নতুন প্রজন্মের হাতে স্মার্টফোন দেয়ার পরিবর্তে বই তুলে দিতে হবে: তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যেমন ইতিবাচক দিক আছে- তেমনি নেতিবাচক দিকও আছে। নেতিবাচক প্রভাব থেকে আমাদের নতুন প্রজন্মকে, কিশোর-কিশোরীকে রক্ষা করতে হবে। তাই তাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দেয়ার পরিবর্তে জীবনে আত্মপ্রত্যয়ী হওয়ার জন্য, স্বপ্ন দেখার জন্য, স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য এবং লড়াই করার জন্য বই তুলে দিতে হবে।
রোববার বিকেলে নগরের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম মাঠে অমর একুশে বইমেলা চট্টগ্রামের উদ্বোধনকালে মন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যুগ এখন তথ্য প্রযুক্তির। মানুষ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে বেশি ব্যস্ত থাকে। মানুষ এখন আর বই কিনে বই পড়ে না। ই-বুক পড়তে ব্যস্ত থাকে। ই-বুক এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের বাস্তব জীবনে বিরূপ প্রভাব ফেলছে। বইপড়ার নেশা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে যাওয়ায় সমাজে বিরূপ প্রভাবও পড়ছে।
তিনি বলেন, আজ তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রবাহ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপ্লব। গত ১০ বছরে দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিপ্লব ঘটে গেছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী যখন দ্বিতীয়বার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পান তখন ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৮ লাখ। এখন হয়েছে ৮ কোটির বেশি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সমসংখ্যক মানুষ। দেশে কয়েক হাজার অনলাইন মিডিয়া আছে। স্থানীয় পত্রিকাসহ প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি পত্রিকা। ৩০টির বেশি টেলিভিশন অনএয়ারে আছে। ৪০টি লাইসেন্স পেয়েছে। আরও কয়েকটি অনএয়ারে আসবে। ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বইমেলার আয়োজন মানুষকে বইমুখী করার জন্য। নতুন প্রজন্মকে বইমুখী করার জন্য। যারা বই লেখেন তারা বেঁচে থাকেন। বাংলাদেশে অনেক রাজনীতিবিদ ছিলেন। সবাইকে মানুষ মনে রাখেনি। যারা জীবনী লিখে গেছেন, বই লিখে গেছেন তারা কিন্তু বেঁচে আছেন। সমাজে অনেক গুণী মানুষ ছিলেন। অনেকে হারিয়ে গেছেন। কিন্তু যাদের সম্পর্কে কোনও পুস্তিকা বেরিয়েছে তারা বেঁচে আছেন। বই শুধু সুকোমল বৃত্তি প্রকাশ করার জন্য নয়, সমাজকে পরিশীলিত করার জন্য নয় নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে বই অনবদ্য ভূমিকা রাখে।
খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সংবাদ সম্মেলনে বেগম খালেদা অসুস্থ বলেছেন রিজভী (বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব)। বেগম খালেদা জিয়া তো আগে থেকেই অসুস্থ। শনিবার আদালতে নিয়ে যাওয়ার পর খালেদা জিয়াকে টেলিভিশনে যেভাবে দেখলাম, তিনি তো আগের মতো পরিপাটি ও সানগ্লাস দিয়ে আদালতে হাজির হয়েছেন। বেগম খালেদা জিয়ার চেহারায় অসুস্থতার কোনও ছাপ আমরা দেখতে পাইনি।’
মন্ত্রী বলেন, রিজভী আহমেদ দলগতভাবে আইন এবং আদালতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছেন। তিনি আজ (রোববার) সকালে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সেখানে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থাৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেন প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করেন। প্রধানমন্ত্রী তো তাকে (খালেদা জিয়া) শাস্তি দেননি। তাকে শাস্তি দিয়েছেন আদালত। তাকে মুক্ত করতে হলে আদালতের মাধ্যমেই মুক্ত করতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার এখতিয়ার তো প্রধানমন্ত্রীর নেই।
আরসি/এসএস
মন্তব্য করুন