• ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
logo

৯০ লাখ টাকা ব্যয় করেও রক্ষা করা গেল না স্কুলের ২টি ভবন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি

  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৩
৯০ লাখ টাকা ব্যয় করেও রক্ষা করা গেল না স্কুলের ২টি ভবন
৯০ লাখ টাকা ব্যয় করেও রক্ষা করা গেল না স্কুলের ২টি ভবন

পদ্মায় অস্বাভাবিক হারে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় গেল ২৪ ঘণ্টায় রাজবাড়ী সদরের মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক ও চরধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের ২টি ভবন, মসজিদসহ শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড গেল ২ মাসে ৯০ লাখ টাকা ব্যয় করে ১৮ লাখ বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নদীতে ডাম্পিং করেও ওই স্কুলভবন ২টি রক্ষা করতে পারেনি। এ স্কুলের বাকি ভবনটিও এখন শতভাগ ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ফেলে এখনও ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চালাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটিতে শিশু ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হতো।

আজ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) স্কুলটির দুটি ভবনের একাংশের দেয়াল ধসে গেছে। পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ ভবনটির অবশিষ্ট অংশ ভেঙে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেন।

এর দুই দিন আগে বিদ্যালয়ের পাশের একটি মসজিদসহ শতাধিক ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে যায়। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে একটি স্কুল ভবন, একটি মসজিদসহ দুই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ভয়াবহ ভাঙন অব্যাহত রয়েছে।

পদ্মার পানি বৃদ্ধিতে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধের গোদার বাজার পয়েন্টে প্রায় ৬০ মিটার ধসে গেছে। সে জায়গাও পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড স্কুলটি রক্ষায় ২২ সেপ্টেম্বর থেকে বালুর বস্তা ফেলার কাজ শুরু করেছেন। তবে নদীর গতিপথ ও তীব্র স্রোতে ঘূর্ণয় তৈরি হওয়ায় এ ধস দেখা দিয়েছে বলে দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের।

জানা গেছে, গত কয়েকদিনে পদ্মা নদীর পানি বৃদ্ধির সঙ্গে তীব্র স্রোত দেখা দেয়ায় সদর উপজেলার মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোদার বাজার নদীর তীর রক্ষা বাঁধের সংস্কার কাজ ও অন্তারমোড় এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। পানি উন্নয়ন বোর্ড মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোদার বাজার এলাকায় বালুর বস্তা ফেলে ভাঙনরোধে কাজ করছে।

এর আগে আগস্ট মাসে এই তিনটি উপজেলায় একটি মাদরাসা, পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্রিজ-কালভার্ট, ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়।

রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে আরা করিমি গতকাল মহাদেবপুর স্কুল নদীতে চলে যাবার দৃশ্য দেখেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে জেলার চরাঞ্চলের আটটি স্কুল। এর আগে গত দুই বছরে এ জেলার পদ্মা পারের আরও ৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, চলতি বছরে প্রথম দফা আগস্টে জেলার বেড়িবাঁধের সাড়ে ১১ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেয়। মিজানপুর, দৌলতদিয়া, দেগ্রাম ও বরাট এই চারটি ইউনিয়নে ব্যাপক নদীভাঙন দেখা দেয়। সে দফায় একটি মাদরাসা, মসজিদ, পাঁচ শতাধিক ঘরবাড়ি, ব্রিজ-কালভার্ট, ফসলি জমি পদ্মায় বিলীন হয়। আবারো দ্বিতীয় দফা ভাঙনে গতকাল শুক্রবার সকালে মিজানপুর ইউনিয়নের মহাদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বিদ্যালয়ের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। একইসঙ্গে পদ্মা পারের আরও ৬/৭টি স্কুল ভবন ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।

জেলা প্রশাসক দিলসাদ বেগম বলেন, নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রচণ্ড স্রোত রয়েছে। ভাঙনের গতিও ভয়াবহ। নদীতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh