• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

লালমনিরহাটে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

  ১৩ জুলাই ২০১৯, ১৩:০৮
প্লাবিত, বন্যা, লালমনিরহাট

অবিরাম বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা-ধরলাসহ সব নদীর পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাটে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে।

শনিবার সকাল ছয়টা থেকে তিস্তা ব্যারেজ দোয়ানী পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

শুক্রবার গভীর রাতে পানির স্রোতে হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী তালেব মোড় এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে যায়। ফলে হাতীবান্ধা উপজেলা শহরে বন্যার পানি প্রবেশ করে। বন্যায় চরাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

ভারতের গজল ডোবা ব্যারেজে তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ওই ব্যারেজের গেট খুলে দিয়েছে ভারত। এতে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ বেড়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন ডালিয়া ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পাঁচ উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলের মানুষকে সাবধানতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, উজানের পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে গত কয়েকদিনের অবিরাম বর্ষণ। নৌকা বা ভেলা ছাড়া চরাঞ্চলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ভারত থেকে ধেয়ে আসছে পাহাড়ি ঢল। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকার পানিবন্দি মানুষজন পরিবার-পরিজন এবং গৃহপালিত পশু নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব মানুষের রাত কাটছে নির্ঘুম। এছাড়াও খাদ্যাভাব, বিশুদ্ধ পানি এবং পোকা-মাকড়ের ভয়সহ নানা সঙ্কটে রয়েছেন তারা। বন্যাদুর্গত এলাকার ফসলি জমি, রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে নানা পানিবাহিত রোগ। কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজতলাসহ অনেক ফসলি জমি তিস্তার পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বন্যায় ভেসে গেছে শত শত পুকুরের মাছ। অনেকেই ঘর-বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন।

ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন। বেশি সমস্যায় পড়েছেন শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধীরা। তিস্তা ব্যারেজের সব কয়টি গেট খুলে দিয়ে পানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এতে নতুন নতুন গ্রামসহ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা, চরদহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার-পশ্চিম কাশিরাম, চর বৈইরাতী, নোহালী, শৈলমারী, ভোটমারী, হাজিরহাট, আমিনগঞ্জ, কাঞ্চনশ্বর, রুদ্ধেশ্বর, আদিতমারী উপজেলার চণ্ডিমারী, দক্ষিণ বালাপাড়া, আরাজি শালপাড়া, চরগোর্দ্ধন ও সদর উপজেলার কালমাটি, খুনিয়াগাছা, রাজপুর, তিস্তা, তাজপুর, গোকুণ্ডা, মোগলহাট, বনগ্রামসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম। পানিবন্দি রয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। পানিপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার তীরবর্তী এলাকার ব্রিজ কালভার্ট ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ত্রাণ তৎপরতা শুরু করলেও বন্যার্তরা জানিয়েছেন তা প্রয়াজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলী হায়দার আরটিভি অনলাইনকে জানান, জেলার পাঁচটি উপজেলার বন্যাকবলিতদের ত্রাণ দিতে জেলা প্রশাসন থেকে ১১০ মেট্রিক টন জিআর চাল ও আড়াই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যার বিতরণও শুরু হয়েছে। শুকনো খাবারের প্যাকেট পর্যাপ্ত না থাকায় দেওয়া যাচ্ছে না।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) দোয়ানী ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, শনিবার সকাল ছয়টায় বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে তিস্তার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। ভারতের গজলডোবা ব্যারেজে পানিপ্রবাহ বিপদসীমা অতিক্রম করায় ক্রমেই বেড়েছে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তাপ কমাতে দৈনিক ৪ লাখ লিটার পানি ছিটাচ্ছে ডিএনসিসি
মহিষকে পানি খাওয়াতে যাওয়ার পথে কিশোরের মৃত্যু 
ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদ্মশ্রী নিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা  
সরকারি প্রতিষ্ঠানে একাধিক পদে চাকরি, আবেদন করবেন যেভাবে
X
Fresh