• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

সিরাজগঞ্জে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেলো সাত স্কুলছাত্রী

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

  ০৮ জুন ২০১৯, ২০:৩০

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় একই দিনে সাত স্কুলছাত্রীকে বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা করেছেন সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আনিসুর রহমান। শুক্রবার দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এ বাল্যবিয়েগুলো বন্ধ করা হয়।

প্রথমে দুপুর সাড়ে তিনটায় সিরাজগঞ্জ সদরের ছোনগাছা ইউনিয়নের পোটল ছোনগাছা গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী শারমিন সুলতানা (১৪), বিকেল পাঁচটায় টায় রতনকান্দি ইউনিয়নের ফুল বয়ড়া গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী মোছা. মহুয়া খাতুন (১৪), সন্ধ্যা ছয়টায় রতনকান্দি ইউনিয়নের রুপের বেড় গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী সুবর্ণা খাতুম মীম (১৪), সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বহুলী ইউনিয়নের কদমপাল গ্রামের দশম শ্রেণির ছাত্রী তামান্না খাতুন মিশু (১৫), রাত নয়টায় শিয়ালকোল ইউনিয়নের ধুকুরিয়া দক্ষিণপাড়ায় সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ফারজানা খাতুন (১২), রাত ১০টায় সয়দাবাদ ইউনিয়নের কড্ডা কৃষ্ণপুর ভূইয়াপাড়া গ্রামে মোছা. হোসনেয়ারা খাতুন (১৭) এবং রাত ১১ টায় রতনকান্দি ইউনিয়নের কুড়িপাড়া গ্রামের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মিম খাতুনের (১১) বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সিরাজগঞ্জ সদরের ছোনগাছা ইউনিয়নের পোটল ছোনগাছা গ্রামে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়িতে কনে পোটল ছোনগাছা গ্রামের মো. আ. জলিল খানের মেয়ে শারমিন সুলতানার (১৪) সঙ্গে বর কামারখন্দ উপজেলার চালা গ্রামের আছাব উদ্দিনের ছেলে রিপন হোসেনের (২৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে কাজী পালিয়ে যায়। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে বর রিপন হোসেনকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

এরপর বিকাল পাঁচটায় সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের ফুলবয়ড়া এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়িতে কনে ফুলবয়ড়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের মেয়ে মহুয়া খাতুনের (১৪) সঙ্গে বর শ্যামপুর গ্রামের আব্দুল গণির ছেলে রায়হান আলীর (২৭) বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে বর রায়হান আলীকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর সন্ধ্যা ছয়টায় সিরাজগঞ্জ সদরের রতনকান্দি ইউনিয়নের রুপেরবেড় গ্রামে কনের বাড়িতে উপস্থিত হন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়িতে কনে রুপেরবেড় গ্রামের গোলাম রব্বানীর মেয়ে সুবর্ণা খাতুন মীমের (১৪) সঙ্গে বর কাজীপুর উপজেলার বাঐখোলা গ্রামের মৃত শামসুল হকের ছেলে আলমগীর হোসেনের (১৪) বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বর ও কাজী পালিয়ে যায়। কনে স্থানীয় উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক।

এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে কনের বাবা গোলাম রব্বানী ও বর আলমগীর প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন। এররপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বহুলী ইউনিয়নের কদমপাল এলাকায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনের বাড়িতে কনে কদমপাল গ্রামের মফিজ উদ্দিনের মেয়ে তামান্না খাতুনের (১৫) সঙ্গে বর পৌর এলাকার সয়াধানগড়ার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে জাহিদুল ইসলামের (২২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী। এরপর ভ্রাম্যমাণ আদালত বাল্যবিবাহ বন্ধ করে কনের বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এরপর রাত নয়টায় শিয়ালকোল ইউনিয়নের ধুকুরিয়া দক্ষিণপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তখন কনে ধুকুরিয়া দক্ষিণপাড়া গ্রামের ফেরদৌস শেখের মেয়ে ফারজানা খাতুনের (১৩) সঙ্গে কামারখন্দ উপজেলার মধ্যভদ্রঘাট গ্রামের ছুরুতজামানের ছেলে শামছুল আলমের (২২) বিয়ের আয়োজন চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে বরপক্ষ পালিয়ে যায়।

কনে স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। কনে অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করা হয় এবং কনের বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। পরে রাত ১০ টায় সয়দাবাদ ইউনিয়নের কড্ডা কৃষ্ণপুর ভূইয়াপাড়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালিত হয়। তখন কনের বাড়িতে কনে কড্ডা কৃষ্ণপুর ভূইয়াপাড়া গ্রামের মৃত নায়েব আলী শেখের কন্যা হোসনেয়ারা খাতুনের (১৭) সঙ্গে বর একই গ্রামের মৃত মোস্তফার ছেলে হাসান আলীর (১৬) বিয়ের আয়োজন চলছিল। বর ও কনে উভয়ই অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকায় বাল্যবিবাহ বন্ধ করে দিয়ে বরের ভাই ফিরোজ আহমেদ ও কনের ভাই ফুলার হোসেন প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং এরপর রাত ১১ টায় রতনকান্দি ইউনিয়নের কড়িপাড়া গ্রামে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালান। তখন কনের বাড়িতে কনে কুড়িপাড়া গ্রামের বাবলু মণ্ডলের কন্যা মিম খাতুনের (১১) সঙ্গে বর মহিষামূড়া গ্রামের বিশা মিয়ার ছেলে আনিছুর রহমানের (২৫) বিয়ের আয়োজন চলছিল। কনে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী। প্রত্যেক কনের বাবা ও বরের বাবার কাছ থেকে কনে ও বর প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিবাহ দিবেন না বলে মুচলেকা নেয়া হয়। বাল্যবিবাহগুলো বন্ধে সহযোগিতা করেন পৌর ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম, আনসার ব্যাটালিয়ন পি.সি নুরুল ইসলাম ও আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যবৃন্দ।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
স্কুলছাত্রীকে তিন দিন আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন
স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি কারাগারে
স্কুলছাত্রীকে জোর করে চুমু দিয়ে মাদরাসাছাত্র গ্রেপ্তার
X
Fresh