আবারও বোরকা পরে স্কুলছাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যার চেষ্টা
রাজবাড়ী সদর উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে (১৬) বোরকা পড়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ফেনীর মাদরাসাছাত্রী নুসরাতকে বোরকা পড়ে গায়ে কেরোসিন ঢেলে হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই এমন ঘটনা ঘটলো।
এ ঘটনায় শনিবার সকালে রাজবাড়ী সদর থানায় স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে শিল্পী বেগম নামের এক নারীসহ অজ্ঞাত চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। দগ্ধ কিশোরী খানখানাপুর তমিজউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার পাচুরিয়া ইউনিয়নের খোলাবাড়িয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্কুলছাত্রীর মা আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঈদেরদিন (বুধবার) স্থানীয় প্রতিবেশী শিল্পী বেগম আমার মেয়ের কাছে অন্য ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক ও আপত্তিকর ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। গেল বৃহস্পতিবার দুপুরে আমার দুই মেয়ে জাম খাচ্ছিল। আমি ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ ছোট মেয়ের চিৎকারে ঘুম থেকে উঠে পড়ি।’
‘বড় মেয়ের কথা জিজ্ঞাসা করতেই বোরখা পড়া দুজন লোক তাকে তুলে নেওয়ার কথা জানায়। তখন আমিও চিৎকার করতে থাকি। আমার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অনেক খোঁজাখুঁজির পর ঘরের পিছনের পাটক্ষেত থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।’
স্কুল ছাত্রীর বড় ভাই আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করি। কিছুক্ষণ পর রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার পুলিশ পাঠিয়ে থানায় ডেকে নিয়ে বিস্তারিত জেনে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন।
ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী বলেন, পাশের গ্রামের রাজু নামে একটি ছেলে আমাকে পছন্দ করতো। এ পছন্দের কথা স্থানীয় বাসিন্দা শিল্পী বেগম জানতো আর এটাকে কেন্দ্র করেই সে আমার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি বিষয়টি পরিবারকে জানালে তার পরের দিনে সে আক্রোশে ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে গায়ের জামায় আগুন ধরিয়ে দেয়।
পাশের বাড়ির বাসিন্দা সাথী সরকার জানান, চিৎকার চেঁচামেচিতে আমরাও এগিয়ে গিয়ে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করি। তার মাথায় আঘাতের চিহ্নসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। গায়ের জামা-কাপড় ছেড়া ছিল।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার আসমা সিদ্দিকা মিলি জানান, এ ঘটনায় রাজবাড়ী সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্পর্শকাতর এ বিষয়টি নিয়ে পুলিশের দুটি টিম মাঠে কাজ করছে এবং আসামিদের ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
জেবি/পি
মন্তব্য করুন