনুসারী ভক্তরা সাধুসঙ্গ করেন। গতকাল দুপুরেই পূণ্য সেবার মধ্য দিয়ে সাধুসঙ্গ শেষ হয়েছে। এর আগে অধিবাস, বাল্য, রাখাল সেবা পালন করেছে তারা। মূলত সাধুসঙ্গ শেষে গতকাল বিকেল ও আজ সকাল থেকে অনুসারীরা আখড়াবাড়ি ছেড়ে বাড়ি যেতে শুরু করেন। গতকালও যেখানটাতে দেশ-বিদেশ থেকে আসা ভক্তদের ভিড় ছিল সেখানটা এখন প্রায় ফাঁকা হয়ে গেছে। যাবার সময় তারা লালন মাজারে ধর্মগুরুর প্রতি বিশেষ ভঙিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। পরে গুরু কার্যের মাধ্যমে গুরু শিষ্যের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন। লালন অনুসারীরা বলছেন, এখান থেকে অর্জিত লালন দর্শন লোকালয়ে ছড়িয়ে দেবেন তারা। তবে বেঁচে থাকলে ভাব তথ্যের আশা পূরণ করতে বা পূর্ণতা সাধনের জন্য তারা আবারও পরের উৎসবে যোগ দেবেন।