তিন ধর্মের শেষ আশ্রয় মৌলভীবাজারের পাত্রখোলা চা বাগানে (ভিডিও)
বর্তমান বিশ্বে জাতিগত ও ধর্মীয় বিভেদে যেখানে এক শ্রেণির মানুষ বিভোর, সেখানে মৌলভীবাজারের পাত্রখোলা চা বাগানে একইসঙ্গে তিন ধর্মের কবর, শ্বশান ও সমাধি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটি হয়ে আসছে ১৮৭৫ সালে চা বাগানটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে।
অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের এক বিরল দৃষ্টান্ত প্রতিস্থাপিত হয়েছে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের এই পাত্রখোলা চা বাগানে। যেখানে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রেখে একই সমাধি ভাগাভাগি করে নিচ্ছে হিন্দু, মুসলমান ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীরা। বংশ পরম্পরায় চলে আসছে ধর্মীয় সম্প্রীতির এ প্রথা। অন্তিম এ যাত্রাস্থলগুলো রক্ষণাবেক্ষণে সরকারি সহায়তার দাবি জানান তারা।
এই চা বাগানটির প্রায় পাঁচ একর জমিতে প্রথমে মুসলিমদের জন্য কবরস্থান, এরপর খ্রিস্টানদের সমাধি এবং সব শেষে রয়েছে সনাতন ধর্মালম্বীদের শ্বশান।
সম্প্রীতির এই বন্ধন নিয়ে সন্তুষ্ট স্থানীয়সহ এসব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা। এ প্রসঙ্গে পাত্রখোলা জামে মসজিদের ইমাম মো. আব্দুল আজিজ আরটিভিকে বলেন, ইসলাম সবাইকে সমর্থন করে। জঙ্গিবাদ, হামলা ইত্যাদি অশুভ কোনও কিছুকে ইসলাম সমর্থন করে না।
পাত্রখোলা সার্বজনীন মন্দিরের পুরোহিত রাজেস প্রসাদ শর্মা বলেন, অনেক সময় দেখা যায় তিন ধর্মের মানুষ একই সময়ে মারা গেলে আমরা শেষকৃত্য করছি। এতে কারও কাজে বাধা সৃষ্টি হয় না।
পাত্রখোলা ব্যাপিস্ট চার্চের ধর্মযাজক যোসেফ বিশ্বাস বলেন, আমাদের মধ্যে কখনও বিবাদ হয় না। আমরা আমাদের কার্যক্রম এভাবে যদি চালিয়ে যাই একসময় অন্যরা আমাদের থেকে শিক্ষা নেবেন।
পাত্রখোলা চা-বাগানের প্রায় ২০ হাজার মানুষ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সবার সুখে-দুঃখে পাশে থাকেন বলে জানান স্থানীয়রা।
এ সমাধিস্থলতে বাউন্ডারি দিয়ে এবং পাশের রাস্তার মাটি ভরাট করে দেশের অনুকরণীয় এ জায়গাটিকে সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছেন পাত্রখোলার বাসিন্দারা।
জিএ/সি
মন্তব্য করুন