• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

টাকা দিয়েও মিলেনি বিদ্যুৎ, ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) প্রতিনিধি

  ০৮ মে ২০১৯, ০৯:২১

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার পাঁচ নম্বর আব্দুলপুর ইউনিয়নের নান্দেড়াই গ্রামে ঠিকাদারকে ঘুষ দেওয়ার পরেও গেল তিন বছরে মিলেনি বিদ্যুতের আলো।

এতে ক্ষুব্ধ ওই গ্রামের ১৭৫টি পরিবারের নারী-পুরুষ মঙ্গলবার দুপুরের দিকে ঠিকাদার আজিজের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেছে।

এসব পরিবারের অভিযোগ, তিন বছর আগে এখানকার প্রতিটি পরিবার দফায় দফায় ঠিকাদারকে টাকা দিলেও মিটার আসেনি। প্রচণ্ড তাপদাহে দুর্ভোগে পড়েছে নান্দেড়াই গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটছে স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যুতের আবেদনকারীরা জানায়, ২০১৬ সালে ১৫৬টি মিটারের জন্য ১৭৫টি বাড়ি আবেদন করে। প্রথমে ঠিকাদারকে ২০০ করে টাকা দেয় প্রতিটি পরিবার। এক বছর পর ঠিকাদার বিদ্যুতের খুঁটি না দিলে আবারও তারা ঠিকাদারকে ৭০০ করে টাকা দেয়। এরপরেও বিদ্যুতের খুঁটি না আসলে ভুক্তভোগীরা তৎকালীন দিনাজপুর-৪ আসনের সংসদ সদস্য (চিরিরবন্দর-খানসামা) ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেন। তিনি তাৎক্ষণিক ঠিকাদারকে বলে ১০টি বিদ্যুতের খুঁটি ওই এলাকায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন।

এরপর ঠিকাদার পুনরায় প্রতিজনের কাছে ৬০০ করে টাকা দাবি করেন। ঠিকাদার সে সময় বলেন, টাকা না দিলে বিদ্যুৎ আসবে না এবং এখানে এমপি-মন্ত্রীও কিছু করতে পারবে না। পরে বিদ্যুতের আশায় আবেদনকারীরা সবাই মিলে দফায় দফায় এক লাখ টাকা দেয় ঠিকাদার আজিজকে। গেল সোমবার এলাকায় ঠিকাদারের লোকজন কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি নিয়ে আসলে ভুক্তভোগীরা খুঁটির গাড়ি আটক করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে হস্তান্তর করে আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। পরে মঙ্গলবার নান্দেড়াই গ্রামের ১৭৫টি পরিবারের নারী ও পুরুষ ঠিকাদার আজিজের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিল করেন।

ঠিকাদার আজিজকে ১৫০০ টাকা দিয়েছেন নান্দেড়াই গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৬০)। তিনি বলেন, ২০১৬ সালে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য গ্রামের ১৫৬ জন আবেদন করি। কিন্তু গত তিন বছর ধরে বিদ্যুৎ আসবে আসবে করছে কিন্তু এখনও বিদ্যুতের খুঁটিও আসেনি। অথচ ঠিকাদার বিদ্যুৎ দেওয়ার নাম করে অনেক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।

একই গ্রামের আসাদুল ইসলাম (২৮) অভিযোগ করে বলেন, হামরা সবায় মিলি এক লাখ টাকা দিছি বিদ্যুতের জন্য। কিন্তু তিন বছর ধরি খালি শুনিছি কারেন্ট আসিবে। এতদিন পরও হামরা কারেন্টের দেখা পাইনো না। এই গরমত হামার কি যে অবস্থা এইটা কাহো বুঝিবে না।

শ্রবণ প্রতিবন্ধী সমো বেগম (৫০) বলেন, আমার স্বামী প্রতিবন্ধী। আমিও একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধী। আমি আমার স্বামীর চিকিৎসা না করিয়ে, নিজে না খেয়ে থেকে বিদ্যুতের জন্য টাকা দিয়েছি। কিন্তু গত তিন বছরেও আমরা বিদ্যুৎ পাইনি।

সুফফা রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র তাসমুল মুসা বলেন, গত তিন বছরে আপ্রাণ চেষ্টা করেও আমরা বিদ্যুৎ পাইনি। এতে আমাদের পড়ালেখার দারুণ ক্ষতি হচ্ছে।

এ বিষয়ে ঠিকাদার আজিজ ও তার ম্যানেজার মামুনের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

তবে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী বলেন, আমার কাছে নান্দেড়াই গ্রামের অনেক লোক অভিযোগ করেছেন। আমি সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি বিদ্যুৎ অফিসের জেলা এক্সেঞ্জকে বলেছি। সেইসঙ্গে চিরিরবন্দরের কোথায় কোথায় বিদ্যুতের কাজ চলছে সব তথ্য চেয়েছি।

টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি যারা টাকা দেয় ঠিকাদার তাদের কাজ আগে করে। আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে লড অনুযায়ী পর্যায়ক্রমে প্রতিটি কাজই সুষ্ঠুভাবে করার ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার (২৫ এপ্রিল)
প্রসূতির পেটে গজ রেখে সেলাইয়ের অভিযোগ, তদন্তে কমিটি
লোডশেডিং নিয়ে যা জানালেন বিদ্যুৎসচিব
গুচ্ছের হাবিপ্রবি কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবেন ১২ হাজার ৩৪১ জন 
X
Fresh