দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনের ফলাফল
দ্বিতীয় ধাপে দেশের ১৬ জেলার ১১৬ উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভোট গণনা শেষে বিভিন্ন উপজেলা থেকে প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী নির্বাচিতরা হলেন-
ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে সদর উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী অরুনাংশু দত্ত টিটো (নৌকা মার্কা) ১ লাখ ২৬ হাজার ১২৭ ভোট, পীরগঞ্জ উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী আখতারুল ইসলাম (নৌকা মার্কা) ৫৮ হাজার ৭২ ভোট, হরিপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিয়াউল হাসান মুকুল (নৌকা মার্কা) ৩৫ হাজার ১৬ ভোট, বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী আসলাম জুয়েল (মোটর সাইকেল) ৩৬ হাজার ১৯৬ ভোট এবং রানীশংকৈল উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহরিয়ার আজম মুন্না (মোটর সাইকেল) ৫২ হাজার ৯১৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
গাইবান্ধা
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় একে এম মোকছেদ চৌধুরী বিদ্যুৎ ৫৬ হাজার ৯৪৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোঃ মমতাজ উদ্দীন পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৮০ ভোট।
সাদুল্লাপুর উপজেলায় আওয়ামী লীগের শাহরিয়ার কবির বিপ্লব ৩২ হাজার ৭৭৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম স্বতন্ত্র আবু সাদাত শাহ মো. ফজলুল হক পেয়েছেন ৩০ হাজার ৫৬০ ভোট।
সাঘাটা উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবীর ৪৫ হাজার ৯৭১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম আওয়ামী লীগের এস এম সামশীল আরেফিন পেয়েছেন ৪০ হাজার ৭০০ ভোট।
খাগড়াছড়ি
খাগড়াছড়িতে আওয়ামী লীগ ৬টি এবং স্বতন্ত্র ১টি উপজেলার চেয়ারম্যান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছে। জেলার পানছড়ি উপজেলায় ৩টি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত করা হয়েছে।
জেলায় নির্বাচিতরা হলেন- মাটিরাঙ্গায় রফিকুল ইসলাম (আ.লীগ), রামগড়ে বিশ্ব প্রদীপ ত্রিপুরা (আ.লীগ), লক্ষীছড়িতে বাবুল চৌধুরী (আ.লীগ), মহালছড়িতে বিমল কান্তি চাকমা (স্বতন্ত্র-জনসংহতি সমিতি-এমএন লারমা সমর্থিত), দীঘিনালায় মো. কাসেম (আ.লীগ) বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
এছাড়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতরা হলেন- খাগড়াছড়ি সদরের শানে আলম (আ.লীগ) ও মানিকছড়িতে জয়নাল আবেদীন (আ.লীগ)।
পাবনা
পাবনার ৯ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে আওয়ামী লীগের ৪ জন এবং স্বতন্ত্র থেকে সমান সংখ্যক ৪ প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলা : ঈশ্বরদী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নুরুজ্জামান বিশ্বাস (নৌকা প্রতীকে) ৪১ হাজার ৯০৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মকলেছুর রহমান মিন্টু স্বতন্ত্র(আনারস প্রতীকে) পেয়েছেন ১৯ হাজার ২৩৭ ভোট।
আটঘরিয়া উপজেলা: এ উপজেলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক উপ-সম্পাদক তানভীর ইসলাম (মোটর সাইকেল প্রতীকে) ২৭ হাজার ১৫৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ইশারত আলী স্বতন্ত্র (আনারস প্রতীকে) পেয়েছেন ১৬ হাজার ২৪৬ ভোট।
চাটমোহর উপজেলা: এ উপজেলায় পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল হামিদ মাস্টার স্বতন্ত্র (ঘোড়া প্রতীকে) ৪২ হাজার ৮০৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো (নৌকা প্রতীকে) পেয়েছেন ৩৮ হাজার ১১০ ভোট।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা: এ উপজেলায় পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের মো. বাকিবিল্লাহ (নৌকা প্রতীকে) ৩৫ হাজার ৩৪৯ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তফিজুর রহমান মন্টু (লাঙ্গল প্রতীকে) পেয়েছেন ২ হাজার ৩৪৯ ভোট।
ফরিদপুর উপজেলা: এ উপজেলায় গোলাম হোসেন গোলাপ স্বতন্ত্র (আনারস মার্কা) প্রতীকে পেয়েছেন ২৫ হাজার ৭৮০ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী খলিলুর রহমান আওয়ামী লীগ প্রার্থী (নৌকা প্রতীকে) পেয়েছেন ১৪ হাজার ০৫৯ ভোট ।
