পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি, নড়িয়ায় ভাঙন শুরু
শরীয়তপুরের নদী রক্ষা বাঁধে হঠাৎই ভাঙন দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাতে নড়িয়া উত্তর কেদারপুরে ২০০ মিটারের মতো এলাকা জুড়ে ধ্বসে পড়েছে। এতে ১টি মসজিদ, বেশকিছু বসত-বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
ভাঙন কবলিত এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। রাতেই আতঙ্কিত হয়ে অন্তত ৪০টি পরিবার তাদের ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার মো. গোলাম মাওলা বলেন, পদ্মার নদীর পানি প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। জোয়ারের সময় চলছে। প্রচুর স্রোত থাকায় নড়িয়া রক্ষা বাঁধের উত্তর কেদারপুর এলাকায় ২শ’ আট মিটার অংশ ধ্বসে পড়েছে।
উত্তর কেদারপুর এলাকার নার্গিস বেগম বলেন, অনেক টাকা খরচ করে আমরা তিনতলা বিল্ডিং করি। গত বছর পদ্মা নদীতে সেই বিল্ডিং ধসে পরে। এখন যেখানে থাকছি তাও বৃহস্পতিবার রাতে ধসে পরেছে। এখন কোথায় যাব?
কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফেজ সানাউল্লাহ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষা বাঁধ ধসে পড়েছে। এতে একটি মসজিদ, পাকা বাড়ি, ফসলি জমিসহ গাছপালা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো থেমে থেমে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
নড়িয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়ন্তি রুপা রায় বলেন, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের লোকজনদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়ার কাজ শুরু করেছি। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন ডাম্পিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী প্রকাশ কৃঞ্চ সরকার জানান, আমরা নিয়মিত প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করি। কিন্তু কোথাও কোনও ফাটল দেখিনি। হঠাৎ উত্তর কেদারপুর নড়িয়া রক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনা স্থলে পৌঁছেছি। জরুরি ডাম্পিং শুরু করা যায় কিনা- সে চেষ্টা করা হচ্ছে। এখনো থেমে থেমে ভাঙন চলছে।
এদিকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। এ সময় তিনি ক্ষতিগ্রস্ত ৪০ পরিবারের মাঝে ১০ হাজার করে টাকা ও ১০০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
উল্লেখ্য, গত বছর নড়িয়ার আট কিলোমিটার জুরে ব্যাপক ভাঙন ছিল। ভাঙনে ওই এলাকার ৫ হাজার ৮১টি পরিবার গৃহহীন হয়। নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অসংখ্য স্থাপনা বিলিন হয়ে যায়। ভাঙন ঠেকাতে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এক হাজার ৯৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্পর অনুমোদন করে। পানি উন্নয়ন বোর্ড নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান খুলনা শিপইয়ার্ড লিমিটেডকে ওই কাজের কার্যদেশ প্রদান করেন। যার মধ্যে ৫৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে নড়িয়ার সুরেশ্বর হতে জাজিরার কায়ূম খার বাজার পর্যন্ত আট দশমিক নয় কিলোমিটার অংশে নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু হয়। বাকি টাকা দিয়ে নদীর চরখনন করা হবে। গত বছর ১২ ডিসেম্বর ওই প্রকল্পের নদীর তীর রক্ষার কাজ শুরু করা হয়।
এসএস
মন্তব্য করুন