• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড গড়েছে হবিগঞ্জ আদালত

খান আলামিন, স্টাফ রিপোর্টার

  ০৪ অক্টোবর ২০১৯, ১০:৫০
মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড গড়েছে হবিগঞ্জ আদালত
আদালত ভবন

মামলা নিষ্পত্তিতে রেকর্ড গড়েছে হবিগঞ্জ জেলার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গত ১৫ মাসে রেকর্ড পরিমাণ ১৩ হাজার ১২৪টি মামলা নিষ্পত্তি করেছেন ওই জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটরা। ফলে দীর্ঘদিনের মামলা জট অনেকটাই কমে এসেছে। দুর্ভোগ লাগব হয়েছে বিচারপ্রার্থীদের।

হবিগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তানিয়া কামাল হবিগঞ্জের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে যোগদান করেন। যোগ দিয়েই মামলা নিষ্পত্তিতে জোর দেন তিনি। তার যোগ দেয়ার আগে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিলো ১৯ হাজার ৮৭৭টি। চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত ওই আদালতে নতুন মামলা যুক্ত হয়েছে ১১ হাজার ৮৭৭টি। তানিয়া কামালের যোগ দেয়ার পরবর্তী ১৫ মাসের মধ্যে সব জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিলে নিষ্পত্তি করেন ১৩ হাজার ১২৪টি মামলা, যা ওই সময় দায়েরের তুলনায় ১ হাজার ৩৭৭টি বেশি। নিষ্পত্তিকৃত মামলার মধ্যে ১০ বছরের অধিক পুরনো মামলা ছিলো ৯৬১টি। এছাড়া ৫ বছরের অধিক পুরনো মামলার সংখ্যা ১ হাজার ২৫২টি। বর্তমানে ওই আদালতে বিচারাধীন মামলা রয়েছে ১৮ হাজার ৫০০টি।

আদালত সূত্র জানায়, পূর্বে মামলা নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিলো স্বাক্ষী হাজির না হওয়া এবং স্বাক্ষ্যগ্রহণে বিলম্ব। বর্তমানে স্বাক্ষী হাজিরের বিষয়ে যথাযথভাবে নোটিশ করায় উপস্থিতির হার অনেক বেড়ে গেছে। ১৫ মাসের মধ্যে সবগুলো বিচারিক আদালত রেকর্ড সংখ্যক ১২ হাজার ৩৯ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ করেছে।

মামলার জব্দকৃত অপ্রয়োজনীয় আলামত ধ্বংসের ক্ষেত্রেও উদ্যোগী ভূমিকা রেখেছেন তানিয়া কামাল। বিচারকদের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে ধ্বংস করা হয় ৪ হাজার ৯২৫ কেজি গাঁজা, ৯ হাজার ২২০ লিটার চোলাই মদ, ২৬৯ বোতল ফেন্সিডিল ও ৩৬৫ বোতল বিদেশি মদ। বিক্রয়যোগ্য আলামত নিলামে বিক্রি করে আয় হয় ১২ লাখ ৯১ হাজার ৪৩৯ টাকা। এসময় নিষ্পত্তিকৃত মামলার নথি ধ্বংস করা হয়েছে ১ হাজার ১শ’টি। গত মাসের ১৭ তারিখ ধ্বংস করা হয়েছে আরও ১ হাজার ৮২৩টি নথি। আদালতের জুডিশিয়াল মুন্সিখানার দায়িত্বশীলরা জানান, আরও ৭ হাজার নথি ধ্বংসের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে হবিগঞ্জের সিনিয়র আইনজীবী ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি আবুল খায়ের বলেন, আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকলে মানুষকে যে ভোগান্তি থেকে রেহাই দেয়া সম্ভব সেই নজির স্থাপন করেছেন তানিয়া কামাল। সাধুবাদ জানিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী ও সুশাসনের জন্য নাগরিক - সুজনের হাবিগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক ত্রিলোক কান্তি চৌধুরী বিজনও। তিনি বলেন, তানিয়া কামালের উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। হবিগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সিনিয়র আইনজীবী নুরুজ্জামান বলেন, অল্প সময়ে এত মামলা নিষ্পত্তি করায় অনেকের ধারণা হতে পারে, এখানে হয়তো যথাযথ বিচার প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই মামলা কমানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু সেই ধারণা সঠিক নয়। আন্তরিকভাবে ন্যায় বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমেই এখানে মামলা কমানো হয়েছে।

আদালত সূত্র জানায়, বর্তমানে হবিগঞ্জে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৯টি বিচারকের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ৮জন। চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে বিচারের বাইরেও প্রশাসনিক নানা কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। একজন বিচারক আছেন আজমিরীগঞ্জ চৌকি আদালতে। বিচার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, আরও কয়েকজন বিচারক নিয়োগ দেয়া হলে হবিগঞ্জের মামলা জট পুরোপুরি নিরসন হতো। জনগণও আরও দ্রুত বিচার লাভ করতো।

এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিদেশি মদ ও বিয়ার নিয়ে রোহিঙ্গাসহ আটক ৩
X
Fresh