বেড়া উপজেলা: এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের আব্দুল কাদের (নৌকা প্রতীকে) ৩১ হাজার ২০৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী আফজাল হোসেন (আনারস প্রতীকে) পেয়েছেন ১৪ হাজার ২৪০ ভোট।
সাঁথিয়া উপজেলা: এ উপজেলায় আওয়ামী লীগের আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ দেলোয়ার (নৌকা প্রতীকে) ৪৭ হাজার ৮৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াতের আবু তালেব প্রামানিক স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঘোড়া প্রতীকে) পেয়েছেন ১০ হাজার ৫৭৩ ভোট।
এর আগে পাবনা সদর উপজেলায় মোশারোফ হোসেন ও সুজানগর উপজেলায় শাহীনুজ্জামান শাহীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
নওগাঁ
নওগাঁর ১০টি উপজেলার ছয়টিতে আওয়ামী লীগ এবং চারটিতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা জয়ী হয়েছেন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় আগেই নওগাঁ সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। ফলে নওগাঁর ১১টি উপজেলার সাতটিতে আওয়ামী লীগ ও চারটিতে বিদ্রোহী প্রার্থী বিজয়ী হন।
নিয়ামতপুর উপজেলায় বিজয়ী হয়েছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আহমেদ নৌকা প্রতীক নিয়ে। পোরশা উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহ্ মঞ্জুর মোরশেদ চৌধুরী বিজয়ী হয়েছেন (আনারস)। সাপাহারে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান হোসেন (আনারস)। পত্নীতলায় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গাফফার (নৌকা) বিজয়ী হয়েছেন।
ধামইরহাটে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আজাহার আলী (নৌকা)। মহাদেবপুরে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব (নৌকা) বিজয়ী হয়েছেন। মান্দায় বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দীন (নৌকা)।
বদলগাছীতে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ সামসুল আলম খান (ঘোড়া) বিজয়ী হয়েছেন। আত্রাইয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবাদুর রহমান প্রামাণিক (নৌকা) বিজয়ী হয়েছেন। রাণীনগরে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আনোয়ার হোসেন হেলাল (মোটরসাইকেল)।
বান্দরবান
বান্দরবানে ৭ টি উপজেলার মধ্যে ৬টিতেই আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
বান্দরবান সদর থেকে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এ কে এম জাহাঙ্গীর নৌকা প্রতীকে ১৫ হাজার ৩৫৪ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল কুদ্দুছ পেয়েছেন ৯ হাজার ২৯৬ ভোট।
রোয়াংছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগ প্রার্থী নৌকা প্রতীকে চহাই মং মারমা বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন ৭ হাজার ৯২৬ ভোটে। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জনসংহতি সমিতি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যবামং পেয়েছেন ৪ হাজার ৬৬৩ ভোট।
রুমা উপজেলাতেও বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী উহ্লাচিং মারমা। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ৫৬০ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জনসংহতি সমিতি থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী অংথোয়াইচিং মারমা আনারস প্রতীকে পেয়েছেন ৪ হাজার ৯৭৫ ভোট।
এদিকে থানচিতে আওয়ামীলীগ প্রার্থী থোয়াইহ্লামং মারমা নৌকা প্রতীকে ৫ হাজার ৮৬১ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী ক্যহ্লাচিং মারমা হেলিকপ্টার প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৪ ভোট।
লামায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোস্তফা জামাল নৌকা প্রতীকে ৪৭ হাজার ২ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. আলমগীর পদ্মফুল প্রতীকে ৩৪০ ভোট পেয়েছেন।
নাইক্ষ্যংছড়িতেও নৌকা প্রতীতে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শফিউল্লাহ ১২ হাজার ১৩০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকতম স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তাহের মোটরসাইকেল প্রতীকে পেয়েছেন ৮ হাজার ৬২১ ভোট।
আরও আসছে...
