পাওনা টাকা চাওয়ায় ৩ নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ
নারায়ণগঞ্জের বন্দরে পাওয়া টাকা চাওয়ায় তিন নারীকে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
গেল শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে উপজেলার কলাবাগ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঘটনার পর ভুক্তভোগীরা থানায় গেলে পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি বলেও অভিযোগ করা হয়েছে। পরে ঘটনার ২দিন পর মানবাধিকার কমিশনের চাপের মুখে পুলিশ রোববার মামলা গ্রহণ করেছে বলে জানা যায়।
এ ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ন্যায়বিচার দাবী করেছেন মানবাধিকার কমিশন।
আহত নির্যাতিতরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তিনি সুদের টাকা দিয়ে সংসারের খরচ চালিয়ে আসছেন। গত কয়েক মাস আগে স্থানীয় বাসিন্দা জীবন ও উম্মে হানীকে তিনি দুই দফায় ১ লাখ ৩৭ হাজার টাকা ধার দেন। সম্প্রতি পাওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধের সূত্রপাত ঘটে।
বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ইউসুফকে জানিয়ে তার কাছে সহযোগিতা চাইলে উল্টো তাকে শাসিয়ে দেন।
এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শনিবার বিকেলে জীবন ও তার লোকজন ওই নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়ে তার দুই আত্মীয়কে যৌনকর্মী আখ্যা দিয়ে প্রায় ২ ঘণ্টা গাছের সঙ্গে বেঁধে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মারধর করে। এসময় তাদের চুল কেটে দেয়া হয়। এসময় ওই বাড়িতে লুটপাট ও ভাংচুরের অভিযোগ আনা হয়।
ওই নির্যাতিতরা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন থানায় গিয়ে মামলা করতে চাইলে পুলিশ তাদের মামলা নেয়নি।
এদিকে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পেরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন থেকে গঠিত তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি আজ সোমবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে যান। তারা নির্যাতনের শিকার তিন নারীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন এবং পুলিশ প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার দাবী করেন।
এ বিষয়ে দুঃখপ্রকাশ করে কমিশনের তদন্ত কমিটি জানান, আগামীকালই তারা কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারকে সুপারিশ করবেন।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার জানান, নির্যাতনের শিকার নারীদের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর ব্যবস্থা নিতে থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বন্দর থানা পুলিশ জানিয়েছে, এ ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ আজ্ঞাত আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আর/এসএস
মন্তব্য করুন