• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

জমে উঠেছে কালীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গুড়ের হাট

শিপলু জামান, ঝিনাইদহ

  ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৫

স্বাদে ও গন্ধে এখানকার গুড় ও পাটালি অতুলনীয়। আর এই পাটালি কিনতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী নীমতলা হাটে মানুষের ভিড়ের কমতি নেই।

খেজুরগাছ থেকে সংগ্রহ করা রস দিয়ে তৈরি গুড় ও পাটালি বেচাকেনার জন্য এই হাটের ঐতিহ্য প্রায় শতবর্ষের। উপজেলার যশোর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক ঘেঁষে নীমতলা বাসস্ট্যান্ডে এ হাটের অবস্থান। শীত মৌসুমে সপ্তাহের প্রতি সোম ও শুক্রবার হাট বসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা।

শীত মৌসুমে এ এলাকায় খেজুরের রস বেশি পাওয়ার কারণে গুড় ও পাটালি তৈরি করে কৃষক। হাটের দিন প্রচুর গুড় ও পাটালি উঠে। যে কারণে সাধারণ ক্রেতাদের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কাছেও এই হাট সুপ্রসিদ্ধ। আগে বৃহত্তর যশোর অঞ্চলে অনেকগুলো গুড়ের বাজার থাকলেও বর্তমানে এই বাজারটিই টিকে আছে।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা গেছে, হাটের দিন সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে গাছিরা তাদের উৎপাদিত খেজুর গুড় ও পাটালি বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন। এক কলস গুড় বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা দরে। প্রতি কলসে আট থেকে ১০ কেজি গুড় থাকে। ঝোলা গুড় কলস প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। রস থেকে তৈরি পাটালি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা দরে।

দাম কম ও মান ভালো হওয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ীরা এখান থেকে গুড় ও পাটালি ক্রয় করে ঢাকা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও রাজশাহীতে নিয়ে বিক্রি করছে।

সদর উপজেলার গান্না গ্রামের আব্দুল আলিম জানান, তিনি গেল ৩৫ বছর ধরে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছেন। তার নিজের রয়েছে প্রায় ৮২টি খেজুর গাছ। আট থেকে নয় কলস রস দিয়ে এক কলস ভালো গুড় উৎপাদিত হয়। বর্তমানে প্রতি কলস গুড় ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পিঠা-পায়েস তৈরির জন্য ১০০ টাকা দরে এক কলস রস বাড়ি থেকে নিয়ে যান গ্রামবাসী।

বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রজব আলী আক্ষেপ করে বলেন, ঝিনাইদহ জেলায় উৎপাদিত খেজুর গুড়ের ব্যাপক কদর রয়েছে। এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এখান থেকে গুড় কিনে নিয়ে চিনি মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে। ফলে এখানকার গুড়ের দুর্নাম হচ্ছে।

রাজশাহীর গুড় ব্যবসায়ী মো. মনিরুল ইসলাম জানান, আমরা প্রতি হাটেই এখানে গুড় ও পাটালি কিনতে আসি। এখানকার গুড় ও পাটালিতে যেন রসের গন্ধ লেগে থাকে। তাই ক্রেতারাও কালীগঞ্জের খেজুর গুড়ের কথা বললে কিনতে আগ্রহ বোধ করেন।

কালীগঞ্জ গুড়ের হাটের মালিক আতিয়ার রহমান জানান, কালীগঞ্জের খেজুর রসের গুড় ব্যাপক প্রসিদ্ধ। এই গুড়ে কাঁচা রসের ঘ্রাণ পাওয়া যায়। যে কারণে সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা এখান থেকে গুড় কিনে থাকে।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার জাহিদুল করিম বলেন, এ জেলায় কয়েক লাখ খেজুরের গাছ রয়েছে। যে কারণে এখানে প্রচুর খেজুর গুড় উৎপাদিত হয়। তবে ইটভাটার কারণে প্রতিদিনই খেজুরের গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এজন্য কৃষদের খেজুর গাছ রোপণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

আরও পড়ুন

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
কচুয়ায় বাসচাপায় প্রাণ গেল মোটরসাইকেল আরোহীর 
হাসপাতালে ফেলে যাওয়া নবজাতক দত্তক পেলেন সেবিকা
সবজির বাজার চড়া, কমেনি মুরগির দাম
বাবা-মাকে খুঁজছে ৫ বছরের অবুঝ শিশু জুনায়েদ
X
Fresh