আর/এসএস
মন্তব্য করুন
বিয়ে করতে এসে পুলিশ হেফাজতে দুই কিশোরী
নাটোরের একডালা মডেল হাইস্কুলের এক ছাত্রীর সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পরিচয় হয় সিলেটের দশম শ্রেণির এক মাদ্রাসা ছাত্রীর। এরপর দুই ছাত্রীর পরিচয় প্রেমে পরিণত হয়। সাত মাস প্রেম করার পর ওই মাদ্রাসাছাত্রী নাটোরে স্কুল ছাত্রীর বাসায় চলে আসলে পুলিশ তাদেরকে হেফাজতে নেয়। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার তেবাড়িয়া ইউনিয়নে এ চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটে।
সিলেট থেকে আসা মাদ্রাসা ছাত্রী জানান, ৭ মাস আগে তাদের ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর ধীরে ধীরে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। পরে তারা সমকামী বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। স্কুল ছাত্রী তাকে বিয়ে করার কথা বললে সে তাকে বিয়ে করতে আসে।
অপর ছাত্রী জানায়, বিয়ে করে একসঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
নাটোর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, শুক্রবার বিকেলে তারা একে অপরকে বিয়ে করতে চাইলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা সন্ধ্যায় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে। অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের জিম্মায় দেওয়া হবে।
‘বলার ছিলো অনেক কিছু’ লিখে এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
শরীয়তপুরের ডামুড্যায় নিজের ঘরে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে লামিসা জামান দিয়া নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী আত্মহ্যা করেছেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পৌরসভার দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
আত্মহত্যার আগে লামিসা জামান দিয়া তার ব্যক্তিগত ফেসবুকের স্টোরিতে ‘বলার ছিলো অনেক কিছু, বলা হইলো না কিছু’ লিখে পোস্ট করেন।
লামিসা জামান দিয়া (১৭) দক্ষিণ ডামুড্যা গ্রামের ইতালি প্রবাসী মনিরুজ্জামান বিপ্লব বেপারী ও লাকি বেগম দম্পত্তির মেয়ে।
তিনি সরকারি ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক শাখা থেকে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন।
স্থানীয়রা জানান, লামিসা জামান দিয়ার মা লাকি বেগম বাড়িতে ছিলেন না। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে দেন লামিয়া। অনেক সময় কেটে গেলেও দরজা না খুললে সন্দেহ হয় বাড়িতে থাকা অন্যদের। এরপর তার খালামনি ডাকাডাকি করলেও তিনি দরজা না খুললে প্রতিবেশীরা এসে দরজা ভেঙে দেখেন ভেন্টিলেটরের সঙ্গে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে লামিসা জামান দিয়া ঝুলে রয়েছেন। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক লামিসাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডামুড্যা থানার ওসি এমারত হোসেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক ধারণায় মনে হয়েছে লামিসা আত্মহত্যা করেছেন। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল প্রতিবেদনের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নয়নাভিরাম পপি চাষ করে কৃষক গ্রেপ্তার
মানিকগঞ্জের শিবালয়ে ভুট্টাখেতের মাঝে লুকিয়ে নিষিদ্ধ পপি গাছ চাষ করায় কৃষক নুরুল খানকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার তেওতা ইউনিয়নের পুরান পয়লা নামক স্থান থেকে পপি গাছ জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার কৃষক একই এলাকার জাবেদ খানের ছেলে।
জানা গেছে, এদিন সকালে ৯ হাজার ৮২০টি পপি গাছসহ নুরুল খানকে আটক করা হয়। এরপর তার ক্ষেত থেকে প্রায় ৩০ হাজার পপি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে অনেক গাছে ফুল ও ফল ধরেছিল।
স্থানীয়রা জানায়, আমরা আগে কখনও পপি চাষ করতে দেখিনি। পুলিশের মাধ্যমে জানতে পেরেছি এখানে আফিমের চাষ হচ্ছে। জানতে পারলাম এটা ভয়াবহ মাদক মাদক তৈরির উপকরণের গাছ। এ ধরনের ভয়াবহ মাদক যারা চাষ করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিৎ।
জেলা ডিবি পুলিশের এসআই রিপন নাগ জানান, রোববার সকালে পপি গাছসহ কৃষক নূরুল ইসলামকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য আইনে দুটি মামলার প্রস্তুতি চলছে।
মানিকগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ আবুল কালাম জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে পপি গাছসহ নুরুল ইসলামকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে শিবালয় থানায় ১টি মামলা প্রক্রিয়াধীন। উদ্ধার করা আফিম গাছগুলো পরীক্ষার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে পাঠানো হবে।
প্রসঙ্গত, দেখতে নয়নাভিরাম হলেও পপি চাষ বাংলাদেশের আইনে নিষিদ্ধ। কারণ এই ফুলের রস থেকেই তৈরি হয় আফিম, হেরোইন ও মরফিনের মতো ভয়ংকর সব মাদক।
গণিত পরীক্ষা খারাপ হওয়ায় পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলমান এসএসসি পরীক্ষায় গণিত বিষয়ের পরীক্ষা আশানুরূপ ভালো না হওয়ায় এক শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছেন।
সোমবার (২৬) সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের আমনুরা-সেতু পাড়ার নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাসভির মহিম (১৭) নামের ওই পরীক্ষার্থী ঝিলিম ইউনিয়নের ইব্রাহিম হকের ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, তাসভির মহিম আমনুরা কশিম উদ্দিন মিয়া (কে এম) উচ্চবিদ্যালয় থেকে এবার এসএসএসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রুটিন অনুযায়ী তার গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তার ভাষ্য পরীক্ষা আশানুরূপ ভালো হয়নি। এজন্য ওই রাতেই নিজ কক্ষে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তাসভির।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মিন্টু রহমান।
হলুদের অনুষ্ঠানে কনেকে প্রেমিকের চুমু, অতঃপর...
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় গায়ে-হলুদের অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথির সামনে কনেকে চুমু দেয়ায় ‘প্রেমিক’কে গণধোলাই শেষে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। আর এ ঘটনায় মেয়েটির বিয়ে ভেঙে গেছে।
এই ঘটনায় কনের মা বাদী হয়ে আগৈলঝাড়া থানায় মামলা করলে পুলিশ ওই প্রেমিককে গ্রেপ্তার করে বরিশাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাসিন্দা ওই কিশোরী স্কুলে পড়ার সময় পাশের উজিরপুর উপজেলার ছত্তার হাওলাদারের ছেলে জিহাদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর জিহাদ হাওলাদার অন্যত্র বিয়ে করেন।
এদিকে স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে ওই কিশোরীর বিয়ে ঠিক হয়। সে অনুযায়ী ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে কনের বাড়িতে গায়েহলুদ দিতে আসে বর পক্ষের লোকজন। এই হলুদ অনুষ্ঠান চলাকালে জিহাদ হাওলাদার ওই বাড়িতে এসে উপস্থিত লোকজনের সামনে ওই কিশোরীকে চুমু দেন। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয়রা প্রেমিক জিহাদকে ধরে মারধর করে রাতেই আগৈলঝাড়া থানা পুলিশে সোপর্দ করে। এই ঘটনার পর বরের বাবা ঘটনাস্থলে এসে বিয়ে ভেঙে দিয়ে স্বজনদের নিয়ে চলে যান।
কনের মা বলেন, আমার কোনো জায়গা জমি নেই। স্বামী একজন দিনমজুর ছিলেন। তার মৃত্যুর পর ৯ বছর ধরে অন্যের সাহায্যে এক ছেলে ও দুই মেয়েকে নিয়ে কষ্ট করে চলছি। এখন মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাওয়ায় মহাবিপদে পড়েছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আগৈলঝাড়া থানার উপপরিদর্শক মো. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ‘অভিযুক্ত যুবক জিহাদকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানোর পর তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আর বরপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ভেঙে যাওয়া বিয়ে পুনরায় আয়োজনের চেষ্টা করছি
চলন্ত ট্রেনে হার্ট অ্যাটাক, মেয়ের সামনে বাবার মৃত্যু
দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ থেকে মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে চলন্ত ট্রেনে হার্ট অ্যাটাকে আব্দুস সালাম (৬০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চাটমোহর স্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে তার মৃত্যু হয়।
আব্দুস সালাম বোচাগঞ্জ উপজেলার ৫ নম্বর ছাতইল ইউনিয়নের বাসিন্দা। পেশায় কৃষক ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৃত আব্দুস সালামের ভাতিজি জামাই বোচাগঞ্জ উপজেলার মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী।
তিনি জানান, তার একমাত্র মেয়ের জামাই সেনাবাহিনীতে কর্মরত অবস্থায় ৪-৫ মাস আগে মারা গেছেন। সেই মেয়েকে নিয়ে দাবিকৃত টাকা তোলার জন্য ট্রেনযোগে ঢাকা যাচ্ছিলেন। দুপুর আড়াইটার সময় চলন্ত ট্রেনে ঘুমের মধ্যে নাটোর স্টেশন থেকে চাটমোহর স্টেশনের মাঝখানে হৃদক্রিয়া বন্ধ (হার্ট অ্যাটাক) হয়ে তিনি মৃত্যুকরণ করেন।
তিনি আরও জানান, আইনি প্রক্রিয়া শেষে রাত সাড়ে ১০টায় তার মরদেহ বোচাগঞ্জে নেওয়া হয়। এ সময় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে আসে। বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টার সময় তার নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দিনাজপুর স্টেশন সুপার এ কে এম জিয়াউর রহমান বলেন, ঘটনা শুনেছি। ছুটিতে থাকার কারণে বিস্তারিত জানাতে পারেনি।
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে মোবাইল ফ্ল্যাশলাইটের ফাঁদ
ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের সাদা রঙের সলিড লাইনের পাশে প্রায় সময় ফ্ল্যাশলাইট জ্বলে থাকা মোবাইল ফোন পড়ে থাকতে দেখা যায়। সরলতায় কিংবা লোভে পড়ে গাড়ি থামালেই পড়তে হয় ডাকাতের খপ্পরে।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টার দিকে মহাসড়কের মির্জাপুর এলাকার মা সিএনজি পাম্পের অপর পাশে সাংবাদিকদের নজরে আসে, রাস্তার পাশে ফ্ল্যাশলাইট জ্বলা অবস্থায় একটি মোবাইল ফোন পড়ে আছে। মোটরসাইকেলের গতি কমিয়ে দেখা যায় ডাকাত চক্রের ৩ সদস্য রাস্তার পাশে অবস্থান করছে। দুজন বসে আছে এবং একজন দাঁড়িয়ে। সাংবাদিকরা তৎক্ষণাৎ দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন এবং মির্জাপুর থানা পুলিশকে অবগত করেন। পরে দেওহাটা ব্রিজের সামনে থাকা টহল পুলিশের টিমকে সঙ্গে নিয়ে ফাঁদপাতা স্থানে যান সাংবাদিকরা। পরে থানা থেকে আরও একটি পুলিশের টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। পরে টের পেয়ে ডাকাত চক্রটি পালিয়ে যায়। আলামত হিসেবে রাস্তায় পড়ে থাকা মোবাইল ফোন পুলিশ উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর দেখা যায় মোবাইল ফোনের একটি ডেমু বানিয়ে রাখা হয়েছে। মোবাইল ব্যাককাভারের ভেতর প্লাস্টিকের ফোম এবং নষ্ট ফোনের ডিসপ্লের সঙ্গে রাবার দিয়ে গ্যাস ম্যাচের লাইট বেঁধে রাখা হয়েছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে পথিমধ্যে দুদিন পরপরেই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। এখানে প্রায় সময় এমনভাবে মোবাইলের কাভার লাইট জ্বালিয়ে রাখে যা দেখে মনে হবে এটি সত্যিকারের মোবাইল ফোন। গাড়ি থামালেই চালানো হয় ডাকাতি।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের মির্জাপুর কুমারজানী এলাকায় ডাকাত দলের সদস্যরা রাস্তায় বস্তা ফেলে ফাঁদ পেতে বসে থাকে। ফাঁদে পা দিলে ট্রাক ড্রাইভার নাজমুলের ওপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এরপর ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা নাজমুলকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যান।
এ ঘটনার পর ১৭ ফেব্রুয়ারি রাতেই তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মির্জাপুর থানার ফোর্স দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলার দেওহাটা ব্রিজ ও ত্রিমোহন এলাকা থেকে ডাকাত দলের সদস্য নাদিম ও সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করে।
ওই আসামিদের তথ্যমতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে অপর ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে নাদিম ও সাদ্দাম ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং অপর ৪ ডাকাত দলের সদস্যকে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে সোমবার আদালতে পাঠানো হয়।
মির্জাপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, মির্জাপুরে এমন ঘটনা প্রায় সময় ঘটে আসছিল। ইতোমধ্যে ডাকাত চক্রের ৬ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে যারা রয়েছে তারা মাদকাসক্তের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আরও কয়েকজন এই চক্রের সদস্য রয়েছে যারা বিভিন্ন যায়গায় এমন ফাঁদ তৈরি করছে। মির্জাপুর থানা পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।